আন্তর্জাতিক মঞ্চে নজরকাড়া সাফল্য ভারতীয় লেখক গীতাঞ্জলি শ্রীর। তার হাত ধরে প্রথম বার আন্তর্জাতিক বুকার পুরস্কার পেল ভারত। হিন্দি উপন্যাস ‘রেত সমাধি’, ইংরেজি অনুবাদে যা ‘টুম্ব অব স্যান্ড’ এর জন্য এ পুরস্কার পেলেন গীতাঞ্জলি।
তার হাত ধরে এই প্রথম কোনো ভারতীয় লেখক আন্তর্জাতিক বুকার পুরস্কার পেলেন। একই সঙ্গে ভারতীয় ভাষায় লেখা কোনো বইয়ের জন্যও এই প্রথম আন্তর্জাতিক বুকার পুরস্কার মিলল।
গীতাঞ্জলি দিল্লির বাসিন্দা। বৃহস্পতিবার লন্ডনে তার হাতে তুলে দেয়া হয় পুরস্কার। পুরস্কারবাবদ ৫০ হাজার পাউন্ড, ভারতীয় মুদ্রায় যা প্রায় ৫০ রুপিও পেয়েছেন গীতাঞ্জলি। হিন্দি থেকে বইটি ইংরেজিতে অনুবাদ করেছেন যে ডেইজি রকওয়েল, তার সঙ্গে পুরস্কার ভাগ করে নিয়েছেন গীতাঞ্জলি।
উত্তর ভারতে ৮০ বছরের এক বৃদ্ধা ‘রেত সমাধি’র কেন্দ্রীয় চরিত্র, পরিবারের আপত্তি উপেক্ষা করে যিনি পাকিস্তান যাওয়ায় বদ্ধপরিকর। দেশভাগের ক্ষতে প্রলেপ লাগানো, নারী হিসেবে নিজের পরিপূর্ণতার উবলব্ধির গল্পই বুনেছেন গীতাঞ্জলি। বইটি এক মুহূর্তের জন্য নিচে রাখা যায় না বলে জানিয়েছে বুকার পুরস্কারের বিচারকরা।
পুরস্কার নিতে গিয়ে গীতাঞ্জলি বলেন, বুকার পাব বলে কখনো কল্পনাও করিনি। পেতে পারি বলেও মনে হয়নি কখনও। অসম্ভব পাওয়া। অভিভূত আমি, আনন্দিত, সম্মানিত এবং বিনীত।
তবে শুধু নিজের জয়েই সন্তুষ্ট নন ৬৪ বছরের গীতাঞ্জলি। তার মতে, হিন্দি তো বটেই, দক্ষিণ এশীয় অনেক ভাষাতেই এমন মণি-মানিক্য ছড়িয়ে রয়েছে। পরিসরের বিস্তৃতি ঘটছে ধীরে ধীরে। আগামী দিনে আরও অনেকে সমাদৃত হবেন বলে আশাবাদী তিনি।
বইয়ের অনুবাদক ডেইজি লেখালেখির পাশাপাশি ছবিও আঁকেন। আমেরিকার বাসিন্দা তিনি। অনুবাদক হিসেবে পুরস্কার নিতে উঠে তিনি জানান, এ বইটি অনুবাদের মাধ্যমে তিনি আসলে হিন্দি ভাষার প্রতি নিজের ভালোবাসা উৎসর্গ করেছেন।
সব মিলিয়ে তিনটি উপন্যাস লিখেছেন গীতাঞ্জলি। ছোট গল্পও লিখেছেন। ইংরেজি, ফরাসি, জার্মান, কোরীয় ছাড়াও একাধিক ভাষায় তার লেখার অনুবাদ হয়েছে। ‘রেত সমাধি’ ২০১৮ সালে প্রকাশিত হয়। ব্রিটেনে প্রকাশিত গীতাঞ্জলির প্রথম বইই সেটি। অ্যাক্সিস প্রেস ২০২১ সালের অগাস্ট মাসে ‘রেত সমাধি’ প্রকাশ করে।