প্রতিষ্ঠার এক দশকেও সমাবর্তন হয়নি বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে

শিক্ষা

অক্টোবর ২২, ২০২২ ৫:০৮ অপরাহ্ণ

সিব হাসান(ববি প্রতিনিধি) 

বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা শেষে সুখময় স্মৃতির নাম ‘সমাবর্তন’। কিন্তু সেই ‘সমাবর্তন’ই যদি কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ে বছরের পর বছর না হয় তাহলে সুখময় স্মৃতি অধরায় থেকে যায়।

তেমনি, একটিও সমাবর্তন না হওয়া এমনই এক বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (ববি)। ২০১১ সালে প্রতিষ্ঠিত এই বিদ্যাপীঠটি যাত্রা শুরু করলেও দীর্ঘ এক দশকে ৬টি ব্যাচে যেখানে স্নাতক শেষে করেছে পাঁচ হাজার আটশত পঁচাআশি জন (একাডেমিক শাখার তথ্য অনুযায়ী) শিক্ষার্থী ৷ পাশাপাশি স্নাতকোত্তর শেষ করছে ৫টি ব্যাচ ৷ প্রতিষ্ঠার এগারো বছর পার হলেও এখনো শিক্ষার্থীদের কোনো সমাবর্তন দিতে পারেনি বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।

সাবেক শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরে সমাবর্তনের আবেদন জানিয়ে আসলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো এক অজানা কারণে সাড়া দেয়নি। তাই বর্তমান উপাচার্য এবং ট্রেজারার আসার পর সমাবর্তনের আয়োজন করা নিয়ে জোরালো দাবি তুলেছেন প্রাক্তন শিক্ষার্থীরা।

বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের ৪র্থ ব্যাচের শিক্ষার্থী শাহরিয়ার আহমেদ মিলান বলেন, সমাবর্তন শিক্ষার্থীদের কাছে যেমন আনন্দের , তেমনি গৌরবেরও। একজন শিক্ষার্থীর শিক্ষা জীবনের পূর্ণতা পায় সমাবর্তনের মাধ্যমে । কিন্তু বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় দেখতে দেখতে প্রায় ১ যুগের পথে । এখন অবধি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তন হয় নি, যেটা দুঃখজনক ৷

মার্কেটিং বিভাগের সাবেক শিক্ষার্থী বর্তমানে যুক্তরাজ্যে অধ্যায়নরত শোয়েব আহমেদ জানান, এটা আসলেই হতাশাজনক যে একটা পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে ১০ বছর পার করলো ৬টি ব্যাচ পাসআউট হলো কিন্তু একবারও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সমাবর্তনের আয়োজন করতে পারে নি। অতি দুঃখের বিষয় হলো গত মাস পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন নিজেরাও জানতো না যে তাদের মূল সার্টিফিকেট এর লেআউট বা ডিজাইন কেমন হবে। দুঃখজনক হলেও সত্য যে প্রশাসনের এসব উদাসীনতায় সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রতিনিয়তই নানা জটিলতা পড়ছে।

এই শিক্ষার্থী আরো বলেন, কিছুদিন আগে বিশ্ববিদ্যালয় মূল সনদ দেয়ায় অপারগতা প্রকাশ করায়, আমার একজন সহপাঠী পরবর্তীতে উচ্চ শিক্ষার জন্য দেশের বাইরের এক বিশ্ববিদ্যালয়ে স্কলারশিপ পেয়েও সেখানে মূল সনদ না থাকায় যেতে পারেনি ৷

বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্ব) ড. মো. মুহসিন উদ্দীন বলেন,সমাবর্তনের বিষয়টি আমাদের ভিসি স্যার অনেকবার বিষয়টি চ্যান্সেলর মহোদয়কে জানিয়েছেন,সিডিউলের জন্য আটকে আছে ৷ অতি দ্রুত সময়ে মধ্যে সমাবর্তন আয়োজন করার ব্যাপারে আমরা আশাবাদী ৷

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার ড. মো. বদরুজ্জামান ভূঁইয়া বলেন,সমাবর্তন ব্যতীত একটা বিশ্ববিদ্যালয় পরিপূর্ণতা লাভ করে না ৷ সমাবর্তন অপিরিহার্য এবং সাবেক শিক্ষার্থীদের ডিগ্রি পূর্ণতা লাভ করে এই সমাবর্তনের মাধ্যমে ৷ আমি আশা করি অতি দ্রুত সময়ে মধ্যে বিষয়টি নিয়ে আমরা ব্যবস্থা গ্রহণ করবো ৷

বিষয়টি নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়টির উপাচার্য ড. মো. ছাদেকুল আরেফিনের সাথে একাধিকবার ফোন কল ও ক্ষুদে বার্তা পাঠানো হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি ও ক্ষুদে বার্তার উত্তর দেননি ৷ তবে তাকে ফোনের বিষয়টি তিনি জনসংযোগ কর্মকর্তা ফয়সাল মাহমুদকে জানান। এবং এই প্রতিবেদককে ফয়সাল মাহমুদ ফোন করে বলেন,গত জুলাইয়ে চ্যান্সেলর মহোদয়কে সমাবর্তন বিষয়ে জানানো হয়েছে। বিষয়টি প্রস্তুতির অনেক বিষয় আছে এবং অনেক ফান্ডিং এবং চ্যান্সেলরের প্রটোকলের বিষয় আছে ৷ সমাবর্তন বিষয়টি নিয়ে নিউজ না করার অনুরোধও করেন তিনি ৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *