ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় যেন মরণফাঁদ, ২৪ টি ম্যানহোলে নেই ঢাকনা

দেশজুড়ে

নভেম্বর ১, ২০২২ ১:৫১ অপরাহ্ণ

মতিউর রহমান সরকার দুখু(ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি) 

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় অধিকাংশ ম্যানহোলে ঢাকনা নেই। যেগুলোতে ঢাকনা আছে এগুলোর অনেকগুলোই ভাঙ্গা। সরেজমিনে ঘুরে বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ২৪ টি ম্যানহোলে কোনো ঢাকনা দেখা যায়নি। এসব ম্যানহোলগুলো টিএসসি- নীলক্ষেত সড়ক,মল চত্বর, টিএসসি,মিশুক-মুনীর চত্বর, সূর্যসেন হল, মুক্তিযোদ্ধা জিয়া হল,কার্জন হলসহ ক্যাম্পাসের বিভিন্ন স্থানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। এছাড়া ১৪ টি ম্যানহোলের ঢাকনা ভাঙা অবস্থায় পাওয়া গেছে। এসব ভাঙা ঢাকনাগুলো অধিকাংশ মল চত্বর এলাকায় রয়েছে।মল চত্বর ছাড়াও বট তলার‌ উত্তর-পশ্চিম কোণায়,হাকিম চত্বরসহ ‌বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে ছড়িয়ে আছে। গর্তের আকারে ছোট এমন ১১ টি ম্যানহোলের ঢাকনা দেখা গেছে।ম্যালহোল ছাড়াও প্রসাশনিক ভবনের পেছনের ড্রেন, টিএসসি,মৎস্যবিজ্ঞান বিভাগের সামনের ড্রেন ও ফজলুল হক হলের ড্রেনে পর্যাপ্ত ঢাকনা পাওয়া যায়নি। ঢাকনা না থাকায় এসব ড্রেনে দুর্গন্ধ ছড়ানোর পাশাপাশি বিভিন্ন রোগ জীবাণু ছড়ানোর আশঙ্কা রয়েছে।

প্রতিনিয়ত এসব ম্যানহোলে ঘটছে ছোট বড় দুর্ঘটনা। শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলে জানা গেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রসাশনের নজরদারির অভাবে এসব ম্যানহোলগুলোতে ঢাকনা নেই। ফলে শিক্ষার্থীরা ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। রাতের অন্ধকারে না দেখে এসব ম্যানহোলে পড়ে গিয়ে কেউ কেউ আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে। ইনস্টিটিউট অব এডুকেশন‌ এন্ড রিসার্চ বিভাগের শিক্ষার্থী মাজহারুল ইসলাম জানান, “এই ম্যানহোলগুলা আমাদের জন্য খারাপ একটা পরিস্থিতির সৃষ্টি করছে, অনেক সময় দেখা যায় মল চত্বরে ক্রিকেট খেলার সময় কিংবা অনেক ছোট ছোট বাচ্চারা এসব ম্যানহোলে পড়ে যায়। কিছুদিন আগেও আমার এক বন্ধু এখানে ( মল চত্বরের ম্যানহোল) পড়ে আহত হয়েছে। রাতের বেলা হাঁটার সময় যে কেউ এগুলোতে পড়ে যেতে পারে। এগুলো থেকে দুর্গন্ধ বের হয়। তাছাড়া ম্যানহোলগুলো পরিবেশের জন্য খারাপ আবার দেখতেও দৃষ্টিকটু। তাই প্রসাশনের উচিত যথাযথ ব্যবস্থা নেয়া।
“রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের আরেক শিক্ষার্থী নাহিদ হাসান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানহোলগুলোতে অধিকাংশ সময় ঢাকনা থাকে না যা আমাদের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ। যেকোন সময় যে কারো বিপদ ঘটতে পারে। যথাযথ কর্তৃপক্ষ যাতে এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নেয় সে আশা ব্যক্ত করছি।”

গতকাল(সোমবার) দুপুর ২ টা ৪৫ মিনিটে প্রধান প্রকৌশলী আব্দুল খালেকের সাথে দেখা করতে চাইলে তিনি প্রথমে তাঁর অফিসের একজন স্টাফকে দিয়ে জনসংযোগ অফিস ও এস্টেট অফিসে যোগাযোগ করতে বলে দায়িত্ব এড়ানোর চেষ্টা করেন। এস্টেট অফিস থেকে জানিয়েছে, ‘এটা তো প্রধান প্রকৌশলীর কাজ,আমরা এ বিষয়টি দেখি না।এটি ওনারা(প্রকৌশল অফিস) দেখেন।’ এরপর এস্টেট অফিস থেকে প্রধান প্রকৌশলীর অফিসে পাঠিয়েছে জানালে তিনি অধস্তন কর্মকর্তাকে দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মোহাম্মদ জাবেদ আলম মৃধার সাথে যোগাযোগ করতে বলেন। এ বিষয়ে সরাসরি প্রধান প্রকৌশলীর সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি কথা বলতে রাজি হননি। ম্যানহোলের বিষয়ে তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জাবেদ আলম মৃধা বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এরিয়ায় ২ ধরনের ম্যানহোল আছে, যেগুলো রাস্তার পাশে সেগুলো সিটি করপোরেশনের এবং বাকিগুলো বিভিন্ন ইনস্টিটিউট,ডিপার্টমেন্ট ও হলের আন্ডারে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ঢাকনাগুলো অধিকাংশ সিমেন্টের ঢালাই করা। কিন্তু এগুলো ভেঙে রড খুলে নিয়ে যায় হিরোইনসেবীরা। আসলে হয় কি আমাদের যত লোহার ম্যানহোলের ঢাকনা আছে বেশিরভাগ ওরা(মাদকসেবীরা) চুরি করে নিয়ে যায়। আমরা যেহেতু এখন নির্দিষ্ট করে জানলাম কোথায় কোথায় ম্যানহোলের ঢাকনা নেই সেগুলো আমরা লাগানোর ব্যবস্থা করব এবং যেসব ঢাকনা সিটি করপোরেশনের আওতাধীন তাদেরকে(সিটি কর্পোরেশন) আমরা বলে দিব।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *