উল্টো পথে চলা ‘অদ্ভুত’ ঘড়ি

উল্টো পথে চলা ‘অদ্ভুত’ ঘড়ি

ফিচার স্পেশাল

সেপ্টেম্বর ২০, ২০২৩ ১২:১০ অপরাহ্ণ

অদ্ভুত ঘড়িটি টিকটিক করে চলছে উল্টো পথে। এতে সময় অবশ্য পেছনের দিকে যায় না। গোল ডায়ালের চারপাশে লাল আলোকসজ্জিত ঘড়িটি প্রথম দেখায় স্বাভাবিক মনে হবে। কিন্তু সময় দেখতে গেলেই পড়তে হবে ধাঁধায়।

ঘড়ির কাঁটা ডান দিক দিয়ে ঘুরতে দেখেই আমরা অভ্যস্ত। অথচ এ ঘড়ির সময় নির্দেশক সেকেন্ড, মিনিট ও ঘণ্টার কাঁটা ঘোরে বাঁ দিক থেকে। সময় নির্ধারক সংখ্যাগুলোও সাজানো সেভাবেই। তবে অন্য ঘড়ির সঙ্গে সময়ের কোনো পার্থক্য নেই। এবং একেবারেই সঠিক সময় দিয়ে যাচ্ছে এটি।

উল্টো চলা কৌতূহলোদ্দীপক এই ঘড়িটি টানানো রয়েছে যশোরের সুপরিচিত মনিহার সিনেমা হলের তৃতীয় তলায়। ২০২১ সালের জুন মাসে ঘড়িটি তৈরি। এর আগে দেশের কোথাও এমন অদ্ভুত ঘড়ি থাকার কথা জানা যায়নি।

সম্প্রতি এক বিকেলে মণিহার হলে গিয়ে দেখা যায়, ঘড়ির সামনে বিস্মিত মানুষের ভিড়। সিনেমা দেখতে আসা লোকজন একে অন্যকে দেখাচ্ছে ঘড়িটি। অনেকে এর ছবি তুলছে। কেউ বা নিচ্ছে সেলফি। উল্টো চলা ঘড়িটির নির্মাতা এই সিনেমা হলেরই চিফ অপারেটর শফিউজ্জামান মিন্টু।

মিন্টুর সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, তিনি ঘড়িটি এভাবে তৈরি করেন মূলত ব্যতিক্রমধর্মী কিছু সৃষ্টি করতে। এমন ঘড়ি তিনি বানিয়েছেন দুটি। গোল ডায়ালের বড়টি টানিয়েছেন হলের তিন তলায় দর্শকদের দেখার জন্য। অন্য ঘড়িটি একটু ছোট। হৃদয় আকৃতির ছোট ঘড়িটি লাগিয়েছেন সিনেমা হলের অপারেটিং কক্ষে।

এ ব্যাপারে শফিউজ্জামান মিন্টু বলেন, ‘নতুন ধরনের কিছু করতে আমার ভালো লাগে। সব ঘড়িই তো ডান দিকে ঘোরে। সেই হিসেবে উল্টো দিকে ঘোরা ঘড়ি তৈরির চিন্তা করি, যা দেখে হলে আসা দর্শক আনন্দ পাবে। ২০২১ সালের জুন মাসে ঘড়িটি তৈরি করি আমি। সংযোগ উল্টো করে দেওয়ায় ঘড়ির কাঁটাও উল্টো দিকে ঘোরে। এরপর ঘণ্টা, মিনিট সময়ের সংখ্যাগুলোর ক্রমও উল্টো করে দিই। দেখি ঘড়িটি একেবারে সেকেন্ড ধরে সঠিক সময় দিচ্ছে’।

তৈরি হলে ঘড়িটি সিনেমা হলের তিন তলায় টাঙিয়ে দেন মিন্টু। উল্টো চলা ঘড়িটি দেখে মানুষ খুব অবাক হয়। মজাও পায়। তাদের ছবি তুলতে বা ভিডিও করতে দেখলে খুব ভালো লাগে মিন্টুর।

মণিহার হলের প্রচার বিভাগে চাকরিরত প্রদীপ কুমার দাস বলেন, ‘এখানে যারা চাকরি করেন তারা সব সময় দর্শকদের আকৃষ্ট করার চেষ্টা করেন। এই চিন্তা থেকেই মিন্টু ভাই এই অন্য রকম ঘড়ি তৈরি করেছেন। উল্টো চলা এমন ঘড়ি আমার জীবনে এটাই প্রথম দেখা’।

হলে সিনেমা দেখতে আসা চাকরিজীবী মিরান মাহবুব বলেন, ‘অনেক দিন পর আমরা কয়েক বন্ধু হলে সিনেমা দেখতে এসেছি। টিকিট কেটে ওপরে ওঠার পর আমাদের একজন একটি ঘড়ি দেখাল। প্রথমে কিছু বুঝতে পারিনি। এরপর খেয়াল করে দেখলাম, ঘড়িটির কাঁটা উল্টো দিকে ঘুরছে। খুবই বিস্মিত হলাম। অদ্ভুত ব্যাপারটি হচ্ছে, ঘড়িটি সময় সঠিক দিচ্ছিল’।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *