বিদ্যার সঙ্গে সম্পর্কহীন জীবন অন্ধ এবং জীবনের সঙ্গে সম্পর্কহীন বিদ্যা পঙ্গু!

দেশজুড়ে

জানুয়ারি ৩১, ২০২৩ ১২:০৩ পূর্বাহ্ণ

পবিত্র কুমার দাস, 

বিদ্যার সাথে মানব জীবনের সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য। কারণ বিদ্যা মানবজীবনের অজ্ঞতা, কুসংস্কার ও হৃদয়ের অন্ধকার দূর করে। মানবজীবনকে অন্ধকার থেকে আলোর পথে পরিচালিত করে। বিদ্যাহীন মানুষ কখনোই সত্য ও আলোর পথ দেখতে পারে না। ফলে তারা অন্ধের মতো বসবাস করে। একমাত্র বিদ্যার আলোয় মানুষ প্রকৃত মানুষ হয়ে ওঠে। বিদ্যার আলোয় সে অজ্ঞতা ও সংকীর্ণতার অন্ধকার থেকে মুক্তি পায়। সেই আলোয় সমাজ, জাতি, দেশ হয় উপকৃত। তাই মানবজীবনের সাথে বিদ্যার সম্পর্ক অপরিহার্য। বিদ্যাহীন জীবনকে অন্ধের জীবনের সাথে তুলনা করা যায়। তবে অর্জিত বিদ্যাকে জীবনমুখী হতে হয়, জীবন বিবর্জিত নয়। বিদ্যা জীবনমুখী না হলে তা মানুষ, দেশ ও জাতির কোনো উপকারে আসে না। তাই বিদ্যার সাথে জীবনের নিবিড় সম্পর্ক থাকা চাই। যে বিদ্যা কেবল সার্টিফিকেট সর্বস্ব তার কোনো মূল্য নেই। এ বিদ্যা দেশ ও জাতির কোনো উপকারে আসে না। বস্তুত যে বিদ্যার সাথে বাস্তব জীবনের সম্পর্ক নেই, সে বিদ্যা কখনো ফলপ্রসূ হতে পারে না। তাই জীবনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক যে বিদ্যার সেটাই আসল বিদ্যা। এ বিদ্যা জীবনকে সুন্দর ও গতিশীল করার পাশাপাশি সমাজকে উন্নত করার প্রয়াস চালায়। তাই ব্যক্তিজীবন ও সমাজজীবনের বিকাশের জন্য বিদ্যাকে জীবনঘনিষ্ঠ ও বাস্তবানুসারী করে তুলতে হবে। শিক্ষা: জীবনকে গতিময়, বাস্তব ও কর্মমুখী করতে হলে যেমন বিদ্যার্জন অত্যাবশ্যক তেমনি অর্জিত বিদ্যাও হতে হবে জীবনের সঙ্গে সম্পৃক্ত। জীবনের এই ফলপূস বিদ্যা সম্পর্কে বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী শিক্ষার্থী মোঃ রুবেল হাসান বলেন বিদ্যা বা পড়াশোনার প্রকৃত দিক হচ্ছে এর প্রায়োগিক দিক। যে বিদ্যা প্রয়োজনে আসে না দেশ জাতি সমাজের এমনকি ব্যক্তিজীবনের সে বিদ্যা অনেকটা বৃক্ষরস হতে তৈরি কর্পূরের মতো যা সময় শেষ আর থাকে না। আমরা কাজী নজরুলের ভাব ও কাজ গল্পে দেখি – বাঙ্গালীকে ভাব পাগল জাতি হিসেবে উল্লেখ করা হয়ছে যা অনেক খানি সত্য। মানুষের জীবনে ভাবনার গুরুত্ব অনেক যা কাজকে বাস্তবে রুপ দিতে সাহায্য করে। তাই বলে ভাবনার দাস হওয়া যাবে না, কাজটাকেই ভাবের দাস বানাতে হবে৷ আর সঠিক পড়াশোনার জন্য চাই কৌশলী পড়াশোনা যা প্রতিটা স্টুডেন্টকেই একধাপ এগিয়ে নিবে। যেগুলোর মধ্যে অন্যতম।

১। প্রতিদিন ভোরে ঘুম থেকে উঠুন। ফলে আপনি অন্যদের বেশি সময় পাবেন পড়াশোনার জন্য।
.
২। প্রতিদিন নতুন নতুন কিছু না কিছু শিখুন। এটি আপনাকে অন্যদের চেয়ে দিন দিন এগিয়ে নিয়ে যাবে।
.
৩। আগামীকাল কী পড়বেন তা আগের দিন প্ল্যান করে আলাদা খাতায় লিখে রাখুন এবং পরের দিন সেই প্ল্যান অনুযায়ী পড়ুন। ভাগ ভাগ করে পড়লে পড়তে ভালো লাগবে।
(খাতার নাম দিতে পারেন “স্টাডি প্ল্যান খাতা”)
.
৪। প্রতি সপ্তাহ ও মাসে কোন কোন সাবজেক্ট বা বই শেষ করবেন তা প্ল্যান করে খাতায় লিখে রাখুন। এতে করে দ্রুত কোনো বই বা সাবজেক্ট শেষ করতে পারবেন।
.
৫। কঠিন বিষয়গুলো প্রতিদিন অল্প অল্প করে পড়ুন এবং লিখে লিখে হালকা শব্দ করে পড়ার চেষ্টা করুন। এতে করে কঠিন বিষয়গুলো খুব ভালো করে শেখা হবে এবং বেশি দিন মনে থাকবে।
.
৬। যে কোনো বিষয়ে কন্সেপ্ট ক্লিয়ার করে পড়ুন। নিজে নিজে না বুঝলে অন্যের সাহায্য নিন। না বুঝে কোনো কিছু মুখস্থ করবেন না এবং পড়ার সময় পূর্ণ মনোযোগ দিয়ে পড়ার চেষ্টা করুন।
.
৭। মোবাইল, ইন্টারনেট, ফেইসবুক, মেসেঞ্জার, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউব, ইমোতে কম সময় ব্যয় করুন। এতে করে আপনার পড়ায় বেশি সময় দিতে পারবেন।
.
৮। অযথা আড্ডা বা ঘুরাফেরা করে সময় নষ্ট করা থেকে বিরত থাকুন। এতে করে আপনার মাথায় খারাপ ও অনর্থক চিন্তা কম আসবে এবং বেশি করে পড়ার সুযোগ পাবেন।
.
৯। প্রতিদিন আপনার স্বপ্নটাকে অন্তত সকাল, বিকাল, রাতে ঘুমানোর আগে একবার করে স্মরণ করুন। প্রয়োজনে আপনার স্বপ্নটিকে পড়ার টেবিলে উপর লিখে রাখতে পারেন। যেমন- ” আমি বিসিএস ক্যাডার হবো”, “আমি ব্যাংকার হবো”। এটি আপনাকে বেশি বেশি পড়তে উৎসাহ জোগাবে।
.
১০। নেতিবাচক চিন্তাশীল মানুষদের পরিহার করে চলুন এবং যতটুকু সম্ভব ইতিবাচক চিন্তাশীল মানুষদের সংস্পর্শে থাকার চেষ্টা করুন। এর ফলে করে আপনার ভিতরে ভালো কিছু করার অনুপ্রেরণা জাগবে।
.
কখনো হতাশ হবেন না। খারাপ সময়ে ধৈর্য ধারণ করে লক্ষ্য ঠিক রেখে পরিশ্রম করে যান। ইনশাআল্লাহ, ভালো ফল পাবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *