আল এমরান
আজ ২০ (আগস্ট) জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তান মুক্তিযুদ্ধের বীর সেনানী অকুতোভয়, বিমান বাহিনীর মূর্ত প্রতীক বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের ৫১তম শাহাদাত বার্ষিকী।
১৯৭১ সালে মহান স্বাধীনতার সংগ্রামে পাকিস্তানি বিমানঘাঁটি দিয়ে বাংলার আকাশকে শত্রু মুক্ত করতে যুদ্ধ বিমান নিয়ে বাঙ্গালীর স্বাধিকার আন্দোলনে অংশগ্রহনে আসার পথে পাকিস্তানের থাট্টায় বিমান বিধ্বস্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন।
যথাযথ মর্যাদার দিবসটি পালন করছেন বাংলাদেশ বিমান বাহিনী। আজ সকালে মিরপুরে শহীদ বুদ্ধিজীবি কবরস্থানে বিনম্র শ্রদ্ধাবনত চিত্তে তাকে স্মরণ করেন বিমান বাহিনীর কর্মকর্তা ও অন্যান্য বিমান সদস্যরা। এছাড়াও বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমানের বিদেহী আত্নার মাগফেরাত কামনায় দোয়া ও মোনাজাত করা হয়েছে – এক বিজ্ঞপ্তিতে আন্তঃ বাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) এ তথ্য জানিয়েছেন।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন তিনি করাচিতে ছিলেন। ২০ (আগস্ট) ১৯৭১ সালে তিনি শিক্ষানবিশ পাইলটকে ক্লোরোফর্ম দিয়ে অবচেতন করে জঙ্গি বিমান নিয়ে দেশে ফেরার চেষ্টা করেন তিনি। বিমানটি প্রায় ভারত সীমান্তের কাছাকাছি পৌঁছে যাওয়ার আগ মূহুর্তে পাকিস্তানি শিক্ষানবিশ পাইলট রাশেদ জ্ঞান ফিরে পাওয়ায় তার সাথে মতিউরের ধস্তাধস্তির এক পর্যায়ে বিমানটির ইজেক্ট সুইচ চাপলে মতিউর বিমান থেকে ছিটকে পড়ে যায়। কম উচ্চতায় উড্ডয়ন করার সময় রাশেদসহ বিমানটি ভারতীয় সীমান্ত হতে মাত্র ৩৫ কিলোমিটার দূরে সিন্ধু প্রদেশে থাট্টা নামক এলাকার জিন্দা গ্রামে বিধ্বস্ত হয়।
তার মৃত্যুদেহ ঘটনাস্থল হতে প্রায় আধা মাইল দূরে পাওয়া যায়। তাকে পাকিস্তান করাচির মাসরুর বিমানঘাঁটির চতুর্থ শ্রেণীর কবরস্থানে দাফন করা হয়। ১৯৭৩ সালের ১৫ ডিসেম্বর বাংলাদেশ সরকার ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মতিউর রহমানের অসীম সাহসিকতা, দেশপ্রেম ও আত্মত্যাগের স্বীকৃতিস্বরূপ “বীরশ্রেষ্ঠ” খেতাবে ভূষিত করেন। ২০০৬ সালের ২৪ জুন রাষ্ট্র কুটনৈতিক তৎপরতার মাধ্যমে দীর্ঘ ৩৫ বছর পর তার মরদেহ বাংলার মাটিতে এনে ঢাকার মিরপুর শহীদ বুদ্ধিজীবি সমাধিক্ষেত্রে সমাহিত করা হয়।
বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান ১৯৬১ সালে পাকিস্তান বিমান বাহিনীতে যোগদান করেন। ১৯৬৩ সালে পাইলট অফিসার হিসেবে কমিশন লাভ করেন। ১৯৬৫ সালের পাক-ভারত যুদ্ধে তিনি ফ্লাইং অফিসার হিসেবে কর্মরত ছিলেন। ১৯৬৭ সালে তিনি একটি মিগ-১৯ বিমান চালানোর সময় আকাশে হঠাৎ বিকল হলে দক্ষতার সাথে প্যারাসুট যোগে মাটিতে অবতরণ করেন।
১৯৬৭ সালে তিনি ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট পদে পদোন্নতি লাভ করেন। ইরানের রানী ফারাহ দিবার সম্মানে পেশোয়ারে অনুষ্ঠিত বিমান মহড়ায় তিনিই ছিলেন একমাত্র বাঙ্গালী।