ব্রিটেনজুড়ে এখন সাজ সাজ রব। ব্রিটিশ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের সিংহাসনে বসার ৭০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে চার দিনব্যাপী উদ্যাপন শুরু হয়েছে।
স্থানীয় সময় বৃহস্পতিবার দুপুরে, রাজপরিবারের সদস্যদের নিয়ে মনোজ্ঞ কুচকাওয়াজে অংশ নেন ৯৬ বছর বয়সী ব্রিটিশ রানি। এ সময় তোপধ্বনির মাধ্যমে রানিকে সম্মান জানানো হয়।
ঐতিহ্য আর রীতি অনুসরণ করে তোপধ্বনির মাধ্যমে শুরু হয় ব্রিটিশ রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথের সিংহাসনে আরোহণের ৭০ বছর পূর্তির মূল আনুষ্ঠানিকতা। আর তা উপভোগে বাকিংহাম প্যালেসের ব্যালকনিতে সপরিবারে উপস্থিত ব্রিটিশ রানি। আর তার সম্মানে আকাশে তেরঙা মনোজ্ঞ ফ্লাইপাস্ট।
ব্রিটিশ রানির সিংহাসনে বসার ৭০ বছর পূর্তি উপলক্ষ্যে উদ্যাপনে মেতেছে গোটা ব্রিটেন। স্থানীয় সময় সকাল থেকেই চলে কুচকাওয়াজের মহড়া। গোটা লন্ডনেই যেন সাজ সাজ রব। রাজপরিবারের সদস্যদের একনজর দেখতে রাস্তার দুপাশে উৎসুক জনতার উপচেপড়া ভিড়। এক সময়, ঘোড়ার গাড়িতে করে উইন্ডসোর ক্যাসেল থেকে প্যালেসে প্রবেশ করতে দেখা যায় প্রিন্স উইলিয়াম ও তার স্ত্রী ডাচেস অব ক্যামব্রিজ কেট মিডলটনকেও। উপস্থিত ছিলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনও।
এদিকে রানির সিংহাসনে আরোহণে বসার দিনটি ঘিরে আলোকসজ্জায় সজ্জিত করা হয়েছে গোটা যুক্তরাজ্য। শুধু ব্রিটেন নয়, রানির এ মাহেন্দ্রক্ষণ উদ্যাপনে মেতেছে কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোও।
১৯৫২ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি বাবা ষষ্ঠ জর্জের মৃত্যুর পর মাত্র ২৫ বছর বয়সে ব্রিটিশ সিংহাসনে আরোহণ করেন রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথ। ব্রিটেনের ইতিহাসে তিনি দ্বিতীয় ব্যক্তি যিনি দীর্ঘ সময় ধরে ব্রিটিশ রাজ সিংহাসন ধরে রেখেছেন।
আগামী চার দিন দেশটিতে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে। রাজপরিবার ছাড়াও ‘জুবিলি পার্টি’ সফল করতে যোগ দিয়েছে বিভিন্ন সম্প্রদায়ও। এরই মধ্যে উদ্যাপন শুরু হয়েছে ঐতিহাসিক স্টোনহেঞ্জে। ১৯৫৩ সালে রানির অভিষেকের সময়ের ছবি প্রজেক্টরের মাধ্যমে তুলে ধরা হয়েছে পাথরের গায়ে।
শুক্রবার (৩ জুন) সেন্ট পল্স ক্যাথিড্রালে থাকছে ‘থ্যাংকস গিভিং সার্ভিস’। এতে রাজপরিবারের সবাই উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। তবে রানির ছোট ছেলে প্রিন্স অ্যান্ড্রু করোনা আক্রান্ত হওয়ায় উপস্থিত থাকবেন না জানানো হয়েছে।
পরদিন শনিবার (৪ জুন) ‘এপসম ডাউনস’-এ সপরিবারে ডার্বি দেখতে যাবেন রানি। ওই দিনই বাকিংহাম প্রাসাদে এক বিশেষ পার্টিরও আয়োজন থাকছে। যেখানে যোগ দেবেন গায়ক এড শেরনের মতো সংগীত জগতের অনেক তারকা। ওই অনুষ্ঠানে অন্তত ২২ হাজার অতিথির যোগ দেয়ার কথা।
এরপর রোববারই (৫ জুন) আয়োজন করা হবে সবচেয়ে বড় আয়োজন—‘জুবিলি পেজেন্ট’। এ আয়োজনের সামনে থাকবে রানির রাজকীয় রথ। তবে বয়সের কারণে রানি রথে থাকবেন না। এর পরিবর্তে রানির রাজ্যাভিষেকের পর গত ৭০ বছরে তার জীবনের নানা উল্লেখযোগ্য ঘটনা প্রজেক্টরের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হবে ওই ঘোড়ার গাড়ির জানালায়।
ধারণা করা হচ্ছে, প্রায় এক কোটি মানুষ ওই জুবিলি লাঞ্চে অংশ নেবেন। শুধু যুক্তরাজ্যেই নয়, জুবিলি লাঞ্চের আয়োজন হবে কমনওয়েলথভুক্ত দেশগুলোসহ বিভিন্ন দেশে। এসব দেশের তালিকায় রয়েছে নিউজিল্যান্ড, কানাডা, ব্রাজিল, জাপান, দক্ষিণ আফ্রিকা ও সুইজারল্যান্ড।