সেপ্টেম্বর ১৭, ২০২৩ ৩:০২ অপরাহ্ণ
শাহনূর শাহীন : ‘পদ্মাসেতুর কয়টা স্প্যান’ এই প্রশ্ন দিয়ে মেধা যাচাই করা সম্ভব হয় না বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ সরকারি কর্ম কমিশনের সাবেক সচিব (পিএসসি) ও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আ. হামিদ জমাদ্দার।
বিসিএস লিখিত পরীক্ষায় সাধারণ সংক্রান্ত প্রশ্ন সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে তিনি বলেন, প্রিলিমিনারি (লিখিত) পরীক্ষা আমরা তুলে দেওয়ার প্লান করেছিলাম। কারণ পদ্মাসেতুর কয়টা স্প্যান এই প্রশ্ন দিয়ে কখনো মেধা যাচাই করা সম্ভব না। বিসিএস ক্যাডার হতে বোর্ডের ফার্স্ট হওয়া লাগে না। প্রয়োজন দেশপ্রেমিক, নিষ্ঠাবান এবং আত্মমর্যাদাশীল দক্ষ লিডার। কিন্তু প্রচলিত এই পরীক্ষায় আমরা একজন প্রার্থীর সত্যিকারের মেধা যাচাই করতে পারি না, তাকে দেখতে পারি সে কমন মানুষ। না দেখেই আমরা অনেক ব্রিলিয়ান্ট প্রার্থীকে বাদ দিয়ে দেই। কারণ অনেক মেধাবী এবং স্ব স্ব ক্ষেত্রে দক্ষ স্টুডেন্ট আছে যারা এসব গদবাঁধা সাধারণ বিষয় মুখস্ত করেন না।
শুক্রবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বিসিএস কোচিং সেন্টার ‘কনফার্ম’ এর শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১০১ জন সুপারিশপ্রাপ্ত ক্যাডার কর্মকর্তাকে দেওয়া এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
এদিন বিকেলে রাজধানীর নীলক্ষেতে মিডনাইট সান-২ রেস্টুরেন্টে এক ঝমকালো অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বিসিএস কনফার্ম। এসময় সুপারিশ প্রাপ্ত ক্যাডার কর্মকর্তাদের সংবর্ধনা ও তাদের হাতে ক্রেস্ট তুলে দেওয়া হয়। তাদেরকে ফুল দিয়ে বরণ করে নেন অতিথি ও কনফার্ম এর কর্মকর্তারা।
৩৬তম বিসিএসে পররাষ্ট্রের প্রথম স্থান অর্জনকারী ডাক্তার সুবর্ণা শামীম আলো, ১১ তম স্থান অর্জনকারী তাহমিনা, ১২ তম স্থান অর্জনকারী বিশ্বজিৎ দেবনাথ, ৩৭ তম বিসিএসে পররাষ্ট্র দ্বিতীয় স্থান অর্জনকারী ওয়ালিদ মুহাম্মদ ও ৪০তম বিসিএসে পররাষ্ট্রের তৃতীয় স্থান অর্জনকারী তাহসিন বিন্তে আনিস নোভাকেও এদিন সংবর্ধিত করা হয়।
বিসিএস কনফার্ম এর চেয়ারম্যান ও সাপ্তাহিক শীর্ষ খবর’র সম্পাদক মুহাম্মদ মনিরুজ্জামান (শাশ্বত মনির) এর সভাপতিত্বে সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ সরকারী কর্ম কমিশন এর সাবেক সচিব ও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের বর্তমান সচিব মো. আব্দুল হামিদ জমাদ্দার, বিশেষ অতিথি ছিলেন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আব্দুল আউয়াল হাওলাদার, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (স্বাস্থ্য ও সেবা বিভাগ) মো. জাহাঙ্গীর হোসেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ইকবাল হোসাইন ও আনিকা ইসলাম প্রিমা।
এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সাবেক যুগ্ম সচিব এটি এম মহিউদ্দিন, বিটিআরসির ম্যাজিস্ট্রেট সমর কুমার পাল, বিসিএস কনফার্ম সদরঘাট শাখা পরিচালক এম রহমান রনি, ইংরেজি শিক্ষক ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব বিশ্বজিৎ দেবনাথ (৩৬ তম বিসিএস), সাপ্তাহিক শীর্ষ খবরের সহসম্পাদক শাহনূর শাহীন প্রমুখ।
এসময় সদ্য সুপারিশপ্রাপ্ত ক্যাডার কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে ধর্মসচিব ও পিএসসির সাবেক সচিব মো. আব্দুল হামিদ জমাদ্দার বলেন, সিভিল সার্ভিসই সফলতার শেষ না। যা অর্জন করেছেন তা ন্যায়সঙ্গতভাবে ধরে রাখতে পারা আসল সফলতা।
নবীন কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে পিএসসির এই সাবেক সচিব বলেন, ফিল্ডে যারা কাজ করবেন তারা নানা সমস্যা ফেস করবেন। আপনাকে ব্রিলিয়ান্ট হতে হবে তা কিন্তু না। বরং আপনাকে লিডার হতে হবে। সিদ্ধান্ত গ্রহণে দক্ষতা অর্জন করতে হবে। মনে রাখতে যেটা লিগ্যাল আপনি সেটাই করবেন। তবে চাকরী জীবনে নিজের মূল আইডিওলজি কখনো কারো সাথে শেয়ার করবেন না। ব্যক্তিগত মতামত কখনো প্রকাশ করবেন না। দায়িত্ব পালনে নিরপেক্ষ থেকে নিষ্ঠার সাথে কাজ করবেন।’
আব্দুল হামিদ জমাদ্দার আরো বলেন, দায়িত্ব পালনের সময় সততা ধরে রাখবেন। অনৈতিকভাবে যত পয়সা কামাই করেন না কেন তা আপনি ভোগ করতে পারবেন না। হালালভাবে উপার্জনের টাকা ডাল-ভাত খেলেও শান্তিতে থাকতে পারবেন। দেখবেন অনেক ধনীরা ট্যাবলেড খেয়েও ঘুমাতে পারে না। এত সম্পদ কিন্তু তারা কেউ নিয়ে যেতে পারে না।
বিসিএসে প্রার্থীজট ও দীর্ঘসূত্রিতার বিষয়ে তিনি বলেন, আমি যখন সচিব ছিলাম তখন বলালম পাশ মার্ক বাড়িয়ে দেন। এখন ৫০ মার্কে পাশ। আমি বলেছি ৫৫ করেন। এতে পাশের সংখ্যা কমে আসবে সময় কম লাগবে। আমাদের সময় কিন্তু এটা ৪০ মার্ক ছিলো। কিন্তু বাংলাদেশে সমস্যা হলো কেউ সংস্কার করতে চায় না। সংস্কার করতে হলে নানা বিষয় ফেস করতে হয়। এই ভয়ে কেউ সংস্কারে হাত দেয় না। এছাড়াও পরীক্ষায় অংশগ্রহণের জন্য এসএসসি, এইচএসসি নূন্যতম গ্রেড বাধ্যতামূলক করার প্রস্তাব করেছিলাম। কারণ হলো অনেকে গ্রেড পয়েন্ট কম হওয়ার কারণে বাংলাদেশ ব্যাংকে চাকরির আবেদন করতে পারে না কিন্তু বিসিএসে সুযোগ পেয়ে যায়। এগুলো সংশোধন করতে পারলে প্রার্থী সংখ্যা কমে আসবে। সময়ও কম লাগবে। আস্তে আস্তে এগুলো বাস্তবায়ন হবে আশা করি।
বিসিএস পরীক্ষার স্বচ্ছতার বিষয়ে তিনি বলেন, আমি মাঝে মাঝে বলি জো বাইডেন বললেও লাভ নাই। ভাইভা বোর্ডে যারা থাকেন তারা কেউ জানে না প্রার্থী কে। প্রার্থী জানে না কোন বোর্ডে তার ভাইভা হবে। রুমে ঢোকার আগ পর্যন্ত জানার কোনো সুযোগও থাকে না। অন্যদিকে প্রার্থীর মোবাইল ফোন আগেই সুইস করা হয়। ফলে কারো সাথে কমিউনিকেশনের কোনো সুযোগ থাকে না যাতে সে মামা খালু দিয়ে সুপারিশ করতে পারবে।
এসময় সভাপতির বক্তব্যে বিসিএস কনফার্ম এর চেয়ারম্যান ও সাপ্তাহিক শীর্ষ খবর সম্পাদক মুহাম্মদ মনিরুজ্জামন (শাশ্বত মনির) বলেন, বিসিএস কনফার্ম কেবল তথাকথিত বিসিএস ক্যাডার তৈরি করে না। এটা একটা আদর্শিক প্রতিষ্ঠান। আদর্শ মানুষ গড়ার কারিগড়। সেজন্য কনফার্ম এর কোনো শিক্ষার্থী ব্যর্থ হয় না। বরং প্রত্যেকেই সফল নাগরিক হিসেবে গড়ে ওঠে। একজন দেশপ্রেমিক সুনাগরিক ও দক্ষ কর্মকর্তা তৈরি করে বিসিএস কনফার্ম দেশের সেবায় ভূমিকা রাখছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আব্দুল আউয়াল হাওলাদার বলেন, আমাদের অনেক বন্ধু বিসিএসে অংশ নেয়। আমরা দু্ই বন্ধু (ধর্ম-সচিবসহ) টিকে যাই। অনেকেই ক্যাডার হতে না পেরে আফসেট হয়ে গেলো। কিন্তু দেখা গেলো সেই আফসেট হওয়া ছেলেদের কেউ কেউ এমপি, মন্ত্রী হয়ে গেলো। সুতরাং আল্লাহ যার জন্য যেটা রেখেছেন সেটাই সফলতা। একটা কথা মনে রাখতে হবে কেউ যেটা অর্জন করে সেটা সফলতা না। অর্জন করতে গিয়ে যে স্ট্রাগল করে, যে পরিস্থিতি মোকাবেলা করে সেটা হলো সফলতা। একটা মানুষ যখন নিজের যা আছে তাই নিয়ে তৃপ্ত থাকে তখন সে সুখী হয়। কিন্তু তৃপ্ত না হলে কেউ কখনোই সুখী হতে পারে না। কারণ মানুষের চাহিদা কখনো শেষ হয় না।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়ের সাবেক যুগ্ম সচিব এ টি এম মহিউদ্দিন আহমেদ বলেন, আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজির স্টুডেন্ট ছিলাম। তখন এত কোচিং সেন্টারও ছিলো না। আমি কোনো কোচিংও করিনি। কিন্তু সিভিল সার্ভিসে কাজ করতে গিয়ে আমি এক সময় উপলব্ধি করি টেকনিক এর জন্য কোচিং সেন্টারে আসা প্রয়োজন। আমি তখন সচিবালয়ে চাকরি করি। একদিন টেলিগ্রাম করতে গিয়ে যা শিখলাম; ইংরেজির শিক্ষীর্থী হয়েও আমি টেলিগ্রাম লিখতে পারছি না। অথচ অল্প শিক্ষিত একজন ব্যক্তি সেটা খুব সহজেই করে ফেলছে। কনফার্ম শুধু একটা কোচিং সেন্টার নয়, এটা একটা মিশন। যারা আগামী দিনে দেশ পরিচালনা করবে এই প্রতিষ্ঠান তাদেরকে আদর্শ ও দক্ষতার সমন্বয়ে উপযুক্ত করে গড়ে তুলছে।
এসময় নবীন কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, প্রাাইমারি লেভেল থেকে যারা সাথে ছিলো এবং এখন যারা সাথে আছে কাউকেই ভুলে যাবেন না। পরিবার, বন্ধু, রিকশা চালক, কৃষক, এমনকি চলার পথে একটা ঘাষের শিশির বিন্দুও যদি কখনো ভালো লেগে থাকে সেটাও মনে রাখতে হবে। প্রাইমারিতে যার সাথে পড়েছি তাকেও মনে রাখতে হবে, তেমনি বিসিএস ক্যাডার সহকর্মীকেও মনে রাখতে হবে। ‘বিসিএস ক্যাডার হয়ে গেছি এখন আর কাউকে মনে রাখতে হবে না’ এমন হওয়া যাবে না। কারণ আজকের সফলতার পেছনে মা-বাবা, পরিবার, বন্ধু এমনকি একজন রিকশা চালকেরও অবদান আছে। সেজন্য শেকড় ভুলে যাওয়া যাবে না।
৩৬ তম বিসিএস এর পররাষ্ট্র ক্যাডার ও বিসিএস কনফার্ম এর ইংরেজি শিক্ষক, সিনিয়র সহকারী সচিব বিশ্বজিৎ দেবনাথ বলেন, বিসিএসই যে সফলার পরিমাপক এমন নয়। লাইফে সফলতার অনেক উপলক্ষ্য আছে। তবে বিসিএস যদি লক্ষ্য হয় তাহলে বিসিএসকেই ধ্যান-জ্ঞান করতে হবে। অর্থাৎ টার্গেটের পিছনে লেগে থাকতে হবে। তার জন্য হয়ত অনেক কিছু সেক্রিফাইস করতে হবে। তবেই সফলতা আসবে।
অনুষ্ঠান সহযোগিতায় ছিল পুষ্পধারা প্রপার্টিজ লি., আমিন মোহাম্মদ ফাউন্ডেশন, প্রফেসরস পাবলিকেশন্স, জয়কলি পাবলিকেশন্স ও মিডিয়া পার্টনার ছিল সাপ্তাহিক শীর্ষ খবর।
সংবর্ধনা গ্রহণকারীরা হলেন, মো: তন্ময় ইসলাম, (প্রশাসন, ৬ষ্ঠ), তানজিল হোসেন তমাল, (প্রশাসন), মির্জা মো. তাওসীফ শরীফ স্নিগ্ধ, (প্রশাসন), মো. তাহমিদুর রহমান, (প্রশাসন), এ. বি. এম. কাউসার জামান, (প্রশাসন), মো. আজম (প্রশাসন), সাইফুন নাহার তন্নী (প্রশাসন), আসিফ রেজা, (পুলিশ), মো: মোনোয়ার হোসেন (পুলিশ), অপু মন্ডল (পুলিশ), মো: মাহবুব আলম (কাস্টমস্), মো: মাহফুজুর রহমান (কাস্টমস্), সাজ্জাদ হুসাইন (আনসার), মো: নাজিম উদ্দিন (ট্যাক্স), মো: ফেরদৌস আলম (পরিবার পরিকল্পনা), চয়ন বালা (পরিবার পরিকল্পন), রায়হানা ইসলাম (তথ্য), আদুল্লাহ আল জুনাইদ (রেলওয়ে), অর্ণব ঘোষ (জনস্বাস্থ্য), মো: নাজিউর রহমান (কৃষি), লাইসার আহমেদ রুমন (শিক্ষা, রসায়নে ১ম), মোসা. আতিকা (শিক্ষা), মো. রাহাতুর রহমান (শিক্ষা), মৌসুমী আক্তার (শিক্ষা), কুমারী মুক্তা কর্মকার (শিক্ষা), মো: শহিদুজ্জামান (শিক্ষা), মৌসুমী ঘোষ (শিক্ষা), মো: ছারছেদ আহমেদ (শিক্ষা), মো: সোহাগ হোসেন (শিক্ষা), গোলাম রব্বানী (শিক্ষা), এম আর আবদুল্লাহ(শিক্ষা), মোঃ সজিবুর রহমান (শিক্ষা), কাজী আরিফ (শিক্ষা), পপি হাওলাদার (শিক্ষা), ইমন সরদার (শিক্ষা), মো: নাজমুল হুসাইন (শিক্ষা), আসাদুল্লাহ আল গালিব (শিক্ষা), জালাল উদ্দিন (শিক্ষা), আব্দুল্লাহ আল মামুন (শিক্ষা), ইমরান খান (শিক্ষা), হেলাল উদ্দিন (শিক্ষা), তানজিলা বিপ্লবী (শিক্ষা), মো: সুজন মিয়া (শিক্ষা), কামরুল হাসান (শিক্ষা) তুষার বর্মন (শিক্ষা), রাসেল মিয়া (শিক্ষা), দ্বিপানিতা দিপা (স্বাস্থ্য), নুসরাত জাহান নিশু (স্বাস্থ্য), ফারজানা আলম পান্না (স্বাস্থ্য), সিফাত মাহমুদ (স্বাস্থ্য), রেজওয়া তাহসিন (স্বাস্থ্য), ডা. ফয়সাল তুহিন (স্বাস্থ্য), মো. ফয়সাল হাসান (স্বাস্থ্য), নিলুফার ইয়াসমিন (স্বাস্থ্য), মো: মামুন বিশ্বাস (স্বাস্থ্য), ওমর ফারুক (স্বাস্থ্য), মো. শাহদাত হোসেন (রোডস এন্ড হাইওয়ে), রাজা (ডেন্টাল) ফাল্গুনী (প্রাণীসম্পদ) প্রমুখ।
সংবর্ধিত হয়ে এক প্রতিক্রিয়ায় প্রশাসন ক্যাডারে (৩৬তম) সহকারী কমিশনার- মাজিস্ট্রেট হিসেবে সুপারিশপ্রাপ্ত, ব্রাক বিশ্ববিদ্যালয়ের সিইসই ডিপার্টমেন্টের লেকচারার মির্জা মো. তওসিফ শরীফ স্নিগ্ধ বলেন, কনফার্মের আন্তরিকতা এবং স্টুডেন্টদের প্রতি চমৎকার যত্ন আমাকে অভিভূত করেছে। এই প্রতিষ্ঠান শুধু ক্যাডার তৈরি করে না, এখান থেকে দেশপ্রেমিক দায়িত্বশীল নাগরিক গড়ে তোলা হয়। নবীন শিক্ষার্থী ভবিষ্যত প্রার্থীদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, আমাদের মোটিভেশনের সবথেকে বড় উপায় মা বাবার সেই সময়ের চেহারা কল্পনা করা যখন আমার সফলতায় তারা আনন্দিত হবেন।
প্রশাসন ক্যাডারে (৯৭) সুপারিশপ্রাপ্ত তাহমিদুর রহমান বলেন, ক্যারিয়ারে আমার দৃষ্টিতে যেটা বেস্ট সেটাই এচিভ করতে হবে। ক্যারিয়ারের শেষ প্রান্তে গিয়ে বড় গোল ঠিক করে তা অর্জন করতে হবে। আর জীবনের সফলতার দৌড়ে কাছের মানুষগুলোর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং কে আমার পাশে আছে, কাকে সঙ্গী হিসেবে নির্বাচন করেছি সেটা বিবেচনা করতে হবে।
পুলিশ ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত বাংলাদেশ হাউজ বিল্ডিংয় কর্পোরেশনের সিনিয়র অফিসার আসিফ রেজা বলেন, নিজেকে যতটা নম্র এবং অহংকার মুক্ত রাখতে পারবেন তবেই নিজের অভিষ্ট্য লক্ষে পৌঁছতে পারবেন। সফলতার মানে হলো সুখী হওয়া। এমন যেন না হয়, ক্যাডার হয়ে আমি জনসাধারণ থেকে অসাধারণ কেউ হয়ে গেছি। আসলে কিছুই পরিবর্তন হয়নি। আমি সেই আগের মানুষটাই আছি।
প্রশাসন ক্যাডারে সুপারিশ্রপ্রাপ্ত ও প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক তানজিদ হোসেন বলেন, সফলতার পেছনে অবশ্যই সৃষ্টিকর্তার কৃপা ও মা-বাবার ভূমিকা থাকে। কিন্তু বিসিএস কনফার্মও আমার জীবনে সফলতার অন্যতম সোপান।
প্রশাসন ক্যাডার সাইফুন নাহার তন্মী বলেন, নারী আর পুরুষের পড়াশোনা এক না। একজন পুরুষ ঘুম থেকে উঠে যে নাস্তা করে সেটা তার মা, বোন, কিংবা স্ত্রী বানিয়ে দেয়। কিংবা হোটেল থেকে নাস্তা করে তার দিন শুরু হয়। কিন্তু নারী কিন্তু সহজেই সেটা পারে না। নারীকে সব কিছু গুছিয়ে রাখতে হয়। সে নিজেকে গুছিয়ে রাখে তেমনি পরিবারের অন্যকেও গুছিয়ে রাখে। সফলতার জন্য গোছালো পরিকল্পনা অপরিহার্য। বিসিএস চেষ্টায় আপনি যদি অগোছালো হন, তাহলে কনফার্ম আপনাকে গুছিয়ে দিবে।
শিক্ষা ক্যাডারে সুপারিশপ্রাপ্ত মৌসুমী ঘোষ বলেন, বিসিএস প্রিলি পরীক্ষা দেওয়ার সময় আমার মনে হলো আমি কনফার্মে মডেল টেস্ট দিচ্ছি। তখন পুরোপুরি নিশ্চিত হলাম কনফার্ম বিসিএস এর স্টান্ডার্ড গাইডলাইন ফলো করে। সবথেকে বড় কথা আন্তরিকতায় কনফার্ম অনন্য। আমি আরো অনেক কোচিং-এ ভর্তি হয়েছিলাম কিন্তু কনফার্মেই সবচেয়ে বেশি পরীক্ষা দিয়েছি।
/এসএস/শীখ/