যুক্তরাষ্ট্রকে হুঁশিয়ার করল উত্তর কোরিয়া

যুক্তরাষ্ট্রকে হুঁশিয়ার করল উত্তর কোরিয়া

আন্তর্জাতিক

জুন ২৭, ২০২৩ ১১:৪৫ পূর্বাহ্ণ

যুক্তরাষ্ট্রকে পরমাণু যুদ্ধের হুঁশিয়ারি দিল উত্তর কোরিয়া। একই সঙ্গে দেশটির রাজধানী পিয়ংইয়ংয়ে রাষ্ট্রীয়ভাবে গণসমাবেশের আয়োজন করে যুক্তরাষ্ট্রকে ধ্বংস করার জন্য ‘প্রতিশোধের যুদ্ধের’ অঙ্গীকার করে স্লোগান দেওয়া হয়।

কোরীয় যুদ্ধ শুরুর ৭৩তম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে পিয়ংইয়ংয়ে গণসমাবেশের আয়োজন করে উত্তর কোরিয়া। একই দিনে আয়োজিত সিউলের যুদ্ধবার্ষিকী অনুষ্ঠানে শান্তি প্রতিষ্ঠায় উত্তর কোরিয়াকে ঐক্যের ডাক দেয় দক্ষিণ কোরিয়া। রয়টার্স, বিবিসি, এএফপি।

উত্তর কোরিয়ার রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম কোরিয়ান সেন্ট্রাল নিউজ এজেন্সির (কেসিএনএ) জানিয়েছে, রোববার পূর্ব এশিয়ার এই দেশটির রাজধানীজুড়ে অনুষ্ঠিত সমাবেশে প্রায় ১ লাখ ২০ হাজার শ্রমজীবী মানুষ এবং শিক্ষার্থী অংশ নেন।

রয়টার্স বলছে, রাষ্ট্রীয় মিডিয়ার প্রকাশিত ছবিগুলোতে পিয়ংইয়ংয়ের একটি স্টেডিয়ামে বিপুল সংখ্যক মানুষের ভিড় দেখা গেছে। সমাবেশে অংশ নেওয়া এসব মানুষের হাতে প্ল্যাকার্ডও ছিল। যাতে লেখা ছিল-‘যুক্তরাষ্ট্রের সমগ্র ভূখণ্ড আমাদের শুটিং রেঞ্জের (গোলার আওতার) মধ্যে এবং সাম্রাজ্যবাদী যুক্তরাষ্ট্র শান্তি ধ্বংসকারী।’

কেসিএনএ বলেছে, উত্তর কোরিয়ার কাছে এখন ‘মার্কিন সাম্রাজ্যবাদীদের শাস্তি দেওয়ার জন্য সবচেয়ে শক্তিশালী অস্ত্র’ এবং ‘এই ভূখণ্ডের মানুষ শত্রুদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেওয়ার অদম্য ইচ্ছা নিয়ে টগবগ করছে’। ওদিকে দক্ষিণ কোরিয়ার প্রধানমন্ত্রী হ্যান ডাক-সু এদিন সিউলে অনুষ্ঠিত অনুষ্ঠানে বলেন, ‘এখনো কোরিয়া যুদ্ধের বিভ্রম থেকে জেগে উঠতে পারেনি উত্তর কোরিয়া।

দেশটি ক্রমাগত ক্ষেপণাস্ত্র উৎক্ষেপণ ও পারমাণবিক পরীক্ষার চলমান হুমকি দিয়ে কোরিয়ান উপদ্বীপের শান্তি ও স্থিতিশীলতা নষ্ট করতে চাইছে। একই সঙ্গে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ধ্বংস করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছে। উত্তর কোরিয়ার মিথ্যা শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে প্রতারণামূলক উদ্দেশ্যের ওপর নির্ভর করে নয়, বরং শক্তিশালী আত্মরক্ষার মাধ্যমে সরকার আমাদের নিরাপত্তা রক্ষা করবে।’

৭৩ বছর আগে ১৯৫০ সালে কোরিয়া যুদ্ধ শুরু হয়। ওই সময়ে দক্ষিণ কোরিয়ার ওপর হঠাৎ করে সশস্ত্র আক্রমণ চালায় উত্তর কোরিয়া। হ্যান ডাক-সু জানিয়েছেন, কোরিয়া যুদ্ধ ১ হাজার ১২৯ দিন স্থায়ী হয়েছিল। এ যুদ্ধে প্রায় ১ লাখ ৭৫ হাজার দক্ষিণ কোরিয়ার সশস্ত্র বাহিনী প্রাণ হারিয়েছে। এছাড়া ২২টি দেশ নিয়ে গঠিত জাতিসংঘের জোটের অসংখ্য সদস্যের প্রাণ কেড়ে নিয়েছে। ২৮ হাজারেরও বেশি ব্যক্তি নিখোঁজ রয়েছে। সিউলে এ অনুষ্ঠানে প্রায় ১ হাজার ৫০০ জন উপস্থিত ছিলেন।

এর মধ্যে দক্ষিণ কোরিয়ার সরকার প্রদত্ত সাদা ইউনিফর্ম পরিহিত কোরিয়া যুদ্ধের প্রবীণরা এবং কোরিয়া যুদ্ধে অংশগ্রহণকারী জাতিসংঘের বাহিনীর পরিবাররাও ছিল। অনুষ্ঠানের সূচনা হয়েছিল জাতিসংঘের ২২টি রাষ্ট্রের জাতীয় পতাকা প্রদর্শনের মাধ্যমে। অংশগ্রহণকারীদের সমবেত কণ্ঠে কোরিয়া যুদ্ধের গান গেয়ে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *