মাথাব্যথা মানেই কি ব্রেইন টিউমার?

স্বাস্থ্য

জুন ১০, ২০২২ ১১:২৮ পূর্বাহ্ণ

আমাদের শরীরের সমস্যাগুলোর মধ্যে অতিপরিচিত ও সাধারণ একটি সমস্যা হল মাথাব্যথা। তবে সব মাথাব্যথা কিন্তু সাধারণ নয়। যেমন মাইগ্রেন। মাথার একদিকে অসহ্য যন্ত্রণাদায়ক অভিজ্ঞতাকে মাইগ্রেন বলে থাকে। সব মাথাব্যথা আবার মাইগ্রেন নয়। দৃষ্টিস্বল্পতা, মস্তিষ্কের টিউমার, মাথায় অন্য কোনো সমস্যার কারণেও মাথাব্যথা হতে পারে। তবে এই মাথাব্যথা যদি নিয়মিত হতে থাকে তাহলে সতর্ক হতে হবে। কেননা, কোন কোন ক্ষেত্রে নিয়মিত মাথাব্যথা ব্রেইন টিউমারের প্রাথমিক উপসর্গ হিসেবে ধরা হয়।

তবে শুধু মাথাব্যথাই ব্রেইন টিউমারের প্রাথমিক উপসর্গ নয়। সঙ্গে যদি বমি হওয়া। চোখে ঝাপসা দেখা। মুখের স্বাদ চলে যাওয়া। কাঁপুনি দেওয়া। হাতের বা শরীরের একদিক অবশ হয়ে যাওয়া। ভারসাম্য রক্ষা করতে না পারা। চলতে গিয়ে পড়ে যাওয়া। ব্যক্তিত্বে বদল আসা, অজ্ঞান হয়ে যাওয়া, ভুলে যাওয়া ও আচমকা ব্ল্যাক আউটের মতো সমস্যা দেখা দেয় তাহলেই ব্রেইন টিউমার হিসেবে ধরণা করা হয়।

তাই সব মাথাব্যথা মানেই যেমন ব্রেইন টিউমার নয়, তেমনি নিয়মিত মাথাব্যথা হলে যে ব্রেইন টিউমার হতে পারে সে বিষয়েও সতর্ক থাকতে হবে। আর এ জন্য ব্রেইন টিউমার সম্পর্কে সতর্ক থেকে সে বিষয়ে জনমানুষের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধিতে আজ (৮ জুন) পালিত হচ্ছে বিশ্ব ব্রেইন টিউমার দিবস।

২০০০ সাল থেকে বিশ্বব্যাপী দিবসটি পালন করা হচ্ছে। ১৯৯৮ সালে গঠিত জার্মান ব্রেইন টিউমার অ্যাসোসিয়েশন নামের দাতব্য সংস্থার উদ্যোগে এ দিন দিবসটি পালিত হয়।

আমাদের শরীরকে নিয়ন্ত্রণ করে মস্তিষ্ক বা ব্রেইন। তাই ব্রেইনের কোনো সমস্যা দেখা দিলেই আমরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ি। তার মধ্যে ব্রেইন টিউমার অন্যতম। কেননা, এই রোগের সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা না হলে জীবননাশও হতে পারে। এ টিউমার শুধু মস্তিষ্কেও হতে পারে আবার শরীরের অন্য অংশে তৈরি হয়ে মস্তিষ্কে ছড়াতে পারে।

সাধারণত কিছু অস্বাভাবিক কোষ অনিয়ন্ত্রিতভাবে বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হয়ে যদি মস্তিষ্কে চাকার সৃষ্টি করে, তাকে ব্রেইন টিউমার বলে। দুই ধরনের টিউমার আছে। বেনাইন টিউমার। যা ধীরে ধীরে বাড়ে এবং মস্তিষ্কের অন্যত্র ছড়ায় না। তবে টিউমারের আকৃতি বড় হলে টিউমারের চাপে মস্তিষ্কে সমস্যা হতে পারে। এ ক্ষেত্রে জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজন হয়।

আরেক ধরনের টিউমার, যা ক্যানসার হিসেবে গণ্য হয়, যা দ্রুতই মস্তিষ্কের অন্যান্য জায়গায় ছড়িয়ে পড়ে। সঠিক সময়ে রোগনির্ণয় ও চিকিৎসা দেওয়া হলে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এই টিউমার নিরাময় হয়। অন্যথায় রোগী মারাও যেতে পারে।

ব্রেইন টিউমারের চিকিৎসা নির্ভর করে টিউমারের আকার, ধরন, রোগীর বয়স ও শারীরিক অবস্থার ওপর। সাধারণত অস্ত্রোপচার, রেডিওথেরাপি, কেমোথেরাপি, কখনো ইমিউনোথেরাপির মাধ্যমে চিকিৎসা দেওয়া হয়।

সুস্থ-স্বাভাবিক জীবনযাপন, স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া ও নিয়মিত শরীরচর্চা করে ব্রেইন টিউমার ঠেকানো যায়। তাছাড়া যে কোনো সমস্যায় অবশ্যই বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত।

সূত্র: এবিপি আনন্দ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *