বুলেটপ্রুফ ভেস্ট পরে যুদ্ধের ময়দানে জেলেনস্কি

আন্তর্জাতিক স্লাইড

মে ৩০, ২০২২ ৮:০৪ পূর্বাহ্ণ

ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযান শুরুর পর প্রথমবারের মতো রাজধানী কিয়েভের বাইরে গেলেন দেশটির প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি। রোববার (২৯ মে) বুলেটপ্রুফ ভেস্ট পরে যুদ্ধের ময়দানে যান তিনি। উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় যুদ্ধবিধ্বস্ত খারকিভ গিয়ে সেনাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ইউক্রেন প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ের বরাত দিয়ে এ খবর জানিয়েছে আল-জাজিরা।

ভিডিওতে দেখা গেছে, জেলেনস্কিকে যুদ্ধবিধ্বস্ত অঞ্চল ঘুরিয়ে দেখাচ্ছেন ইউক্রেনীয় সেনারা। বিবিসি জানায়, জেলেনস্কির দফতর টেলিগ্রামে একটি ভিডিও পোস্ট করেছে। তাতে ক্যাপশনে লেখা, খারকিভ ও ওই অঞ্চলে ২ হাজার ২২৯ ঘরবাড়ি ধ্বংস হয়েছে। আমরা অঞ্চলটিকে পুনর্গঠন করব এবং প্রাণ ফিরিয়ে আনব।

গত ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরু করে রাশিয়া। দেশটির কর্মকর্তারা বলছেন, ইউক্রেনের বেসামরিকীকরণ ও নাৎসিমুক্তকরণের লক্ষ্যে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ চালানো হচ্ছে। তবে ইউক্রেন ও পশ্চিমারা এই অভিযানকে বিনা উসকানিতে ‘আগ্রাসন’ আখ্যা দিয়েছে।

যুদ্ধে রাশিয়া ইউক্রেনের পূর্বাঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ রেল হাব লিমান দখলের দাবি করার পর নিকটবর্তী কৌশলগত গুরুত্বপূর্ণ শহর সেভেরোদোনেৎস্কেও আক্রমণের তীব্রতা বাড়িয়েছে।

রোববার ইউক্রেন ‍যুদ্ধে প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির নিজ শহর ক্রেয়েই রিতে সেনাবাহিনীর একটি বিশাল অস্ত্রাগার ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় ধ্বংসের দাবি করেছে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে গত ২৪ ঘণ্টায় তিন শতাধিক ইউক্রেনীয় সেনা নিহত হয়েছে বলেও দাবি করেছেন রুশ প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র ইগর কোনাশেনকভ।

কোনাশেনকভ আরও বলেন, অভিযানে ইউক্রেনের আরও বেশ কয়েকটি সামরিক নিশানায় আঘাত হানা হয়েছে। দনিপ্রো অঞ্চলে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ইউক্রেনের একটি এসইউ-২৫ যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করেছে।

রাশিয়ার বিমান হামলায় সব মিলিয়ে এখন পর্যন্ত ইউক্রেনের তিন শতাধিক সেনা নিহত হওয়া ছাড়াও ৫০টি সামরিক ইউনিট এবং ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ যন্ত্রপাতি ধ্বংস হয়েছে, বলেন ইগর কোনাশেনকভ।

এদিকে ইউক্রেন যুদ্ধে পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করা হবে না বলে জানিয়েছে রাশিয়া। যুক্তরাজ্যে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত আন্দ্রেই কেলিন বিবিসিকে এক সাক্ষাৎকারে বলেন, তার দেশ ইউক্রেন যুদ্ধে কৌশলগত (ট্যাকটিকাল) পারমাণবিক অস্ত্র ব্যবহার করবে বলে বিশ্বাস করেন না তিনি।

এ ছাড়া রাশিয়ার সামরিক আইনানুযায়ী, ইউক্রেনের মতো সংঘাতের ক্ষেত্রে এসব অস্ত্র ব্যবহার করা হয় না। এসব অস্ত্র ব্যবহারের নিয়ম খুবই কড়া উল্লেখ করে কেলিন বলেন, শুধু রাষ্ট্রের অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়লেই তা ব্যবহার করা হয়। বিবিসি ওয়ানের সানডে মর্নিং প্রোগ্রামে তিনি বলেন, বর্তমান পরিস্থিতির সঙ্গে এই অস্ত্র ব্যবহারের কিছু নেই।

এ বছর ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে সামরিক অভিযান শুরুর পরপরই পারমাণবিক বাহিনীকে উচ্চ সতর্কতায় রেখেছিলেন রুশ প্রেসিডেন্ট। তখন একে হুমকি হিসেবে দেখা হচ্ছিল। এর জন্য পশ্চিমা বিশ্ব ও ন্যাটো জোটকেই দায়ী করেন পুতিন।

তবে ব্রিটিশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী বেন ওয়ালেস বলেছিলেন, ইউক্রেন পরিস্থিতি থেকে মানুষের দৃষ্টি সরানোর জন্য এটি করা হয়েছে। নিজেদের হাতে যে এ ধরনের প্রতিরোধ ব্যবস্থা আছে, তা-ও বিশ্বকে মনে করিয়ে দিতে চেয়েছে রাশিয়া।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *