বর্ষায় দেশে ঘুরে বেড়ানোর ৫ জায়গা

বর্ষায় দেশে ঘুরে বেড়ানোর ৫ জায়গা

লাইফস্টাইল স্পেশাল

জুন ১৬, ২০২৩ ১১:৫৬ পূর্বাহ্ণ

একটা সময় শীতকাল ছাড়া অন্য কোনো মৌসুমে মানুষ বেড়াতে যেত না। কিন্তু দিন বদলেছে, কী শীত, কী বর্ষা—ছুটি পেলেই দে ছুট। কারণ বাংলার রূপ যে বর্ষাতেই সবচেয়ে সুন্দর, সে বন্দনা আছে শত লেখকের গল্প, কবিতায়।

যারা এই বর্ষায় ঘুরতে চান তাদের জন্য কয়েকটি উপযুক্ত জায়গার সন্ধান দেওয়া হল-

বেলাই বিল, গাজীপুর

রূপ-সৌন্দর্যে প্রতিটি মৌসুমেই অনন্য বেলাই বিল। তবে ভরা বর্ষায় এটি ঘুরে পর্যটকদের মুগ্ধতার মাত্রা হয়ে যায় টইটম্বুর। গাজীপুরের বাড়িয়া, ব্রাহ্মণগাঁও, বক্তারপুর ও বামচিনি মৌজা গ্রামঘেরা বেলাই বিল। বর্ষা মৌসুমে ছেলেরা বিলের চারপাশে ডাঙ্গি খনন করে। এখানে ধরা হয় মাছ। সব মিলিয়ে ভ্রমণপিপাসুদের দারুণ ভাবে আকর্ষণ করে বেলাই বিল । ভরা বর্ষায় বেলাই বিলে অনাবিল আনন্দের ছোঁয়া পেতে দেশের যেকোনো জায়গা থেকে চলে যান গাজীপুর বাসস্ট্যান্ড। সেখান থেকে রিকশা বা টেম্পোতে কানাইয়া ঘাট। তারপর নৌকা ভাড়া নিয়ে ঘুরুন!

কীর্তনখোলা, বরিশাল

কীর্তনখোলা, বরিশাল

কীর্তনখোলা, বরিশাল

চাঁদপুর থেকে পাড়ি দিয়ে যত সামনে বাড়তে থাকবেন, যে নদী আপনাকে বরণ করার জন্য অপেক্ষা করছে সেটা হচ্ছে কীর্তনখোলা নদী। নদীটির আগের রূপ না থাকলেও এখনো শত শত নদী প্রেমিক পর্যটক কীর্তনখোলায় নৌভ্রমণে বেরিয়ে পড়েন। যদি মনে করেন ট্রলারে সারা দিন ঘুরে বেড়াবেন তাহলে দিনব্যাপী একটি ট্রলারের সঙ্গে চুক্তি করে নিতে পারেন। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কীর্তনখোলা নদী ভ্রমণ করতে গিয়ে বরিশালের সৌন্দর্য উপভোগ করতে থাকবেন। আর কেন বরিশালকে ধান, নদী, খাল এই তিনে বরিশাল বলা হতো, তা পুরোপুরি উপলব্ধি করতে পারবেন সহজেই।

রাতারগুল, সিলেট

রাতারগুল দেশের একমাত্র মিঠা পানির জলাবন। রাতারগুলের মূল সৌন্দর্য দেখতে হলে যেতে হবে বর্ষায়। এই বনে আছে নানান প্রজাতির পাখি। এসবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল— মাছরাঙা, বিভিন্ন প্রজাতির বক, ঘুঘু, ফিঙে, বালিহাঁস, পানকৌড়ি ইত্যাদি। বন্যপ্রাণীর মধ্যে আছে— বানর, উদবিড়াল, কাঠবিড়ালি, মেছোবাঘ ইত্যাদি। বিভিন্ন প্রজাতির গুঁইসাপ ও বিভিন্ন ধরনের সাপের অভয়াশ্রম এই বন। সিলেট শহর থেকে বিভিন্ন পথে রাতারগুল যাওয়া সম্ভব। রাতারগুলের সবচেয়ে সহজ আর সুন্দর পথটি হল— সিলেট শহরের পাশেই খাদিম চা বাগান আর খাদিমনগর জাতীয় উদ্যানের ভেতর দিয়ে। খুব অল্প সময়েই এই পথ ধরেই রাতারগুল পৌঁছানো সম্ভব।

রাতারগুল, সিলেট

রাতারগুল, সিলেট

টাঙ্গুয়ার হাওর, সুনামগঞ্জ

প্রকৃতির নির্মল রসায়নের এক অপরূপ আনন্দধারার দেখা পাবেন যদি এই বর্ষায় আপনি হাওর ভ্রমণে যান। কখনো খানিক রোদ, আবার মুষলধারায় বর্ষণ— এ যেন চলতে থাকে কাব্যিক ছন্দে। আর বর্ষার এই অনবদ্য রূপ দেখতে হলে আপনাকে যেতে হবে সুনামগঞ্জে। টাঙ্গুয়ার হাওর প্রকৃতির অকৃপণ দানে সমৃদ্ধ। এ হাওর শুধু একটি জলমহাল বা মাছ প্রতিপালন, সংরক্ষণ ও আহরণেরই স্থান নয়, এটি মাদার ফিশারীও বটে। হিজল করচের দৃষ্টি নন্দন সারি এ হাওরকে করেছে মোহনীয়। সুনামগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড থেকে সাহেববাজার ঘাট পর্যন্ত রিকশায়। বর্ষাকালে শহরের সাহেব বাড়ি নৌকাঘাট থেকে ইঞ্জিন বোট বা স্পিড বোট যোগে সরাসরি টাঙ্গুয়া যাওয়া যায়।

নীলাচল, বান্দরবান

যারা পাহাড় ভালোবাসেন এই বর্ষায় তারা ঘুরে আসতে পারেন নীলাচল থেকে। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১ হাজার ৬শ’ ফুট উঁচু এ পর্যটন কেন্দ্র। বর্ষায় এ জায়গা থেকে মেঘ ছোঁয়া যায়। এ পর্যটন কেন্দ্রে পর্যটকদের থাকার জন্য রিসোর্টও আছে। বান্দরবান শহর ছেড়ে চট্টগ্রামের পথে প্রায় তিন কিলোমিটার চলার পরেই হাতের বাঁ দিকে ছোট একটি সড়ক এঁকেবেঁকে চলে গেছে নীলাচলে। এ পথে প্রায় তিন কিলোমিটার পাহাড় বেয়ে তাই পৌঁছাতে হয়। মাঝে পথের দুই পাশে ছোট একটি পাড়ায় দেখা যাবে ক্ষুদ্র নৃ গোষ্ঠীর মানুষের বসবাসও।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *