জানুয়ারি ১৪, ২০২৩ ১০:৩৪ পূর্বাহ্ণ
ফুটবলারদের জীবনটা রহস্য ঘেরা ধাঁধার মতো। যে ধাঁধার সমাধান হয় ক্যারিয়ারের শেষ সময়ে এসে। ইউরোপের শীর্ষ সব ক্লাব মাতানো তারকাও শেষ সময়ে এসে বয়সের কাছে হার মানেন। জৌলুস মিশে যেতে থাকে অস্তমিত সূর্যের মতো।
সেসব তারকাদের গন্তব্য হয় এশিয়ার মতো মহাদেশে, যেখানে ফুটবলটা ঠিক এখনো উন্নতির শিখর ছুঁতে পারেনি। তবে অর্থের ঝনঝনানি শীর্ষ খেলোয়াড়দের আকৃষ্ট করে। তারাও সুযোগ বুঝে সময়ের স্রোতে গা ভাসিয়ে দেন।
এমন দশজন ইউরোপ মাতানো ফুটবলার…
টিম কাহিল
অস্ট্রেলিয়ান খেলোয়াড় টিম কাহিল। যিনি ২০১৮ সালে ইন্ডিয়ান সুপার লিগের দল জামশেদপুর এফসি-তে যোগ দেন। জামশেদপুর এফসিতে থাকাকালীন কাহিল ১৪টি ম্যাচ খেলে ৪টি গোল করেছিলেন। পরে অবশ্য ২০১৮-১৯ মৌসুমের শেষে তিনি চলে যান।
দিয়েগো ফোরলান
বিশ্বকাপ ফুটবলের ২০১০ সালের আসরের গোল্ডেন বলজয়ী খেলোয়াড় উরুগুয়ের দিয়েগো ফোরলান। ২০১৬ সালে তিনি একজন খেলোয়াড় হিসাবে ইন্ডিয়ান সুপার লিগের দল মুম্বাই সিটি এফসি-তে যোগ দেন। যদিও তার যাত্রাটা খুব সংক্ষিপ্ত ছিলো।
এর আগে ফোরলান ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের দল ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের হয়ে মাঠ মাতিয়েছেন। স্প্যানিশ দল ভিয়ারিয়াল ও অ্যাথলেটিকো মাদ্রিদের জার্সি গায়েও মাঠ মাতিয়েছেন তিনি।
রবার্ট পিরেস
২০১৪ সালে ইন্ডিয়ান সুপার লিগের দল এফসি গোয়াতে যোগ দেন সাবেক ফরাসি ফুটবলার রবার্ট পিরেস। ক্লাবে তার সময় স্বল্পস্থায়ী ছিল কারণ তিনি সেই মৌসুমের শেষেই ভারত থেকে চলে যান।
ফ্রান্স জাতীয় দল ছাড়াও ইউরোপের নামিদামী দলের হয়ে খেলেছেন পিরেস। এর মধ্যে আছে আর্সেনাল, ভিয়ারিয়াল ও অ্যাস্টন ভিলা। এছাড়াও ফ্রান্সের লিগ ওয়ানের কয়েকটি নামকরা দলের হয়ে খেলেছিলেন তিনি।
নিকোলাস আনেলকা
পিরেসের পথ ধরে ২০১৫ সালে খেলোয়াড় হিসেবে হিসাবে ইন্ডিয়ান সুপার লিগের দল মুম্বাই সিটি এফসি-তে যোগদান করেন সাবেক ফরাসি খেলোয়াড় আনেলকা। অবশ্য ২০১৫ মৌসুমের শেষ দিকে চলে যান তিনি।
খেলোয়াড়ী জীবনে বেশ নামকরা ছিলেন আনেলকা। তিনি প্যারিস সেইন্ট জার্মেই, আর্সেনাল,রিয়াল মাদ্রিদ, লিভারপুল, ম্যানচেস্টার সিটি, চেলসি ও জুভেন্টাসের মতো দলের হয়ে মাঠ মাতিয়েছেন। গোল করেছেন দেড় শতাধিক।
আলেসান্দ্রো দেল পিয়েরো
এই তালিকায় আছেন ইতালির বিখ্যাত খেলোয়াড় আলেসান্দ্রো দেল পিয়েরোও। ২০১৪ সালে তিনিও ইন্ডিয়ান সুপার লিগের দল দিল্লি ডায়নামোসে যোগ দেন। ডায়নামোসের হয়ে পিয়েরো ১৪ ম্যাচে ৪ গোল করেন। এক মৌসুমে খেলেই ক্লাব ছাড়েন তিনি।
খেলোয়াড়ী জীবনে দেল পিয়েরো দীর্ঘ একটা সময় কাটিয়েছেন ইতালিয়ান ক্লাব জুভেন্টাসে। এই ক্লাবের ইতিহাসে তাকে কিংবদন্তি ধরা হয়। দীর্ঘ ১৯ বছরের জুভেন্টাস ক্যারিয়ারে ১৮৮ গোল করেছেন পিয়েরো।
মার্কো মাতেরাজ্জি
মার্কো মাতেরাজ্জিকে চেনেন না এমন মানুষ ফুটবল দুনিয়ায় নেই। জিনেদিন জিদানের কথা আসলে তার কথাও আসে। ২০১৪ সালে তিনিও খেলে গেছেন ইন্ডিয়ান সুপার লিগে।
মাতেরাজ্জি চেন্নাইয়িনের সাথে প্রতি মৌসুমের জন্য ১ মিলিয়ন ডলারে দুই মৌসুমের চুক্তি স্বাক্ষর করেন। ক্যারিয়ারে এভারটন ও ইন্টার মিলানের মতো ক্লাবে সময় কাটিয়েছেন তিনি।
জাভি হার্নান্দেজ
জাভি স্প্যানিশ ক্লাব বার্সেলোনায় থাকার জন্য সবচেয়ে বেশি পরিচিত। ২০১৫ সালে জাভি হার্নান্দেজ কাতারি ক্লাব আল সাদ এসসি-তে একজন খেলোয়াড় হিসেবে যোগ দেন। জাভি দলের মিডফিল্ডে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন।
আল-সাদকে কাতারি স্টারস লীগ এবং কাতার কাপের আমির জিততে সাহায্য করেছিলেন।এই স্প্যানিয়ার্ড। স্পেন এবং কাতারে সফল ক্যারিয়ারের পর ২০১৯ সালে পেশাদার ফুটবল থেকে অবসর নিয়ে তিনি আল সাদ-এ কোচিং জীবন শুরু করেন।
ফ্যাবিও ক্যানাভারো
ইতালীয় এই ডিফেন্ডার সংযুক্ত আরব আমিরাতের ক্লাব আল-আহলিতে যোগ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার পরে ভক্তদের চমক সৃষ্টি হয়। ২০১০ বিশ্বকাপের পর এশিয়ান এই ক্লাবটিয়ে যোগ দেন ইতালির হয়ে ২০০৬ সালে বিশ্বকাপ জেতা এই খেলোয়াড়।
তিনি লা লিগায় রিয়াল মাদ্রিদ ও ইতালিয়ান লিগে জুভেন্টাসের মতো দলে খেলেন। তিনি আল-আহলির হয়ে ১৬টি ম্যাচ খেলেন এবং ২০১১ সালের জুলাইয়ে সালে একজন খেলোয়াড় হিসেবে অবসর গ্রহণ করেন।
আন্দ্রেস ইনিয়েস্তা
জাভির মতো ইনিয়েস্তাও এফসি বার্সেলোনায় একাডেমি থেকেই উঠে এসেছেন। ২০১৮ সাল পর্যন্ত ক্লাবটির হয়ে সফল ক্যারিয়ার কাটান তিনি। এই মিডফিল্ডার ২০১৮ সালে ফ্রি ট্রান্সফারে জে১ লিগের দল ভিসেল কোবেতে যোগ দেন।
৩৭ বছর বয়সী স্পেনের বিশ্বকাপজয়ী এই ফুটবলার এখনও ভিসেল কোবেতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। তার বর্তমান চুক্তি হিসেবে ২০২৪ সাল পর্যন্ত ক্লাবটিতে আছেন তিনি।
ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো
এই তালিকায় সবচেয়ে বড় নামটি ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। চলতি বছব সৌদি আরবের ক্লাব আল নাসরে নাম লেখান তিনি। পর্তুগিজ ফরোয়ার্ড ২০২৫ সাল পর্যন্ত আল নাসরের সঙ্গে আড়াই বছরের চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন।
তাকে সর্বকালের সেরা খেলোয়াড়দের একজন হিসাবে বিবেচনা করা হয়। ক্যারিয়ারে এর আগে ইউরোপের নামিদামী ক্লাবে খেলেছেন রোনালদো। ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, রিয়াল মাদ্রিদ ও জুভেন্টাসের মতো ক্লাবে ক্যারিয়ার কাটিয়েছেন তিনি।