ছাগলের উল থেকে যেভাবে তৈরি হয় পশমিনা চাদর

ছাগলের উল থেকে যেভাবে তৈরি হয় পশমিনা চাদর

ফিচার স্পেশাল

জানুয়ারি ১০, ২০২৩ ১০:৪১ পূর্বাহ্ণ

পশমিনা হচ্ছে কাশ্মিরী উল থেকে প্রস্তুত এক ধরনের চাদর। সর্বপ্রথম ভারতের কাশ্মিরে এই পোশাক তৈরি শুরু হয়। পশমিনা শব্দটি ফারসি শব্দ পাসমিনা থেকে এসেছে যার অর্থ উল থেকে প্রস্তুত এবং কাশ্মিরী ভাষায় এটাকে বলা হয় নরম সোনা।

কাশ্মিরী জাতের ছাগল থেকে এই উল সংগ্রহ করা হয়। এই জাতের ছাগলের বিভিন্ন প্রজাতি রয়েছে। কাশ্মির অঞ্চলের চ্যাংথাং প্লাতু’র চ্যাংথাই ছাগল, কারগিল এলাকার মারলা এবং উত্তর ভারতের হিমাচল প্রদেশের চেঙ্গু ছাগল ও নেপালের ছায়াঙ্গারা ছাগল থেকে পশমিনা উল সংগ্রহ করা হয়। কাশ্মির এবং নেপালে হস্তচালিত তাঁতে পশমিনা শাল তৈরি করা হয়।

হিমালয় অঞ্চলে হাতে তৈরি শাল ব্যবহৃত হয় যা পশম বা পশমিনা নামে পরিচিত। তৃতীয় খ্রিস্টপূর্বাব্দে এবং ১১ শতকে লিখিত আফগান পুঁথিতে কাশ্মিরে উলের শাল তৈরির কথা উল্লেখ আছে। তবে ১৫ শতকে ঐতিহাসিক পশমিনা শিল্পের ভিত্তি স্থাপন করেন কাশ্মিরী শাসক জয়নুল আবিদিন, তিনি মধ্য এশিয়া থেকে তাঁতিদের নিয়ে আসেন এবং এখনো তার মাজারে পোশাক নির্মাতারা শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।

পশমিনা

পশমিনা

হাজার বছর ধরে নেপালে এবং কাশ্মিরে কাশ্মিরী শাল তৈরি হয়ে আসছে। পাহাড়ি ছাগল থেকে পশমিনা এবং কাশ্মিরী উল সংগ্রহ করা হয়। পশমিনা সুতা কাশ্মিরী সুতার চেয়ে সরু। তাই পশমিনার সাহায্যে খুবই হালকা পোশাক তৈরি করা সম্ভব।

পশমিনা ছাগলকে কাশ্মিরী ভাষায় বলা হয় চ্যাংথাই। শীতের শেষে বসন্তে পশম সংগ্রহ করা হয়। একটি ছাগল থেকে আনুমানিক ৮০-১৭০ গ্রাম উল পাওয়া যায়। গ্রীষ্মকালে ছাগলগুলো খালি চামড়ায় বেঁচে থাকতে সক্ষম। শীতে আবার এদের শরীরে পশম গজায়। চিরুনির মাধ্যমে এই উল সংগ্রহ করা হয়। পশমিনা ছাগল শুধু ঘাস নয়, ঘাসে শিকড় পর্যন্ত খেয়ে ফেলে। লাদাখ অঞ্চলে ঐতিহ্যবাহী পশমিনা উল প্রস্তুত করে চ্যাংপা নামের এক সম্প্রদায়।

তারা নোমাডিক জনগোষ্ঠীর লোক এবং কাশ্মিরের চ্যাংথ্যাং প্লাতুতে বসবাস করে যা সমুদ্র পৃষ্ঠ থেকে ১৩ হাজার ৫শত ফুট উচ্চতায় অবস্থিত। শীতকালে এই অঞ্চলের তাপমাত্রা -৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে যায়। চ্যাংপা জনগোষ্ঠী এই উচ্চতায় বসবাস করে এবং মাংসের জন্য ভেড়া ও উলের জন্য পশমিনা ছাগল পালন করে।

লাদাখ থেকে রফতানি হওয়া পশমিনার সঠিক হিসাব বের করা কষ্টসাধ্য কারণ প্রতিবছর পার্শ্ববর্তী দেশসমূহে পশমিনা বিভিন্ন ভাবে রফতানি করা হয়।

সূত্র: উইকিপিডিয়া

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *