শিশু লামিয়াকে ধর্ষন করে হত্যা

দেশজুড়ে

জানুয়ারি ৯, ২০২৩ ২:১৭ অপরাহ্ণ

মো: নুরুজ্জামান রাঙ্গাবালী ( পটুয়াখালী) প্রতিনিধি :

পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়নের চরআন্ডা গ্রামে শুক্রবার রাতে নিখোঁজ হয় শিশু লামিয়া আক্তার (১২)। পরদিন শনিবার একটি পুকুর পাড়ে তার জুতা এবং বিলে ওড়না পাওয়া যায়। তখন বিষয়টি পুলিশকে জানায় পরিবার। এরপর পুলিশ আল আমিন (৩৫) নামে এক আটোচালককে আটক করে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে জানায়, লামিয়াকে হত্যা করে বুড়াগৌরাঙ্গ নদীতে লাশ ভাসিয়ে দিয়েছে। তবে রোববার সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত ওই নদীতে অভিযান চালিয়েও লাশ উদ্ধার করা যায়নি।

শিশুটির পরিবারের দাবি, লামিয়াকে প্রায়ই উত্ত্যক্ত করত আল আমিন। সে তাকে ধর্ষণের পর হত্যা করে লাশ গুম করেছে। এদিকে আটোচালকের ফাঁসির দাবিতে রোববার মানববন্ধন ও বিক্ষোভ করেছেন স্থানীয়রা।

পরিবার ও স্থানীয়রা জানান, শুক্রবার বিকালে বাড়ি থেকে এক কিলোমিটার দূরের সাগরপাড় বাজারে নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য কিনতে গিয়েছিল লামিয়া। সন্ধ্যা ৬টায় বাড়ি ফেরার পথে নিখোঁজ হয় সে। রাতে সম্ভাব্য সব জায়গায় খোঁজ করেও তার সন্ধান মেলেনি। পরদিন দুপুরে চরআন্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়সংলগ্ন একটি পুকুর পাড় থেকে তার একটি জুতা, কাঁচামরিচ ও শেম্পুসহ বাজারের ব্যাগ এবং খালসংলগ্ন বিলের মাঝে পাওয়া যায় ওড়না। এসব উদ্ধারের পর ধর্ষণ এবং হত্যার পর লাশ গুমের সন্দেহ হয় পরিবার ও এলাকাবাসীর।

স্থানীয়রা আরও জানান, লামিয়া যেখান থেকে নিখোঁজ হয় সেখানে দীর্ঘ সময় ধরে আল আমিনের আটো পড়ে ছিল। তাই অটোচালক আল আমিনকে সন্দেহ হয় তাদের। তাকে খুঁজতে শুরু করেন স্থানীয় লোকজন। কিন্তু কোথাও তাকে পাওয়া যায়নি। পরে রাত ২টার দিকে আলেকান্দা গ্রাম থেকে আল আমিনকে (৩৫) ধরে পুলিশে সোপর্দ করা হয়। আল আমিন চরআন্ডা গ্রামের ইসমাঈল হাওলাদারের ছেলে।

লামিয়ার বাবা বলেন, ‘আমি সাগরে ছিলাম। মেয়ে নিখোঁজের কথা শুনে বাড়ি আসি। আল আমিন ধর্ষণের পর তাকে হত্যা করে লাশ গাঙে (নদীতে) ফালাইয়া দিছে। আমরা তার ফাঁসি চাই।’

শিশু লামিয়ার মামি বলেন, প্রায়ই লামিয়াকে পথঘাটে উত্ত্যক্ত করত আল আমিন। আমরা আল আমিনের ফাঁসি চাই। এ ঘটনায় ওর সঙ্গে যারা জড়িত আছে তাদেরও ফাঁসি চাই।

এ বিষয়ে রাঙ্গাবালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, অটোচালক আল আমিন প্রাথমিক স্বীকারোক্তিতে লামিয়াকে শ্বাসরোধে হত্যার পর লাশ নদীতে ফেলে দিয়েছে বলে স্বীকার করেছে। ধর্ষণ করেছিল কিনা তা আরও জিজ্ঞাসাবাদে জানা যাবে। তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন। তিনি আরও বলেন, লামিয়ার লাশ উদ্ধারে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। নদী বড় হওয়ায় এখনো লাশ উদ্ধার করা যায়নি।

এদিকে আটোচালক আল আমিনের ফাঁসির দাবিতে রোববার বেলা সাড়ে ১১টায় চরআন্ডা সাগরপাড় বাজারে মানববন্ধন করেন বিক্ষুব্ধ জনতা। পরে সেখান থেকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়ে চরআন্ডা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে শেষ হয়। বিদ্যালয় মাঠেও একটি মানববন্ধন হয়। এসব কর্মসূচিতে লামিয়ার পরিবার, এলাকাবাসী ও শিক্ষার্থীরা অংশ নেয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *