ইসরায়েলি গণহত্যা: ফিলিস্তিনে নিহত বেড়ে ৩৫ হাজার

ইসরায়েলি গণহত্যা: ফিলিস্তিনে নিহত বেড়ে ৩৫ হাজার

আন্তর্জাতিক

মে ১০, ২০২৪ ৯:০১ পূর্বাহ্ণ

ফিলিস্তিনের অবরুদ্ধ গাজা উপত্যকায় প্রতিদিনই চলছে ইসরায়েলি বাহিনীর নির্মম গণহত্যা। এর ফলে উপত্যকাটিতে বর্তমানে নিহতের সংখ্যা বেড়ে প্রায় ৩৫ হাজার জনে দাঁড়িয়েছে।

বৃহস্পতিবার (৯ মে) এক বিবৃতিতে গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সেখানে ইসরায়েলি হামলায় এখন পর্যন্ত ৩৪ হাজার ৯০৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। এছাড়া আহত হয়েছে আরো ৭৮ হাজার ৫১৪ জন।

অবরুদ্ধ এই উপত্যকার এমন কোনো স্থান বাকি নেই যেখানে ইসরায়েল হামলা চালায়নি। এবার রাফাহ শহরের দিকে অগ্রসর হচ্ছে ইসরায়েলি সৈন্যরা। এরইমধ্যে রাফাহ ক্রসিং নিয়ন্ত্রণে নিয়েছে ইসরায়েল।

এদিকে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন বলেছেন, তিনি ইসরায়েলকে আক্রমণাত্মক অস্ত্র সরবরাহ করবেন না। ইসরায়েল রাফাহতে সর্বাত্মক আক্রমণ চালাতে এসব অস্ত্র ব্যবহার করতে পারে এমন আশঙ্কা থেকেই এ সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।

আতঙ্কিত, ক্লান্ত এবং একই সঙ্গে বাস্তুচ্যুত লাখ লাখ ফিলিস্তিনি তাদের জিনিসপত্র গুছিয়ে রাফাহ থেকে পালাতে শুরু করেছে। ইসরায়েল সেখানে হামলার ঘোষণা দেওয়ার পর থেকেই এসব নিরীহ মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে।

যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা জেক সুলিভান বলেছেন, হামাস এবং ইসরায়েল যুদ্ধবিরতির থেকে খুব বেশি দূরে নয় এবং একটি চুক্তিতে পৌঁছানোর জন্য যা করতে হবে তাদের তাই করা উচিত।

রাফাহতে যেন পূর্ণ মাত্রায় আক্রমণ না চালানো হয় সেজন্য ইসরায়েলকে শাসিয়েছেন প্রেসিডেন্ট বাইডেন।

বুধবার (৮ মে) এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, ইসরায়েল যদি দক্ষিণ গাজার রাফাহ শহরে আক্রমণ চালায় তবে তিনি তাদের অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করে দেবেন। হামাসের সঙ্গে সংঘাত চলাকালীন প্রথমবারের মতো এটাই ইসরায়েলের প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের সতর্কবার্তা।

সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে মার্কিন বোমা নিক্ষেপের ফলে বেসামরিক মানুষ নিহত হওয়ার ঘটনারও নিন্দা জানিয়েছেন বাইডেন।

রাফাহ শহরে ইসরায়েল বড় ধরনের হামলা চালাতে প্রস্তুত এমন উদ্বেগ থেকে গত সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র ইসরায়েলে বোমার একটি চালান বন্ধ করার পরেই নতুন করে সতর্কবার্তা দেওয়া হলো।

ইসরায়েলকে হুঁশিয়ারি দিয়ে বাইডেন বলেন, যদি তারা রাফাহয় হামলা চালায় তবে আমি তাদের অস্ত্র সরবরাহ করবো না। রাফাহতে হামলা চালানোর জন্য যেসব অস্ত্র এবং কামানের গোলা ব্যবহার করা হয়েছে তা সরবরাহ করব না।

ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু সম্প্রতি স্পষ্ট করে দিয়েছেন যে, তিনি রাফাহতে আক্রমণ করবেন। ব্যক্তিগতভাবে বেশ কয়েকজন মার্কিন কর্মকর্তা জানিয়েছেন, প্রেসিডেন্ট বাইডেন এ বিষয়ে ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে একমত নন। তিনি রাফাহতে হামলা চালানোর পক্ষপাতি নন।

ইসরায়েলকে অস্ত্র সরবরাহ কমিয়ে দেওয়ার বিষয়ে প্রশাসন এবং নিজ দলের মধ্যেও বাইডেনের ওপর চাপ বাড়ছে। সে কারণেই গত সপ্তাহে অস্ত্রের এক চালান ইসরায়েলে পাঠানো হয়নি।

এ বিষয়ে মার্কিন প্রশাসনের এক শীর্ষ কর্মকর্তার বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) জানায়, বোমার একটি চালান ইসরায়েলে পাঠানো হয়নি। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এই কর্মকর্তা বলেন, গত সপ্তাহে ওই চালানটি না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল।

উল্লেখ্য, বহু দশক ধরে সাধারণ ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর ইসরায়েলি বাহিনীর চালানো নির্যাতন, নিপীড়ন, গণহত্যা, মানবাধিকার লঙ্ঘন ও জোরপূর্বক ভূমি দখলের প্রতিবাদে গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের ইরেজ সীমান্তে প্রবেশ করে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। এরপরেই গাজায় নতুন করে আক্রমণ শুরু করে ইসরায়েল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *