পিটার হাস এখন কোথায়?

পিটার হাস এখন কোথায়?

জাতীয় স্লাইড

নভেম্বর ১৭, ২০২৩ ২:৩৫ অপরাহ্ণ

ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের অবস্থান নিয়ে বৃহস্পতিবার সকাল থেকে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। কেউ বলছেন, তাকে ফিরিয়ে নিয়ে গেছে ওয়াশিংটন। আবার অনেকে বলছেন, তিনি ঢাকায়ই অবস্থান করছেন। কোনো কোনো সূত্র বলছে, তিনি আপাপত দেশের বাইরে গেছেন। প্রশ্ন উঠছে তার অবস্থান নিয়ে এতো লুকোচুরি কেন?

মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস বৃহস্পতিবার বাংলাদেশের বাইরে সফরে গেছেন বলে জানা গেছে। তবে ঢাকায় মার্কিন দূতাবাস তার সফরের বিষয়টি গোপন রেখেছে। ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অবশ্য বলেছে, কূটনৈতিক প্রটোকল অনুযায়ী কোনো রাষ্ট্রদূত বাইরে গেলে স্বাগতিক দেশকে জানিয়ে যান। পিটার হাস বাংলাদেশ সরকারকে জানিয়ে গেছেন।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) একটি এক্সপার্ট মিশন শিগগিরই বাংলাদেশে আসছে। এছাড়া কমনওয়েলথের নির্বাচন পূর্ব অ্যাসেসমেন্ট মিশন ১৮-২২ নভেম্বর ঢাকায় অবস্থান করবে। বৃহস্পতিবার পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সাপ্তাহিক ব্রিফিংয়ে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র সেহেলী সাবরীন।

তিনি বলেন, ‘নির্বাচন পর্যবেক্ষণে ইউরোপীয় ইউনিয়নের চার সদস্যের এক্সপার্ট মিশন কিছু দিনের মধ্যে বাংলাদেশে আসবে। নির্বাচন কমিশনে আরও কিছু আগ্রহী পর্যবেক্ষক দল আবেদন করেছে বলে কমিশন সূত্রে জানা গেছে। তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কাছে এ সম্পর্কিত কোনো তালিকা নেই। তালিকা পেলে পরে জানানো হবে।’

জাতীয় নির্বাচনে সহযোগিতা প্রদানের জন্য কোনো দেশ বা সংস্থাকে অনুরোধ জানানো হয়নি বলেও সংবাদ সম্মেলনে জানান এ মুখপাত্র। ভারতের পররাষ্ট্র সচিবের ভাষ্যমতে, ভারত-যুক্তরাষ্ট্র দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে আলোচনা হয়েছে। এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বক্তব্য জানতে চাইলে সাবরীন বলেন, ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার পররাষ্ট্র এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী পর্যায়ের টু প্লাস টু সংলাপের ধারণাগত সূত্রপাত ২০১৭ সালে। পরে ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে প্রথমবারের মতো এ সংলাপ হয় ভারতের নয়াদিল্লিতে। টু প্লাস টু সংলাপটি মূলত ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার দ্বিপাক্ষিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়াবলী আলোচনার একটি প্ল্যাটফরম হিসাবে পরিচিত।

মুখপাত্র বলেন, ‘ভারত ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যকার ওই সংলাপে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। সেখানে বৃহত্তর বৈশ্বিক, আঞ্চলিক ও উপ-আঞ্চলিক নিরাপত্তা এবং ভূ-রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার নানা দিক উঠে আসা স্বাভাবিক। আলোচনার বিষয় কী হবে তা দুই দেশের নিজস্ব ব্যাপার।’

মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের অবস্থান নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘মার্কিন রাষ্ট্রদূতের বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অবগত। তবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এ তথ্যটা পাবলিকলি জানাবে না। একজন রাষ্ট্রদূত কোথায় গেছেন কতদিনের জন্য যাচ্ছেন, এটা কিন্তু অফিশিয়ালি জানাতে হয়। এটা পাবলিকলি জানানোর কথা নয়।

বিদেশি দূতদের অবস্থান বিষয়ে কূটনৈতিক প্রক্রিয়া সম্পর্কে সেহেলী সাবরীন বলেন, বাংলাদেশে যারা বিদেশি মিশন প্রধান বা রাষ্ট্রদূত আছেন, তারা যখন স্টেশন লিভ করেন তারা আমাদের প্রটোকলকে কূটনৈতিক পত্রের মাধ্যমে জানিয়ে যান। একইভাবে আমাদের রাষ্ট্রদূতরা যখন লিভ করেন হেডকোয়ার্টারকে জানাতে হয়, পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে এবং ওখানকার সরকারকে কূটনৈতিক পত্রের মাধ্যমে জানিয়ে আসতে হয়। এছাড়া তার অবর্তমানে যাকে দায়িত্বে দেওয়া হয় তার নামটা প্রকাশ করতে হয়। এটা একটা কূটনৈতিক প্রক্রিয়া।

এদিকে ঢাকার হযরত শাহজালাল (রহ.) বিমানবন্দরের একটি সূত্র জানায়, মার্কিন রাষ্ট্রদূত পিটার হাস সস্ত্রীক শ্রীলংকার রাজধানী কলম্বোর উদ্দেশে বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা ছেড়ে যান।

পিটার হাসকে মারধর ও হত্যার হুমকি এসেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগের দুই নেতার পক্ষ থেকে। এমতাবস্থায় তার কিছু না জানিয়ে দেশ ত্যাগ রাজনৈতিক মহলে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *