শাহিন খন্দকার, মাগুরা
মাগুরা জেলায় স্বাস্থ্যখাতে অব্যবস্থাপনা দূর করা ও সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করাসহ ১১ দফা দাবিতে গণকমিটি মাগুরা জেলার উদ্যোগে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২৬ জুন সকাল ১১টায় চৌরঙ্গী মোড়ে মাগুরা জেলা প্রেসক্লাবের সামনে এ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন গণকমিটির আহ্বায়ক এটিএম মহব্বত আলী এবং সমাবেশ পরিচালনা করেন সদস্য সচিব প্রকৌশলী শম্পা বসু। বক্তব্য প্রদান করেন, গণকমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক শিক্ষাবিদ কাজী নজরুল ইসলাম ফিরোজ।
বক্তাগণ বলেন, মাগুরা জেলায় চিকিৎসা ক্ষেত্রে চরম নৈরাজ্য চলছে। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসা অপর্যাপ্ত। ডাক্তার, নার্স, মেডিকেল টেকনিশিয়ানসহ রয়েছে লোকবল সংকট। ওষুধ, টেস্ট, অপারেশনসহ বেশিরভাগ চিকিৎসা সেবা হাসপাতালের বাইরে থেকে নিতে হয়। মাগুরা জেলায় সরকারি মেটারনিটি হাসপাতাল রয়েছে। কিন্তু সেখানে কোন সার্জন নেই। ফলে সিজার করতে হয় বাইরের ক্লিনিকে। ১০ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত সিজারে খরচ হয়। আলট্রা সনোগ্রাম মেশিন নষ্ট এক বছর ধরে। এটা ঠিক করা হয় না। এভাবে বেসরকারি ক্লিনিকগুলোর সাথে যোগসাজশে সরকারি হাসপাতালে পর্যাপ্ত চিকিৎসা সেবা পাওয়া যায় না। আর বেসরকারি ক্লিনিকগুলোর ব্যাবসা (মুনাফা) ভালো হয়। এভাবে মাগুরা জেলার চিকিৎসা ব্যবস্থা এক নৈরাজ্যের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে।
বক্তারা আরো বলেন, গত ২০ জুন ২০২৩ মাগুরা শহরের আল আহাদ ক্লিনিক অ্যান্ড নার্সিং হোমে ‘ভুল চিকিৎসায়’ রাবেয়া খাতুন নামে এক প্রসূতির মৃত্যুর অভিযোগ উঠেছে। এর আগেও অসংখ্য মৃত্যু ঘটেছে মাগুরায়; চিকিৎসকের ভুল চিকিৎসায় বা ক্লিনিকের অবহেলায় বা অব্যবস্থাপনায় । বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দায়ী ব্যক্তিরা অর্থ ও ক্ষমতার দাপটে পার পেয়ে যায় এবং অবৈধ ক্লিনিকগুলোও কিছুদিন বন্ধ থাকার পর চালু হয়ে যায়। এভাবেই মাগুরা জেলায় চিকিৎসা ক্ষেত্রে নৈরাজ্য চলমান। এখানে অধিকাংশ দরিদ্র মানুষ চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হন। টাকা থাকলে চিকিৎসা আছে, টাকা না থাকলে চিকিৎসা নেই–এই হচ্ছে মাগুরা জেলার চিকিৎসা সেবার অবস্থা। অথচ বাংলাদেশের সংবিধান অনুযায়ী চিকিৎসা আমাদের মৌলিক অধিকার।
সমাবেশ থেকে নিম্নলিখিত ১১ দফা দাবি জানান হয়…
১। মাগুরা জেলায় স্বাস্থ্যখাতে অব্যবস্থাপনা দূর করতে হবে ২। সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা নিশ্চিত করতে হবে ৩। মাগুরা জেলায় ডাক্তারদের ফি সর্বোচ্চ ৩০০ টাকা নির্ধারণ করতে হবে ৪। অবৈধ ক্লিনিক বন্ধ করতে হবে
৫। সরকারি হাসপাতালে জরুরী মেডিকেল টেস্ট নিশ্চিত করতে হবে ৬। সরকারি হাসপাতালের সকল শূণ্যপদে ডাক্তার, নার্স ও স্বাস্থ্যকর্মী নিয়োগ দিতে হবে ৭। সরকারি হাসপাতালে সকল ধরনের জরুরী ওষুধ সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে ৮। সকল ধরনের অপরেশন সরকারি হাসপাতালে নিশ্চিত করতে হবে ৯। সরকারি হাসপাতালে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে ১০। রোগীদের খাবারের মান উন্নত করতে হবে ১১। সরকারি হাসপাতালে সকল ধরনের দুর্নীতি বন্ধ করতে হবে
