ভাইয়া আসসালামু আলাইকুম

‘জীবনে যা কিছু হোক – সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো মধ্যপন্হা’

স্পেশাল স্বাস্থ্য

নভেম্বর ২০, ২০২৩ ১:৪৯ অপরাহ্ণ

গত ২৯ অক্টোবর ২০২১ সালে ব্যাঙ্গালোরের জনপ্রিয়  অভিনেতা, সঙ্গীত শিল্পী এবং টেলিভিশন প্রেজেন্টার পুনীথ রাজকুমার মাত্র ৪৬ বছর বয়সে মারা যাবার পর প্রখ্যাত কার্ডিওলজিস্ট ডা. দেবী শেঠি ( Dr. Devi Shetty) একটি সবিস্তার বিবৃতি দিয়েছিলেন। নীচে তারই একটি কাছাকাছি বাংলা ভাবানুবাদ তুলে ধরা হলো-

‘গত কয়েক বছরে আমার ৮/৯ জন প্রিয় পরিচিত জন এবং কিছু সেলিব্রেটিকে চিরতরে হারিয়েছি। তারা চল্লিশের ঘরে ছিলেন এবং ‘শারীরিকভাবে ফিট’ থাকার অতিরিক্ত চেষ্টার কারণে মারা গেছেন’।

দুর্ভাগ্য হলো- তারা শুধু দেখতেই ছিলেন সুঠাম , সিক্স প্যাক বা এরকম।  পুনীথও সে তালিকায় যুক্ত হলেন।

জীবনে যা কিছু হোক – সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো মধ্যপন্হা। ‘জিরো ফিগার’ বা একশোর বাড়াবাড়ি কোনোটাই ঠিক না।

প্রতিদিন মাঝারি পরিমান ব্যায়াম দরকার- ২০ মিনিট মতো। সবকিছুই খেতে হবে, কোনো বিষাক্ততা অপসারণের দরকার নেই (no detoxification), কোনো কিটো মটো ডায়েট দরকার নেই, আপনার পূর্বসূরীরা যা খেতেন, সব খান, আপনার শহরে পাওয়া যায় এমন সব স্থানীয় এবং মৌসুমি খাবার – তবে অল্প পরিমানে। বিদেশি কিউই ফল, ক্যাল বা জলপাই তেলের দরকার নেই। ৭ ঘন্টার নিবিড় ঘুম চাই, শরীরের চাহিদা পূরণ প্রয়োজন তবে সেটা স্টেরয়েড বা ক্ষমতাবর্ধক ড্রাগের মাধ্যমে হওয়া চলবে না।

বেড়ে ওঠার সময় যা খেয়েছেন, সবই খান, তবে অল্প পরিমাণে; বিশ/তিরিশ মিনিট হালকা ব্যায়াম করুন আর একটু হাঁটুন নিয়মমত আর সাপ্লিমেন্ট খাওয়া বাদ দিন।

আপনারা কি বুঝতে পারছেন আমার বার্তা?
কিছুই না, শুধু মধ্যপন্হা।

দিনে কিছু সময়ের নীরব ধ্যান যোগ করুন রুটিনে।  (মুসলমানদের জন্য নামাজ পড়ার মধ্য দিয়ে এই কাজটি চমৎকার ভাবে হয়ে যায়)!

একটা খুব জরুরি হলো  – শরীরকে শোনা আর গুরুত্ব দেওয়া।

৪০ এর পর বেশ কিছু শারীরবৃত্তীয় পরিবর্তন শুরু হয়, ৫০ এর পর আরো বেশি, ৬০ এর পর শরীর শিথিল হতে থাকে, ৭০ এর পর বন্ধ হতে থাকে, ৮০ এর পর প্রতিটি বছর হলো বোনাস। তাই ৬০ মানে নতুন করে ৪০ বা বয়স হলো শুধুই একটি সংখ্যা – এসব কথা বলা বন্ধ করুন। এগুলো ঠিক কথা নয়। ৪০ বা ৫০ পরবর্তী সময়ে আপনার স্বাস্থ্য অটুট থাকলে কৃতজ্ঞতা অনুভব করুন, কিন্ত কাজের গতি একটু কমান যাতে হৃৎপিন্ডের গতি বহাল থাকে।

দয়া করে বোঝার চেষ্টা করুন – অবসরের সময় নির্ধারণের যৌক্তিক কারণ আছে। একসময় আপনার শরীর আর মন যে চাপ বইতে পারতো এখন আর ততটা পারবে না। বাহ্যত চমৎকার আছেন, ধন্যবাদ আপনার ‘জিন’-কে (genes), কিন্ত অঙ্গপ্রত্যঙ্গের (organs ) অভ্যন্তরীণ ক্ষয় তো হচ্ছেই।

‘সুখী সুন্দর হোন, বাহ্যিক ভাবে নয়, অন্তর্গত ভাবেও’।

ফুটনোট ১- সারকথা হলো ৬টি নির্দেশনা

> ২০ মিনিট হালকা ব্যায়াম
> নিয়মিত নিয়ম মত হাঁটা
> সাত ঘন্টা নিবিড় ঘুম
> কিছু সময় একাকী ধ্যান
> সব খাবারই খাওয়া – কম পরিমানে
> শরীরের কথা শোনা ও সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া।

ফুটনোট ২- কোনো তত্ত্বই সর্বজনীন না, যারা একমত নন, সেটা তাদের অধিকার – সম্মান করি তাদের মত।

Be Happy internally and not externally.

মূল রচনা- Prof. Dr. Devi Shetty.

সূত্র: সামাজিক মাধ্যম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *