‘সরকার উৎখাতে আন্দোলন করুক, দেখি কত জোর’

‘সরকার উৎখাতে আন্দোলন করুক, দেখি কত জোর’

জাতীয় স্লাইড

জুলাই ২৬, ২০২৩ ১:৩৩ অপরাহ্ণ

বিএনপি নির্বাচন চায় না মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তার মানে ক্ষমতায় থাকতে যত চোরা টাকা রেখেছে বাইরে, সেগুলো দিয়েই এখন আন্দোলন করে নাকি সরকার উৎখাত করবে। তো আমরাও ছেড়ে দিয়েছি যে, ঠিক আছে— করো আন্দোলন, দেখি কত জোর! আমরা তো কাউকে বাধা দিচ্ছি না। কিন্তু আমরা বিরোধী দলে থাকতে তো মাঠেই নামতে দিত না। আওয়ামী লীগ অফিসে কোনো দিন যেতে পারতাম না।

ভোট চুরি বিএনপির অভ্যাস মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘৯৬ সালের ১৫ ফেব্রুয়ারি ভোটারবিহীন ভোট করে খালেদা জিয়া আবার প্রধানমন্ত্রী হলো। কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ কখনো ভোট চোরদের স্থান দেয় না। আন্দোলন-সংগ্রাম, সেই আন্দোলনের মুখে খালেদা জিয়া ৩০ মার্চ পদত্যাগের বাধ্য হলো। আবার ২০০১-এ ক্ষমতায় এসে ঠিক একই ঘটনা আবার ২০০৬-এর ইলেকশন। কয়েকজনকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিজয়ী ঘোষণা করে দিল। তার পর জরুরি অবস্থা এলো, সেই ইলেকশন বাতিল হয়ে গেল। কাজেই ভোট চুরি করলে বাংলাদেশের মানুষ কিন্তু মেনে নেয় না। এটা হলো বাস্তবতা।

আওয়ামী লীগ এ দেশের মানুষকে ভোট সম্পর্কে সচেতন করেছে মন্তব্য করে তিনি বলেন, জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় আসার পর ভোট চুরির যে কালচার শুরু করেছিল এবং অবৈধভাবে সংবিধান লঙ্ঘন করে ক্ষমতা দখলের যে যাত্রা শুরু করেছিল তার বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগই সংগ্রাম করেছে। আমরা জোট করেছি, মহাজোট করেছি, আমরা জনগণের ভোটের অধিকার জনগণের হাতে ফিরিয়ে দেওয়ার জন্য সংগ্রাম করেছি এবং সেই সংগ্রামে সাফল্য এসেছে।

বিএনপি কাদের জন্য আন্দোলন করে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ২০১৪-এর নির্বাচনে বাধা দেওয়ার জন্য তাদের যে অগ্নিসন্ত্রাস; জীবন্ত মানুষকে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারা— এ রকম নৃশংসতা বোধ হয় পৃথিবীতে আর কেউ দেখেনি। সেখানে কেউ রেহাই পায়নি।

তিনি আরও বলেন, যে সাধারণ মানুষ, তাদের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য আমাদের রাজনীতি। আর ওদের রাজনীতি মানুষকে পুড়িয়ে ক্ষমতাকে নিয়ে ক্ষমতা কুক্ষিগত করা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানিলন্ডারিং করে যে টাকা বাইরে পাঠিয়েছে, সেখান থেকে আমরা ৪০ কোটি টাকা উদ্ধার করতে পেরেছি। তারেক জিয়ার বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা, এফবিআই এসে সাক্ষী দিয়েছে। সেখানে তার শাস্তি হয়েছে। গ্রেনেড হামলা, ১০ ট্রাক অস্ত্র চোরাকারবারি; সব কিছুতে সাজাপ্রাপ্ত আসামি। কেয়ারটেকার সরকারের কাছে মুচলেকা দিয়ে চলে গিয়েছিল বিদেশে। আর সেখানে বসে হাজার হাজার কোটি টাকা খরচ করে কীভাবে? আমার সেটাই প্রশ্ন যে, এত টাকা কোথায় পায়?

আওয়ামী লীগের ২১ হাজার নেতাকর্মীকে বিএনপি হত্যা করেছে উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, কারো চোখ তুলে নিয়েছে, কারও হাত কেটে নিয়েছে, হাতুড়ি দিয়ে পিটিয়ে মেরেছে। কিনা অত্যাচার তারা করেছে! আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা কত না সহ্য করেছে!

তিনি বলেন, প্রতিটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অস্ত্রের ঝনঝনানি, শিক্ষার পরিবেশ নেই। সেশনজট লেগেই থাকত। আওয়ামী লীগ সরকারে আসার পর সেই অবস্থার পরিবতর্ন হয়েছে। শিক্ষার মান, শিক্ষার পরিবেশ সব কিছু আমরা ফিরিয়ে এনেছি। আজকে আমরা আন্তর্জাতিক মর্যাদা পাচ্ছি। আজকে দেশ শুধু খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ না, অর্থনৈতিকভাবেও আমরা একটা স্বীকৃতি পেয়েছি। যদি এই করোনাভাইরাস অতিমারি না দেখা দিত আর যদি এই ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ, স্যাংশন-কাউন্টার স্যাংশন না হতো তা হলে আজকের বাংলাদেশ আমরা আরও অনেক দূর এগিয়ে যেতে পারতাম।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী হবে মন্তব্য করে আওয়ামী লীগ সভাপতি বলেন, ‘বিএনপি জানে নির্বাচন হলে জনগণ তাদের ভোট দেবে না। ভোট চুরি করে যারা বিতাড়িত, তাদের কারা ভোট দেবে? তারা দেশটাকে অস্থির করতে চায়। তাদের জন্ম কোথায়? জিয়াউর রহমান অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল করে, সংবিধান লঙ্ঘন করে, ক্ষমতায় এসে আর্মি রুলস লঙ্ঘন করে সেনাপ্রধান নিজেকে আবার নিজে রাষ্ট্রপতি ঘোষণা দেয়। ঘোষণা দিয়ে তার রাজনীতি শুরু। ওই অবস্থায় হ্যাঁ-না ভোট, রাষ্ট্রপতি ভোট, সব ভোটই তো ভুয়া! এভাবে চুরি করে করেই তো…সেই জেনারেলের পকেট থেকে যে দলের সৃষ্টি তারা জনগণের কাছে যাওয়ার তাদের মুখটা কোথায়! আর অগ্নিসন্ত্রাস করে যাদের হত্যা করেছে তাদের সামনে তারা কোন মুখে ভোট চাইবে!’

তিনি বলেন, ওরা তো ক্ষমতায় ছিল। অবৈধভাবে জিয়াউর রহমান এসেছে। তার পদাঙ্ক অনুসরণ করে এরশাদ এসেছে। এর পর খালেদা জিয়া। গ্যাস বিক্রি মুচলেকা দিয়ে এসেছে। তারা এ দেশের কোনো দিন কল্যাণ চাইবে না— চায়নি। এটা মাথায় রাখতে হবে, তারা ভোটে মানুষের কাছে দাঁড়াতে পারেনি। তারা চায় এ দেশে একটা অস্বাভাবিক পরিস্থিতি হবে এবং ঘোলাপানিতে মাছ শিকার করা; এটাই তাদের উদ্দেশ্য। সেটিই তারা করতে চায়। তাদের উদ্দেশ্য বাংলাদেশের এই অগ্রযাত্রা ব্যাহত করা। সেটা কি বাংলাদেশের হতে দেবে? এটা কেউ দেবে না।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *