ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় স্বামীর পরক্রিয়ার জেরে স্ত্রী আত্মহত্যা

দেশজুড়ে

এপ্রিল ৯, ২০২৩ ৩:৫৮ অপরাহ্ণ

মোঃ আব্দুল হান্নান

ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় তিন সন্তানের জননীর আত্মহত্যার প্ররোচনা ও সহায়তার অপরাধে স্বামী সাদ্দাম হোসেন (৩২) সহ ৫ জনকে আসামি করে মামলা দায়ের করা হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে ব্রাহ্মণবাড়িয়া’র সুহিলপুর (নোয়াজের বাড়ি) এলাকায়। মামলা সূত্রে জানা যায়, গত ৫ এপ্রিল বিকাল আনুমানিক সাড়ে পাঁচ ঘটিকার সময় আবু তালেব’র মেয়ে মাসু বেগম (২৭) স্বামীর সাথে কথা কাটাকাটি করে ঘরে থাকা বার্নিশের (তারফিন) বিষ খেয়ে ফেলে। পরে তাকে উদ্ধার করে পরিবারের লোকজন জেলা সদর হাসপাতালে নিয়ে যায়। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মাসু বেগম মারা যায়। পরে নিহতের পিতা আবু তালেব (৭১) বাদী হয়ে স্বামী সাদ্দাম হোসেন(৩২), সাচ্চু মিয়া(৪৫),শারফিন মিয়া(৪২), ফাতেমা বেগম (৪০),সালমা বেগম সহ ৫ জনকে আসামি করে গত ৭ এপ্রিল সদর থানায় মামলা দায়ের করেন।

নিহতের বাবা আবু তালেব মিয়া অভিযোগ করে বলেন, ১৪/১৫ বছর আগে সাদ্দাম হোসেনের সাথে আমার মেয়ে মাসু বেগমের বিয়ে হয় সামাজিক ভাবে। বিয়ের পর মেয়ের ঘরে ৩ ছেলের জন্ম হয়। বড় ছেলে রাহাদ (১০), মেজো ছেলে রায়হান (৮) ও ছোট ছেলে আরিয়ান আড়াই বছর। বিয়ের পর থেকে আমার মেয়েকে ছোট খাটো বিষয় নিয়ে প্রায়ই মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করতো। কয়েক বছর আগে সাদ্দাম গোপনে আরেকটি বিয়ে করে বিদেশে চলে যায়। ঠিক ভাবে পরিবারের ভরনপোষণ করতো না সাদ্দাম। আমার মেয়ে তার ব্যবহারের দের ভরি স্বর্ণ বন্ধক রেখে ৭৫ হাজার টাকা আনে। পরে বিদেশ থেকে আসার পরে আমার মেয়েকে সাদ্দাম হোসেন শারিরীক ও মানসিক ভাবে নির্যাতন করতে থাকে স্বর্নের জন্য। আমি পরে টাকা দিয়ে স্বর্ন গয়না ছুটাইয়া দেই। তখন সাদ্দাম তার দ্বিতীয় স্ত্রীকে স্বর্ণ গয়না গুলো দিয়ে প্রায়ই ভিডিও কল দিয়ে কথা বলে। এনিয়ে তাদের মধ্যে অনেক ঝগড়া হইছে, কোন মেয়েই চায়না তার স্বামী অন্য মেয়ের সাথে মিশুক। আমার মেয়েরে মাইরা ফালাইছে আমি এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

নিহত মাসু বেগম’র দ্বিতীয় ছেলে রায়হান (৮) স্থানীয় মাদ্রাসার নূরানী বিভাগের ছাত্র বলেন, আমার মারে প্রায়ই আমার বাবা বকাবকি ও মারধোর করতো।

নিহতের ভাই ইয়ার হোসেন বলেন, আমার বোনকে তারা মাইরা ফেলছে। আমরা থানায় মামলা দায়ের করলে সাদ্দাম হোসেনের বাড়ির মালামাল সরিয়ে ফেলেছে। সাবেক ইউপি সদস্য হাবিব মিয়া বলেন, আমি চাই এই ঘটনার বিচার হউক, মেয়েটাকে নিয়ে দরবার হইছে আমি শুনছি, আমি চাই এইটার সুষ্ঠু বিচার হউক। কম কষ্টে মেয়েটা তিনটা বাচ্চা রাইখা আত্মহত্যা করেছে না।
সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ এমরানুল ইসলাম বলেন, নিহতের ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে, তদন্ত শেষে বিস্তারিত জানা যাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *