খাদ্যসংকট দূর করতে এবার কৃষিকাজে সেনাবাহিনীকে ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে শ্রীলংকা। শুরুতে দেড় হাজার একরের মতো অনুর্বর ও পতিত রাষ্ট্রীয় মালিকানার জমিতে চাষাবাদের কাজ শুরু করবে দেশটির সেনাবাহিনী। কৃষি উৎপাদন বাড়াতে এই পদক্ষেপ নেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১৬ জুন) শ্রীলংকার সেনা কর্তৃপক্ষ গ্রিন অ্যাগ্রিকালচার স্টিয়ারিং কমিটি (জিএএসসি) গঠন করে।
খাদ্য নিরাপত্তার উন্নয়ন ও কৃষি খাতে সম্পূরক কর্মসূচির অংশ হিসেবে এই জরুরি উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
গত বছরের এপ্রিলে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষে হঠাৎ করে কৃষিকাজে রাসায়নিক সার নিষিদ্ধ করেন। এতে ধানসহ অন্যান্য অত্যাবশ্যকীয় কৃষিপণ্য উৎপাদনে ধস নামে। খাদ্য, জ্বালানি ও ওষুধের সংকটের পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রার অভাব বিপর্যয়ের মাত্রা আরো বাড়িয়ে দেয়। সম্প্রতি জাতিসংঘ সতর্ক করেছে, শ্রীলংকা ভয়াবহ খাদ্যসংকটের দ্বারপ্রান্তে। এ অবস্থায় দেশটির সরকার সেনাবাহিনীকে কৃষিকাজে নিয়োগের সিদ্ধান্ত নিল।
উল্লেখ্য, গোতাবায়ার সারসংক্রান্ত বিতর্কিত কৃষিনীতি কার্যকরের আগে শ্রীলংকা চাল উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ ছিল।
খবরে বলা হয়, সেনা সদস্যরা জমি প্রস্তুতের পাশাপাশি নির্বাচিত বীজ চাষ করবেন। আঞ্চলিক স্তরে রাষ্ট্রীয় জমিগুলো চিহ্নিত করে প্রস্তুতের আগে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের গভর্নরসহ বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাদের সঙ্গে পরামর্শ করা হবে।
এদিকে প্রধানমন্ত্রী রনিল বিক্রমাসিংহে গত বৃহস্পতিবার বলেন, চালের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি ঠেকাতে শ্রীলংকার সরকার ঋণের আওতায় ৫০ হাজার মেট্রিক টন চাল আমদানির সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত মার্চ মাসে ভারত সরকার শ্রীলংকার জন্য ১০০ কোটি ডলার বর্ধিত ক্রেডিট লাইন অনুমোদনের কথা জানায়।
তবে শ্রীলংকার সংকট এখনো কাটেনি। প্রধানমন্ত্রী বিক্রমাসিংহে সম্প্রতি আইন সভায় বলেন, আগামী ছয় মাস দেশবাসীর দৈনন্দিন জীবন স্বাভাবিক রাখতে ৫০০ কোটি ডলার প্রয়োজন।
শ্রীলংকার সরকার ভারতের কাছ থেকে আরো একটি ক্রেডিট লাইন অনুমোদনের অপেক্ষায় রয়েছে।
লঙ্কান জ্বালানিমন্ত্রী কাঞ্চনা বিজেসেকারা শুক্রবার জানান, ভারতের ওই নতুন ঋণ সুবিধা আগামী চার মাস ডিজেল ও পেট্রল সরবরাহের সুযোগ করে দেবে তাদের।
এর আগে গত মঙ্গলবার রনিল বিক্রমাসিংহেও এ কথা জানান।
সূত্র: টাইমস অব ইন্ডিয়া