রিয়াদের দুর্দান্ত সেঞ্চুরি

রিয়াদের দুর্দান্ত সেঞ্চুরি

খেলা

অক্টোবর ২৫, ২০২৩ ১১:৩৯ পূর্বাহ্ণ

আগেরদিনই টসের বিষয়ে দোয়া চেয়েছিলেন সাকিব আল হাসান। কেউ দোয়া করেছিলেন কি না জানা নেই, তবে করলেও তা কাজে আসেনি। টস জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল দক্ষিণ আফ্রিকা। অতঃপর যা হওয়ার শঙ্কা ছিল, হয়েছে ঠিক সেটাই।

দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথমে ব্যাট করে গড়েছিল রানের পাহাড়। যা তাড়া করতে নেমে তাসের ঘরের মতো ভেঙে পড়ে বাংলাদেশের ইনিংস। রিয়াদ কিছুটা চেষ্টা করেছেন ঠিকই। তবে বড় ব্যবধানের হারে সেমিফাইনালের দৌড় থেকে অনেকটাই ছিটকে পড়েছে টাইগাররা।

মুম্বাইয়ের ওয়াংখেড়ে স্টেডিয়ামে ৫ উইকেটে ৩৮২ রান সংগ্রহ করে দক্ষিণ আফ্রিকা। জবাবে ২৩৩ রানে থেমেছে বাংলাদেশের ইনিংস। ৪৬.৩ ওভারে অল আউট হওয়া টাইগারদের হার ১৪৯ রানে।

বাংলাদেশের হয়ে রান তাড়া করতে নেমে প্রথম ৬ ওভারে কোনো ক্ষতি ছাড়াই ৩০ রান যোগ করেন তানজিদ হাসান তামিম ও লিটন দাস। সপ্তম ওভারে এসে জোড়া ধাক্কা খায় বাংলাদেশ। এ সময় ওভারের প্রথম বলেই আউট হন তানজিদ তামিম।

তামিম ১২ রান করলেও আজ খাতা খুলতে পারেননি নাজমুল হোসেন শান্ত। গোল্ডেন ডাকের স্বাদ পান এ ব্যাটার। চারে নামা সাকিব ১ রানে ফেরেন। মুশফিকুর রহিম ৮ রানের বেশি করতে পারেননি। লিটন দাস ২২ রানে ফিরলে বিপদে পড়ে টিম টাইগার।

দলের প্রথম ৫ ব্যাটারের অসহায় আত্মসমর্পণে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় বাংলাদেশ। মেহেদী মিরাজ ১১, নাসুম আহমেদ ১৯ ও হাসান মাহমুদ ১৫ রানে সাজঘরে ফেরেন। ১৫৯ রানে ৮ উইকেট হারানো বাংলাদেশ বড় ব্যবধানে হারের ক্ষণ গুণতে থাকে।

অন্যপ্রান্তে সবার ব্যর্থতার দিনে একপ্রান্ত আগলে রেখে দুর্দান্ত এক সেঞ্চুরি তুলে নেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। বিপর্যয়ের মুখে দাঁড়িয়ে ১০৪ বলে ক্যারিয়ারের চতুর্থ সেঞ্চুরি তুলে নেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ১১১ বলে ১১১ রানের দুর্দান্ত এক ইনিংস উপহার দেন রিয়াদ।

নবম উইকেটে মুস্তাফিজুর রহমানের সঙ্গে ৬৮ রানের জুটি গড়েন রিয়াদ। শেষদিকে মুস্তাফিজ ১১ ও শরিফুল ইসলাম ৬* রান করেন। দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে কোয়েৎজে তিনটি এবং মার্কো জানসেন, লিজার্ড উইলিয়ামস ও রাবাদা দুটি করে উইকেট নেন।

এর আগে আজ টস জিতে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেন দক্ষিণ আফ্রিকা অধিনায়ক এইডেন মার্করাম। তবে ব্যাট হাতে শুরুটা ভালো হয়নি প্রোটিয়াদের। মাত্র ৩৬ রানে দুই উইকেট হারায় তারা। রেজা হেনড্রিকস ১২ ও রাসি ফন ডার ডুসেন ১ রানে আউট হন।

ইনিংসে বাংলাদেশের আনন্দের মুহূর্ত বলতে ছিল এতটুকুই। পরের গল্পের শুরুটা এগিয়ে নেন ডি কক ও এইডেন মার্করাম। বিচ্ছিন্ন হওয়ার আগে দুজন গড়েন ১৩১ রানের জুটি। সাকিবের বলে ফেরা মার্করাম করেন ৬০ রান।

চতুর্থ উইকেট জুটিতে আরো ভয়ঙ্কর হয়ে ওঠে দক্ষিণ আফ্রিকা। যেখানে মাত্র ৮৭ বলে ১৪২ রান যোগ করেন ডি কক ও হেনরিখ ক্লাসেন। এর মাঝে বেশ কিছু রেকর্ড গড়েন ১৫০তম ওয়ানডে ম্যাচ খেলতে নামা কুইন্টন ডি কক।

১০১ বলে তিন অঙ্কের ম্যাজিক ফিগার স্পর্শ করা ডি কক দেড়শ পূরণ করতে নেন মাত্র ২৮ বল। চলতি বিশ্বকাপে এটি তার তৃতীয় সেঞ্চুরি। এ ইনিংসটি খেলায় চলতি আসরের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক এখন পর্যন্ত তিনি।

দেড়শ’ রান করার পথে ডি কক ভাঙেন ১৬ বছর আগের রেকর্ড। উইকেটকিপার হিসেবে বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রানের রেকর্ড নিজের করে নেন তিনি। যেভাবে এগোচ্ছিলেন, তাতে মনে হচ্ছিল ডাবল সেঞ্চুরিও করে ফেলবেন এই মারকাটারি ব্যাটার।

তবে ডি কককে হতাশ করেন হাসান মাহমুদ। তার বলে আউট হওয়ার আগে ১৭৪ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলেন ডি কক। অন্যপ্রান্তে ক্লাসেনও ছিলেন সেঞ্চুরির পথে। হাসান মাহমুদের বলেই শেষ ওভারে ৯০ রানে আউট হন এ ড্যাশিং ব্যাটার।

প্রোটিয়াদের বড় ইনিংস নিশ্চিত হয় ডেভিড মিলারের ক্যামিওতে। শেষদিকে ১৫ বলে ৩৪ রানে অপরাজিত থাকেন তিনি। বাংলাদেশের হয়ে হাসান দুটি এবং সাকিব, মুস্তাফিজ ও মেহেদী মিরাজ নেন একটি করে উইকেট।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *