বাউফলের নাজিরপুরে টেকসই বাঁধ নির্মাণের দাবিতে মানববন্ধন

দেশজুড়ে

অক্টোবর ৮, ২০২২ ১০:৫০ অপরাহ্ণ

মো. দুলাল হোসেন(বাউফল):

দুঃখ যাদের নিত‍্য সংঙ্গী সুখ যেন তাদের কাছে অমাবস‍্যার চাঁদ বলছি নদী ভাঙ্গণ কবলিত অসহায় নাজিরপুরবাসীর দুর্দশার কথা। সর্বনাশা তেঁতুলিয়া নদীর ক্রমাগত ভাঙন প্রতিরোধে টেকসই বাঁধ প্রকল্প গ্রহণের দাবিতে পটুয়াখালীর বাউফলের নাজিরপুর ইউপির তেঁতুলিয়া নদী পাড়ে নিমদী লঞ্চঘাট এলাকায় শনিবার ০৮ অক্টোবর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে প্রায় তিন কিলোমিটার দীর্ঘ মানববন্ধন করেছেন স্থানীয় ভূক্তভোগী জনগন।
ওই বৃহৎ মানববন্ধনে সরকারের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে বক্তব্য রাখেন নাজিরপুর ইউপির নবনির্বাচিত চেয়ারম্যান এস এম মহসিন, প্রভাষক মো. জসীম উদ্দিন, ঢাকাস্থ ব্যাবসায়ী সেলিম মাতবর, আবুল হোসেন মীর সহ অনেকে । তাদের দাবি কর্তৃপক্ষ যেন অচিরেই টেকসই বাঁধ নির্মান করে ক্রমাগত নদী ভাঙ্গণের হাত থেকে এলাকাবাসীকে রক্ষা করে তা না হলে হয়ত তেঁতুলিয়ার সর্বনাশা গ্রাসে বিলীন হবে নাজিরপুর ইউনিয়নের সিংহভাগ অঞ্চল।
বক্তরা সরেজমিনে উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নদীভাঙন কবলিত এলাকা পরিদর্শন ও ভাঙন প্রতিরোধে টেকসই প্রকল্প গ্রহণের জোর দাবি জানান। আন্দোলনে অংশ নিয়ে স্থানীয় জানান, প্রতিদিনই তেঁতুলিয়া গ্রাস করছে ভিটাবাড়িসহ ফসলী জমি। সত্তর দশক থেকে তেতুঁলিয়ার অব্যহত ভাঙ্গনে বিলীন হয়েছে ঐতিহাসিক গঞ্জ আবে-আবদুল্লাহর হাট, ভাওয়াল রাজার বংশউদ্বুত কচুয়ার জমিদার বাড়ি, নিমদী সরকারি প্রাইমারিসহ বহু সামাজিক প্রতিষ্ঠান, শত শত ঘরবাড়ি ও হাজার হাজার একর কৃষি জমি। পাল্টে যাচ্ছে বাউফলের এই ইউপির মানচিত্র। একাধিকবার স্থানান্তরের পরেও ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে নিমদী সরকারি প্রাইমারি, ধানদী আদর্শ মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ধানদী ফাজিল মাদ্রাসা, দক্ষিন ধানদী সরকারি প্রাইমারি, ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, কমিউনিটি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ অনেকগুলো সামাজিক প্রতিষ্ঠান। ইতিমধ্যে হাজারো পরিবারের লোকজন ভূমিহীন হয়েছে ও পেশা হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছে। পরিবেশ বিপর্যয়ের পাশাপাশি নেমেছে মানববিপর্যয়। ভাঙনরোধে বৃহত্তর কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে জানিয়ে মানববন্ধনে আসা বিভিন্ন শ্রেণিপেশার লোকজন টেকসই প্রকল্প গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন। এদের কয়েকজন জানায়, নদীর অব্যহত ভাঙনে পাল্টে যাচ্ছে নাজিরপুর ইউপির মুলভূখন্ডের মানচিত্র। ভিটা-বাড়ি আর সহায়-সম্বল হারিয়ে রাস্তার পাশে কিংবা আত্মীয়-স্বজনসহ অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন বহু পরিবার। কামলা খেটে কিংবা মানবেতর দিন পাড় করছেন অনেকে। অনেকে আবার সাধ্য অনুযায়ী ছড়িয়ে ছিটিয়ে পড়ছেন অন্য এলাকায়। সবসময় আতঙ্ক বিরাজ করছে ভাঙন কবলিত এলাকার লোকজনের মধ্যে। শীগ্রই পরিবেশ ও মানব বিপর্যয় ঠেকাতে ভাঙন রোধে টেকসই প্রকল্প গ্রহণের মাধ্যমে নিমদী, ধানদী, ডালিমা, কচুয়া ও তাঁতেরকাঠী এলাকা রক্ষার দাবি জানায় এলাকাবাসী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *