যে হোটেলে রাত কাটালে এক দেশে মাথা অন্য দেশে পা থাকবে

যে হোটেলে রাত কাটালে এক দেশে মাথা অন্য দেশে পা থাকবে

ফিচার স্পেশাল

ফেব্রুয়ারি ৫, ২০২৩ ১১:৪১ পূর্বাহ্ণ

সারাবিশ্বে অনেক সীমান্ত এলাকা রয়েছে, যেখানে দুই দেশের মানুষ মিলেমিশে থাকেন। অনেক জায়গা রয়েছে, যেখানে মানুষ এক দেশে কাজে যান অন্য দেশে ঘুমোতে যান। ভারতেও রয়েছে এমন সীমান্ত গ্রাম, যেখানে রান্নাঘর এক দেশে এবং শোয়ার ঘর অন্য দেশে।

তবে একসঙ্গে দুই দেশে থাকতে পারবেন, এমন জায়গার খোঁজ কি আপনার কাছে রয়েছে? আমাদের কাছে রয়েছে। হ্যাঁ, এই বিশ্বে এমনও এক জায়গা রয়েছে যেখানে আপনি একসঙ্গে দুই দেশে রাত কাটাতে পারবেন। গুগল বলছে, এটা কোনো বিশেষ গ্রাম বা শহর নয়। এটা হলো হোটেল আরবেজ।

হোটেল আরবেজ

হোটেল আরবেজ

ইউরোপের ছোট একটা হোটেল আলোড়ন ফেলে দিয়েছে সারা বিশ্বে। হোটেল আরবেজ ফ্রাঙ্কো-সুইস, সংক্ষেপে L’Arbezie নামে ডাকেন স্থানীয়রা। এই হোটেল অতিথিদের শুধু থাকার জায়গা দেয় না, তাদের এমন অভিজ্ঞতা প্রদান করে, যা বিশ্বের অন্য কোনো জায়গায় পাওয়া যায় না। এই হোটেল আপনাকে একই সময় ভিন্ন দুইটি দেশে রাত কাটানোর সুযোগ দেয়।

হোটেলটি ফ্রান্স ও সুইজারল্যান্ডের আন্তর্জাতিক সীমান্তের ঠিক উপরে তৈরি। হোটেলের অর্ধেক অংশ ফ্রান্সে এবং বাকি অর্ধেক সুইজারল্যান্ডে। একটি ছোট পরিবার এই হোটেলটির পরিচালনার দায়িত্বে রয়েছে। তবে, এই হোটেলের পিছনে ১৮৬২ সালের ইতিহাস রয়েছে। ড্যাপেসের চুক্তির কারণে এই হোটেল তৈরি করা হয়।

ঐ চুক্তি অনুসারে, নিকটবর্তী রাস্তায় ফরাসি নিয়ন্ত্রণের জন্য একটি ছোট অঞ্চল অদলবদল করতে সম্মত হয়েছিল ফ্রান্স এবং সুইজারল্যান্ড। চুক্তি অনুসারে, ফ্রান্স-সুইজারল্যান্ড সীমান্তে যে কোনো ইমারতকে অক্ষত রাখার জন্য নিয়মও বলবৎ করা হয়েছিল। কিন্তু এই হোটেল আন্তঃসীমান্ত বাণিজ্যের জন্য নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছিল।

হোটেল আরবেজ

হোটেল আরবেজ

ফ্রান্স ও সুইজারল্যান্ড সীমান্তে অবস্থিত লা কিওর নামের একটি ছোট্ট গ্রামে অবস্থিত এই হোটেল আরবেজ। ১৯২১ সালে খোলা হয় হোটেল আরবেজ়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ও এই হোটেল বিশেষ ভূমিকা পালন করেছিল। জার্মানদের ফ্রান্স দখলের সময় হোটেলের সুইজারল্যান্ডের অংশে আশ্রয় নিয়েছিল ফরাসিরা। সেই সময় এই হোটেলের মালিক ছিলেন ম্যাক্স আরবেজ় ও তার স্ত্রী অ্যাঞ্জেল। যদিও এখন এই হোটেলের মালিক হলেন পন্থাস নামের একজন ফরাসি ভদ্রলোক।

হোটেলের ডান দিক হল সুইজারল্যান্ড এবং বাঁ দিন ফ্রান্স। ফ্রান্স ও সুইজারল্যান্ড সীমান্ত হোটেলের একটি ঘরের বিছানা এবং বাথরুমের মধ্য দিয়ে চলে গিয়েছে। ঐ নির্দিষ্ট ঘরে যদি কোনো ব্যক্তি ঘুমোতে যান, তাহলে তার সুইজারল্যান্ডে মাথা এবং ফ্র্যান্সে পা থাকবে। যদিও এই হোটেলের একটি ঘরের জানালা থেকে সীমান্তের পোস্ট দেখা যায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *