মুরাদ শাহ জাবাল, ঝিনাইগাতী (শেরপুর)
শেরপুরের ঝিনাইগাতীর সোমেশ্বরী নদীর বালু মহালে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনায় অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। এ অভিযোগ সোমেশ্বরী নদীর বালু মহালের ইজারাদার সুলতান আলমের। ইজারাদার সুলতান আলম জানান, ২০২২ সালে উপজেলার সোমেশ্বরী নদীর তাওয়াকোচা বালু মহাল এক বছর মেয়াদে ইজারা গ্রহণ করেন। তার অভিযোগ বালু মহালের সীমানা বিরোধের কারণে বালু উত্তোলন ও পরিবহনে বাধা সৃষ্টি করে। এ কারণে বালু মহালের ইজারাদার সুলতান আলম জেলা প্রশাসকসহ সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরে বালু উত্তোলন ও পরিবহনে সময়ের আবেদন করে ব্যর্থ হন। পরে তিনি হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন নং ৪২২০/২৩ দায়ের করেন।
উক্ত রিট পিটিশনের আলোকে বিচারক বালু মহালের উপর স্থিতাবস্থার আদেশ প্রদান পূর্বক জেলা প্রশাসক, শেরপুর’কে সমস্যা সমাধানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের নির্দেশ প্রদান করেন।
এ বিষয়ে আদালতের আদেশ বাস্তবায়নের জন্য বালু মহালের ইজারাদার সুলতান আলম গত ২৭ সেপ্টেম্বর শেরপুরের জেলা প্রশাসক, বরাবরে একটি আবেদন করেন। বর্ণিত বালু মহাল সংক্রান্তে হাইকোর্টের আদেশ পর্যালোচনা পূর্বক মতামত প্রদানের জন্য জেলা প্রশাসকের কার্যালয়, শেরপুর স্মারক নং- ৩১.৪৫.৮৯০০.০১০.১৬.০৭৩.১৭ (অংশ-১)-৯০১, তারিখ- ০৫/১১/২০২৩ খ্রিঃ মূলে বিজ্ঞ জিপি, শেরপুর বরাবর পত্র প্রেরণ করা হয়। বিজ্ঞ জিপি, শেরপুর স্মারক নং-জিপি/শের/২০২৩/২৬, তারিখ-১৩/১১/২০২৩ মূলে উক্ত আদেশ সংক্রান্তে জেলা প্রশাসক, শেরপুর বরাবর মতামত প্রদান করেন। স্থিতাবস্থা অর্থ আদেশের আগে যে যেই অবস্থায় ছিল সে সেই অবস্থায় থাকবে মর্মে জিপির মতামতে উল্লেখ করা হয়।
কিন্ত হাইকোর্টের নির্দেশ অমান্য করে ১৫ নভেম্বর তাওয়াকোচা বালু মহালে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করেন উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) আশরাফুল কবীর।
এ সময় ৯ হাজার ঘনফুট বালু জব্দ দেখিয়ে তাৎক্ষণিক জনৈক ব্যক্তির নিকট ১ লাখ ১২ হাজার টাকায় বিক্রি করে দেন।
নিয়ম অনুযায়ী জব্দকৃত বালু বিঞ্জপ্তি প্রকাশের মাধ্যমে নিলামে বিক্রি করার বিধান থাকলেও তা করা হয়নি।
বালু মহালের ইজারাদার সুলতান আলম বলেন আমার বৈধভাবে উত্তোলণকৃত বালু জব্দ দেখিয়ে তা বিক্রি করা হয়েছে। তিনি বলেন নতুন করে বালু উত্তোলনের কোন সরঞ্জামাদি ও জব্দ করা হয়নি। এ ছাড়া জব্দকৃত বালু পরিবহনের জন্য ১৫ দিন সময় দেয়া হয়েছে। তাওয়াকোচা গ্রামের ফরিজল, রাজু, সাহিদুরসহ আরো অনেকেই জানান উক্ত বালু অপসারণের জন্য ১৫ দিন সময় দেয়া হয়েছে। এতে ওই ব্যক্তি জব্দ কৃত বালু ক্রয়ের কাগজ দেখিয়ে তাওয়াকোচা বালু মহালের ইজারাদার সুলতান আলমের সংরক্ষণকৃত বালু লুটপাট চালিয়ে আসছে বলে অভিযোগ রয়েছে ।
এব্যাপারে উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভুমি) আশরাফুল কবীরের সাথে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে ভ্রাম্যমান আদালতে জব্দ কৃত বালু বিনা বিজ্ঞপ্তিতে তাৎক্ষণিক বিক্রি করা যায় কি’না জানতে চাওয়া হলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। তিনি বলেন, শতাধিক লোকের সম্মূখে জব্দকৃত বালু বিক্রি করা হয়েছে। তার নিকট জব্দকৃত বালু বিক্রির জন্য কত দিন সময় দেয়া হয়েছে, তা জানতে চাওয়া হলে তিনি সঠিক সময় বলেননি।
তিনি বলেন, ঐদিনসহ ৪ দিনের মতো হবে। তবে বালু ক্রেতা ব্যক্তি রাজনৈতিক অবরোধের কারণে বালু বিক্রি করতে না পেরে সময়ের আবেদন করলে আরও সময় বর্ধিত করা হবে। এ ব্যাপারে স্থানীয় বালু ব্যবসায়ীদের মধ্যে নানা প্রশ্নের উদগ্রেব হয়েছে। উল্লেখ্য ৯ হাজার ঘনফুট বালু বিক্রি করতে ১দিনের বেশী সময় লাগার কথা নয়। এক্ষেত্রে এত সময়ের কারণ কি? এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে বালু মহালের ইজারাদার সুলতান আলম শেরপুরের জেলা প্রশাসক বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।