নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতির সাথে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের শুভেচ্ছা বিনিময়

নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতির সাথে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের শুভেচ্ছা বিনিময়

জাতীয়

মার্চ ১৫, ২০২৩ ১১:০৬ অপরাহ্ণ

এম রহমান রনি

বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি অ্যাডভোকেট ড. মশিউর মালেক ও সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট নুরুল ইসলাম ঠান্ডুর নেতৃত্বে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের নেতাকর্মীগণ মহামান্য রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্পুর সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। ১৩ মার্চ, সোমবার মহামান্য রাষ্ট্রপতির গুলশানের গ্লোবাল ইসলামিক ব্যাংকের কার্যালয়ে সাক্ষাৎ করে তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানান।

এসময় উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আব্দুল খালেক মিয়া, আব্দুস সালাম, ডাঃ আবদুস সালাম, সহ সভাপতি কাজী মফিজুল হক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রাশেদা হক কনিকা, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শহীদুল্লাহ ওসমানী, অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর হোসেন মিয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক নুরুল আমিন শাহীন, তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অ্যাডভোকেট মনিরুজ্জামান (শাশ্বত মনির), সহ সম্পাদক নাদিয়া আলী, সাহিত্য বিষয়ক সম্পাদক শাহনাজ জেসমিন, সুপ্রিমকোর্ট শাখার সভাপতি গৌরাঙ্গ চন্দ্র কর, আজীবন সদস্য ও বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ধর্ম বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য সৈয়দ আইনুল হক, আজীবন সদস্য আমিনা ফেরদৌসি, সাবিহা সেতু সহ অন্যান্য নেতৃবৃন্দ।

নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতির সাথে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের শুভেচ্ছা বিনিময়

বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের নেতৃবৃন্দ এসময় মহামান্য রাষ্ট্রপতির সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু কামনা করেন এবং তিনি যেন সুষ্ঠু ও সুন্দরভাবে রাষ্ট্র পরিচালনা করতে পারেন এ জন্য মহান আল্লাহতায়ালার কাছে প্রার্থনা করেন। এসময় বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের নেতৃবৃন্দ সংগঠনটির বিভিন্ন কর্মকাণ্ড সম্পর্কে রাষ্ট্রপতিকে অবহিত করেন।

মহামান্য রাষ্ট্রপতি বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের নেতাকর্মীদের ধন্যবাদ জানান এবং দেশ পরিচালনায় তাদের মতামত ও সহযোগিতা কামনা করেন।

উল্লেখ্য সব জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে ১২ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের রাষ্ট্রপতি পদের নির্বাচনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন চুপ্পু। মো. আবদুল হামিদের উত্তরসূরি হিসেবে তিনি হবেন বাংলাদেশের ২২তম রাষ্ট্রপতি।

মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন কমিশনে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দেন। সংসদে আওয়ামী লীগের নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা থাকায় তার নির্বাচিত হওয়া ছিল কেবল সময়ের ব্যাপার।

১৯৪৯ সালে পাবনায় জন্মগ্রহণকারী মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা। ২০০৬ সালে তিনি জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে অবসরে যান। ব্যক্তিজীবনে তিনি সাহাবুদ্দিন চুপ্পু নামেই বেশি পরিচিত।

ছাত্রজীবনে পাবনা জেলা ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী ও সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন সাহাবুদ্দিন। পরে সামলেছেন পাবনা যুবলীগের সভাপতির দায়িত্ব। ১৯৭১ সালে পাবনা জেলার স্বাধীন বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের আহ্বায়ক ছিলেন তিনি, মুক্তিযুদ্ধেও সক্রিয়ভাবে অংশ নেন। ১৯৭৫ সালে বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর তার দল আওয়ামী লীগের অনেক নেতাকে গ্রেপ্তার করে সে সময় ক্ষমতাদখলকারীরা। সাহাবুদ্দিনকেও তখন কারাবরণ করতে হয়।

পেশায় আইনজীবী মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন ১৯৮২ সালে বিসিএস (বিচার) ক্যাডারে যোগ দেন। বিচারকের বিভিন্ন পদে চাকরি শেষে ২০০৬ সালে জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে অবসর নেন।

২০০১ সালে বিএনপি-জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসার পরপরই আওয়ামী লীগ ও তার সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জনগোষ্ঠীর ওপর হামলা হয়, যাতে হত্যা, ধর্ষণ ও লুণ্ঠনের ঘটনা ঘটে। পরে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে ওসব ঘটনার তদন্তে ‘কমিশন’ গঠন করে, যার প্রধান ছিলেন মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন।

জুডিশিয়াল সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক এই মহাসচিব বঙ্গবন্ধু হত্যা মামলায় আইন মন্ত্রণালয়ের নিযুক্ত করা সমন্বয়কারী হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছেন।

তিনি ২০১১ সাল থেকে ২০১৬ সাল দুদকের কমিশনার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। পরে ২০২০ সালের জানুয়ারিতে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য মনোনীত হন। আওয়ামী লীগের সর্বশেষ জাতীয় কাউন্সিলে নির্বাচন কমিশনার হিসেবে তিনি দায়িত্ব পালন করেন।

মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন জেএমসি বিল্ডার্স লিমিটেডের প্রতিনিধি হিসাবে ২০১৭ সালে ইসলামী ব্যাংকের ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্ব নেন। এ ব্যাংকের অডিট কমিটিরও সদস্য তিনি।

রাজনীতি, বঙ্গবন্ধু এবং নীতি নির্ধারণী বিভিন্ন বিষয়ে তিনি নিয়মিত কলামও লিখতেন বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায়।

ব্যক্তিগত জীবনে সাহাবুদ্দিন চুপ্পু এক ছেলের বাবা। তার স্ত্রী রেবেকা সুলতানা যুগ্ম সচিব ছিলেন। তিনি বর্তমানে প্রাইম এশিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাকাডেমিক অ্যাডভাইজারের পাশাপাশি ফ্রেন্ডস ফর চিলড্রেন অর্গানাইজেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন।

বর্তমান রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ২৩ এপ্রিল। এ অবস্থায় আওয়ামী লীগের সংসদীয় কমিটির সভায় রাষ্ট্রপতি পদে দলীয় প্রার্থী মনোনয়নের ভার দেওয়া হয় দলীয় প্রধান শেখ হাসিনার ওপর। শেষ পর্যন্ত তিনি বেছে নেন মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনকে, যিনি কৈশোরে বঙ্গবন্ধুর ডাকে ছাত্রলীগের রাজনীতিতে যোগ দিয়েছিলেন।

বাংলাদেশে সংসদীয় গণতন্ত্রে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন সংসদে পরোক্ষ ভোটে। সংসদ সদস্যরাই এই নির্বাচনে ভোট দেন। তবে মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন একমাত্র প্রার্থী হওয়ায় ভোটাভুটির প্রয়োজন আর পড়েনি।

সংসদীয় গণতন্ত্র চালুর পর ১৯৯১ সালে একাধিক প্রার্থী হওয়ায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে একবারই সংসদের কক্ষে ভোট করতে হয়েছিল। পরে প্রতিবারই ক্ষমতাসীন দল মনোনীত প্রার্থী বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে আসছেন।

স্বাধীনতার পর থেকে ২১ মেয়াদে এ পর্যন্ত ১৭ জন রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেছেন। বাংলাদেশের আইনে এক ব্যক্তি সর্বোচ্চ দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপ্রধানের দায়িত্বে থাকতে পারেন। বর্তমান রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ তার দ্বিতীয় মেয়াদের শেষ প্রান্তে রয়েছেন। সেই হিসোবে নতুন রাষ্ট্রপতি হবেন এই পদে অষ্টাদশ ব্যক্তি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *