প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিয়ে অনেকেই নানা মনগড়া মন্তব্য করছেন। আমাদের তিন মাসের আমদানি খরচ মেটানোর মতো রিজার্ভ থাকলেই চলে। বর্তমানে আমাদের পাঁচ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর মতো বৈদেশিক মুদ্রা মজুদ আছে। আগামীকাল মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে আজ বৃহস্পতিবার তিনি এ কথা বলেন। তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের মহামারির সময় সব ধরনের ভারি যন্ত্রপাতি আমদানি, বিদেশ ভ্রমণ এবং অন্যান্য পণ্য আমদানি অনেকটা বন্ধ ছিল। সে সময় আমাদের রিজার্ভ বৃদ্ধি পেয়ে ৪৮ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়। এই বিপুল পরিমাণ অর্থ অলস অবস্থায় না রেখে সেখান থেকে কিছু পরিমাণ অর্থ দিয়ে আমরা একটা বিশেষ তহবিল গঠন করেছি। সেই তহবিলের অর্থ দ্বারা কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হ্রাস পাওয়ার আরেকটি কারণ হচ্ছে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে আমরা বেশি দামে জ্বালানি তেল, ভোজ্য তেল, গম, ভাল, ভুট্টাসহ অন্যান্য পণ্য ক্রয় করে স্বল্পমূল্যে সাধারণ মানুষের কাছে বিক্রি করছি। ব্যাংকে টাকা নেই বলে গুজব ছড়িয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে। অযথা গুজবে কান দেবেন না। বাংকে টাকার কোনো ঘাটতি নেই। উপার্জিত টাকা ঘরে রেখে বিপদ ডেকে আনবেন না। আমাদের বিনিয়োগ, রেমিটেন্স প্রবাহ এবং আমদানি-রফতানি পরিস্থিতি সবকিছু স্বাভাবিক রয়েছে। তিনি উল্লেখ করেন, আমাদের বিগত ১৪ বছরে দেশ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। আজকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের কাতারে সামিল হতে পেরেছে। দেশ আজ খাদ্যশস্য-উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। চলতি বছর ৪ কোটি ৪ লাখ মেট্রিক টন চালসহ ৪ কোটি ৭২ লাখ মেট্রিক টন দানাদার শস্য উৎপাদিত হয়েছে। মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, সবজি, ফলসহ বিভিন্ন কৃষিপণ্য উৎপাদন ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার সব সময়ই সাধারণ মানুষের কল্যাণে জন্য কাজ করে থাকে। আমরাই ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে বয়স্ক, বিধবা, স্বামী পরিত্যাক্তা, প্রতিবন্ধী এবং মুক্তিযোদ্ধা ভাতাসহ প্রান্তিক মানুষের জন্য বিভিন্ন ভাতা চালু করেছিলাম। এসব ভাতাভোগীর সংখ্যা এবং টাকার পরিমাণ উভয়ই বৃদ্ধি করা হয়েছে। সমাজের সকল অনগ্রসর শ্রেণির মানুষ যেমন, হিজড়া, বেদে, হরিজন, সুইপার, চা শ্রমিক - এদের জন্য বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষাভাতা ও অন্যান্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনির বিভিন্ন কর্মসূচির আওতায় প্রায় সাড়ে চার কোটি মানুষ উপকৃত হচ্ছেন। তিনি আরো বলেন, ১৯৯৬ সালে সরকারের দায়িত্বে এসেই আমরা আশ্রায়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে ভূমিহীন পরিবারকে বিনামূল্যে ঘর প্রদান এবং তাঁদের জীবন-জীবিকার জন্য প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহায়তা দেওয়া শুরু করি। মুজিববর্ষে আমরা ঘোষণা করেছি কোন মানুষই আশ্রয়হীন থাকবে না। সেজন্য আমরা ভূমিহীন পরিবারকে বিনামূল্যে জমিসহ ঘর নির্মাণ করে দিচ্ছি। এ পর্যন্ত ৩৫ লাখ মানুষকে বিনামূল্যে ঘর নির্মাণ করে দিয়ে পুনর্বাসন করা হয়েছে। তাদের জীবন-জীবিকা নির্বাহের জন্য প্রশিক্ষণ ও নগদ অর্থ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। আমরা ২ কোটি ৫৩ লাখ ছাত্র-ছাত্রীকে বিভিন্ন বৃত্তি ও উপবৃত্তি দিচ্ছি। মাধ্যমিক পর্যন্ত সকল শিক্ষার্থীকে প্রতিবছর বিনামূল্যে বই দেওয়া হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

রিজার্ভ নিয়ে অনেকে মনগড়া মন্তব্য করছে : প্রধানমন্ত্রী

জাতীয় স্লাইড

ডিসেম্বর ১৫, ২০২২ ৮:০২ অপরাহ্ণ

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ নিয়ে অনেকেই নানা মনগড়া মন্তব্য করছেন। আমাদের তিন মাসের আমদানি খরচ মেটানোর মতো রিজার্ভ থাকলেই চলে। বর্তমানে আমাদের পাঁচ মাসের আমদানি ব্যয় মেটানোর মতো বৈদেশিক মুদ্রা মজুদ আছে।

আগামীকাল মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে আজ বৃহস্পতিবার তিনি এ কথা বলেন।

তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের মহামারির সময় সব ধরনের ভারি যন্ত্রপাতি আমদানি, বিদেশ ভ্রমণ এবং অন্যান্য পণ্য আমদানি অনেকটা বন্ধ ছিল। সে সময় আমাদের রিজার্ভ বৃদ্ধি পেয়ে ৪৮ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়। এই বিপুল পরিমাণ অর্থ অলস অবস্থায় না রেখে সেখান থেকে কিছু পরিমাণ অর্থ দিয়ে আমরা একটা বিশেষ তহবিল গঠন করেছি। সেই তহবিলের অর্থ দ্বারা কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ হ্রাস পাওয়ার আরেকটি কারণ হচ্ছে আন্তর্জাতিক বাজার থেকে আমরা বেশি দামে জ্বালানি তেল, ভোজ্য তেল, গম, ভাল, ভুট্টাসহ অন্যান্য পণ্য ক্রয় করে স্বল্পমূল্যে সাধারণ মানুষের কাছে বিক্রি করছি। ব্যাংকে টাকা নেই বলে গুজব ছড়িয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করা হচ্ছে। অযথা গুজবে কান দেবেন না। বাংকে টাকার কোনো ঘাটতি নেই। উপার্জিত টাকা ঘরে রেখে বিপদ ডেকে আনবেন না। আমাদের বিনিয়োগ, রেমিটেন্স প্রবাহ এবং আমদানি-রফতানি পরিস্থিতি সবকিছু স্বাভাবিক রয়েছে।

তিনি উল্লেখ করেন, আমাদের বিগত ১৪ বছরে দেশ আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে। আজকে বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের কাতারে সামিল হতে পেরেছে। দেশ আজ খাদ্যশস্য-উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। চলতি বছর ৪ কোটি ৪ লাখ মেট্রিক টন চালসহ ৪ কোটি ৭২ লাখ মেট্রিক টন দানাদার শস্য উৎপাদিত হয়েছে। মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, সবজি, ফলসহ বিভিন্ন কৃষিপণ্য উৎপাদন ব্যাপক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকার সব সময়ই সাধারণ মানুষের কল্যাণে জন্য কাজ করে থাকে। আমরাই ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে বয়স্ক, বিধবা, স্বামী পরিত্যাক্তা, প্রতিবন্ধী এবং মুক্তিযোদ্ধা ভাতাসহ প্রান্তিক মানুষের জন্য বিভিন্ন ভাতা চালু করেছিলাম। এসব ভাতাভোগীর সংখ্যা এবং টাকার পরিমাণ উভয়ই বৃদ্ধি করা হয়েছে। সমাজের সকল অনগ্রসর শ্রেণির মানুষ যেমন, হিজড়া, বেদে, হরিজন, সুইপার, চা শ্রমিক – এদের জন্য বাসস্থান, চিকিৎসা, শিক্ষাভাতা ও অন্যান্য সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনির বিভিন্ন কর্মসূচির আওতায় প্রায় সাড়ে চার কোটি মানুষ উপকৃত হচ্ছেন।

তিনি আরো বলেন, ১৯৯৬ সালে সরকারের দায়িত্বে এসেই আমরা আশ্রায়ণ প্রকল্পের মাধ্যমে ভূমিহীন পরিবারকে বিনামূল্যে ঘর প্রদান এবং তাঁদের জীবন-জীবিকার জন্য প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহায়তা দেওয়া শুরু করি। মুজিববর্ষে আমরা ঘোষণা করেছি কোন মানুষই আশ্রয়হীন থাকবে না। সেজন্য আমরা ভূমিহীন পরিবারকে বিনামূল্যে জমিসহ ঘর নির্মাণ করে দিচ্ছি। এ পর্যন্ত ৩৫ লাখ মানুষকে বিনামূল্যে ঘর নির্মাণ করে দিয়ে পুনর্বাসন করা হয়েছে। তাদের জীবন-জীবিকা নির্বাহের জন্য প্রশিক্ষণ ও নগদ অর্থ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। আমরা ২ কোটি ৫৩ লাখ ছাত্র-ছাত্রীকে বিভিন্ন বৃত্তি ও উপবৃত্তি দিচ্ছি। মাধ্যমিক পর্যন্ত সকল শিক্ষার্থীকে প্রতিবছর বিনামূল্যে বই দেওয়া হচ্ছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *