নয় বছর যাবৎ অবৈধ সংযোগে চুরি করে গ্যাস ব্যবহার করলেও প্রশাসন নীরব

দেশজুড়ে

সেপ্টেম্বর ৫, ২০২৩ ১২:৩১ অপরাহ্ণ

স্টাফ রিপোর্টারঃ

ভ্রাম্যমান আদালতের অসংখ্য অভিযানের পরেও বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী কর্তৃক বাংলাদেশ গ্যাস আইনে মামলা রুজু না করায় দীর্ঘ নয় বছর যাববৎ প্রভাবশালী গ্যাস চোরাইকারবারীরা চুরি করে সংযোগ স্থাপন করে বিনা বিলে দাপটের সাথে পুরো পাড়ায় গ্যাস চালাচ্ছে।

২০১৪ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার সদর উপজেলার সুহিলপুর ইউনিয়নের হিন্দুপাড়া গ্রামের তারুমিয়া স্টোরের (পন্ডিতবাড়ি) নিকটস্থ গ্যাসের মেইন লাইন থেকে চোরাই গ্যাস সম্রাট শফিকুল মিয়ার নেত্রিত্বে রাতের আধাঁরে অবৈধভাবে গ্যাস সংযোগ নিয়ে যায় একই পাড়ার উচাবাড়ির সমগ্র পাড়ার আবাসিক এলাকায়। এর কিছু দিন পর বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কো: লি. এবং জেলাপ্রশাসনের ভ্রাম্যমান আদালত অভিযান চালিয়ে গ্যাস সংযোগ বিছিন্নকরণ করলেও তারা পুনরায় রাতের আধাঁরে জনসাধারণের চলাচলের রাস্তার মধ্যে ড্রেন সৃষ্টি করে রাস্তা বিনষ্ট করে পূর্বের মতো পুনরায় চোরাই গ্যাসের সংযোগ নেয়।

এভাবে তারা ২০১৪ সাল থেকে বর্তমান পর্যন্ত কিছু দিন পর পর বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কো: লি. এবং জেলাপ্রশাসনের ভ্রাম্যমান আদালতের সঙ্গে চোর-পুলিশ খেলা খেলে প্রায় ৮-৯ বার গ্যাসের পুন:সংযোগ দিয়ে নয় বছর যাবৎ কোন ধরণের গ্যাস বিল পরিশোধ না করে গ্যাস লাইন বিনষ্টকরণসহ সরকার বা কর্তৃপক্ষের বিপূল পরিমাণ রাজস্ব ফাঁকি দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ জ্বালানি সম্পদ অপচয় করে আসছে। তাদের গ্যাস পাইপ খুবই নিম্নমানের। এতে করে গ্যাসলাইন বিনষ্ট হওয়া, গ্যাসজনিত অগ্নিদূর্ঘটনাসহ জনসাধারণের রাস্তা বারবার ভেঙ্গে যাওয়ায় ভূক্তভোগী জনসাধারণের পক্ষ থেকে উপ-মহাব্যবস্থাপক(চলতি দায়িত্ব), বিক্রয় ডিপার্টমেন্ট (ব্রাহ্মণবাড়িয়া), বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন কো: লি. বরাবরে ১০ জুলাই, ২০২৩ তারিখে লিখিত অভিযোগ দায়ের করলে কর্তৃপক্ষ ১১ জুলাই,ভ্রাম্যমান অভিযান পরিচালনা করে অভিযোগের সত্যতা পায়। খবর পেয়ে শফিকুল মিয়া, গংরা পালিয়ে যায়। তখন গ্যাস কর্তৃপক্ষ প্রায় ১২-১৫ অবৈধ রাইজার কাটাসহ সংযোগ বিছিন্ন করে। পরে অপরাধীরা পুন:রায় অবৈধভাবে গ্যাস-রাইজার সংগ্রহ করে গ্যাস সংযোগ দেয়। খবর পেয়ে কর্তৃপক্ষ পুন:রায় ১১ জুলাইয়ের ভ্রাম্যমান অভিযানের প্রায় ১ সপ্তাহ পরে বাখরাবাদ গ্যাস ঘটনাস্থলে ভ্রাম্যমান আদালতের অভিযান পরিচিালনা করে অবৈধ গ্যাস পাইপ কেটে নিয়ে আসেনে। অত:পর অপরাধীরা সর্বশেষ ২৭তারিখ আনুমানিক বিকাল সাড়ে ৫ ঘটিকার সময় পূর্বের ন্যায় ড্রেন করে চোরাই গ্যাস লাইন স্থাপনের পায়তারা করে।

তখন ভূক্তভোগী জনসাধারণ এবং এলাকাবাসী বাধাঁ প্রদান করেন এবং কর্তৃপক্ষের রাজস্ব ফাকি না দিয়ে বৈধভাবে বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন এর অনুমোদনক্রমে গ্যাস সংযোগ নেয়ার অনুরোধ করেন। কিন্তু চোরে না শোনে ধর্মের কাহিনী তখন অপরাধীরা রেগে যায় এবং চোরাই গ্যাসের সম্রাট শফিকুল মিয়ার নেত্রিত্বে অপরাধীরা ভূক্তভোগীণকে দেশীয় অস্ত্রসহ হুমকি প্রদান করে বাধা প্রদানকারীর বাড়িঘর সমায়িক সময়ের জন্য দখল করে ফেলে।মারধর করার চেষ্টা করে এবং মৃত্যুর হুমকি দেয়। ফলে সেখানে আইনশৃঙখলা পরিস্থির মারাত্মক অবনতি হয়। যে কোন সময় দু-পক্ষের মধ্যে অনাকাঙ্খিত দাঙ্গা ও জানমালের ব্যাপক ক্ষয়-ক্ষতি হতে পারে। এ প্রেক্ষিতে ভুক্তভোগীণের পক্ষে নাসির মিয়া গ্যাস সম্রাট শফিকুল মিয়ার নেত্রিত্বাধীন অপরাধীদের বিরুদ্ধে বিজ্ঞ অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে পি- ১২৪৭/২৩ নং মোকদ্দমা এবং বিজ্ঞ ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মোকদ্দমা দায়ের করেন।

তাছাড়া বাংলাদেশ গ্যাস আইনে সরাসরি জনসাধরণের মোকদ্দমা করার সুযোগ না থাকায় ঘটনার স্থায়ী সমাধানের জন্য তথ্য-প্রমাণসহ ভোক্তভোগীরা উপ-মহাব্যবস্থাপক(চলতি দায়িত্ব), বিক্রয় ডিপার্টমেন্ট (ব্রাহ্মণবাড়িয়া),বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন বরাবর লিখিত অভিযোগ দাখিল করেন।

বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশ কো: লি: যদি ২০১৪ সালের শুরু থেকেই বাংলাদেশ গ্যাস আইনের মামলা দায়ের করে অপরাধীদের আইনের আওতায় আনতো তাহলে অপরাধীরা দীর্ঘ নয় বছর যাবৎ চোরাই গ্যাস ব্যবহার করে কর্তৃপক্ষের বিপুল পরিমান গ্যাস সম্পদ বিনষ্ট করতে পারতো না এবং কর্তৃপক্ষ নয় বছর যাবৎ পুরো এলাকার গ্যাস বিলের রাজস্ব হাড়াতো না। গ্যাস ও গ্যাস লাইন হল বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন লি: এর নিজস্ব সম্পদ। তাদের রয়েছে নিজস্ব আইন সেল। তাদের রয়েছে বাংলাদেশ গ্যাস আইনে মামলা দায়ের করণের মাধ্যমে অপরাধীদের আইনের আওতায় এনে জেল-জরিমানাসহ সার্টিফিকেট মোকদ্দরুজু করে দীর্ঘ নয় বছর যাবৎ পুরো পাড়ায় গ্যাস ব্যবহারে বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আদায়ের সুযোগ। তারপরেও কেন অপরাধীদের বিরুদ্ধে গ্যাস আইনে মামলা দায়ের হচ্ছে না তা জনসাধারনের অজানা।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া বাখরাবাদ গ্যাস ডিস্ট্রিভিশন কোম্পানীর উপ মহাব্যবস্থাপক প্রকৌশলী মোঃ আক্তারুজ্জামানের মুঠোফোনে এ বিষয়ে জানতে চেয়ে একাধিকবার যোগাযোগের করার চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেনি।

 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *