ফল পাকলে রঙিন হয় কেন?

ফল পাকলে রঙিন হয় কেন?

ফিচার স্পেশাল

ফেব্রুয়ারি ১৭, ২০২৩ ৯:৫৮ পূর্বাহ্ণ

বাজারে নানা রঙের বিভিন্ন ধরনের ফল পাওয়া যায়। এমনকি কাঁচা ফলেও দেখা মেলে। সব ফলের কাঠামো, স্বাদ কিংবা দামে পার্থক্য হলেও, একটি জায়গায় সবই এক! সেটি হলো, কাঁচা থাকলে সবুজ, পাকলে রঙিন।

রঙিন ফল খাওয়ার অভ্যাস সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয় তা সবারই জানা। কিন্তু ফল পাকলে কেন তা রঙিন হয় তা হয়ত অনেকেরই অজানা। এটিরও রয়েছে বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা।

ফল স্বাভাবিকভাবে পাকে একটি হরমোনের জন্য, নাম হলো ইথিলিন। ফল পাকার জন্য বিশেষভাবে ইথিলিন দায়ী। সাধারন তাপমাত্রায় ইথিলিন একটি গ্যাস, যার আণবিক গঠন হল CH2=CH2। এটিকে ফাইটোহরমোন বলা হয়।

যদি কাঁচা ফল গাছ থেকে তুলে নিয়ে ইথিলিনের সংস্পর্শে রেখে দেওয়া হয় তাহলে দেখা যাবে ফলে পাক ধরবে। আর কার্বাইড ও বাতাসের জলীয় বাষ্পে অ্যাসিটিলিন নামে একটা গ্যাস তৈরি হয়, যা অনেকটা ইথিলিনের মতো গুণসম্পন্ন।

কাঁচা ফলে থাকে প্রচুর ক্লোরোফিল। আর থাকে সামান্য জ্যান্থোফিল ও ক্যারোটিন। ফল পাকতে শুরু করলে নতুন করে ক্লোরোফিল তৈরি বন্ধ হয়ে যায় এবং আগের গুলোও নষ্ট হয়ে যায়। অন্যদিকে রঙ্গিন ক্যারোটিন, জ্যানথোফিল, এর পরিমাণ বাড়তে থাকে। এর ফলে সবুজ রং পরিবর্তন হয়ে হলুদ (জ্যানথোফিল বেশি হলে) কমলা (ক্যারোটিন বেশি হলে) লাল (লাইকোপিন বেশি হলে) ইত্যাদি বর্ণের হয়। ফল গাছ থেকে পেড়ে এনে ঘরে রাখলেও ক্লোরোফিল তৈরি বন্ধ হয়ে যায়। এবং বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী ফলের রং হলুদ, কমলা বা লাল হয়।

রঙিন ফলে লুকিয়ে রয়েছে নানান ধরনের উপকারিতা। যেমন লাল রঙের ফল প্রোস্টেট ক্যানসার, হৃদ্‌রোগ, উচ্চ রক্তচাপ, অতিরিক্ত কোলেস্টেরল, ইরেক্টাইল ডিসফাংশন এবং ফুসফুসের বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা রয়েছে।

হলুদ ও কমলা রঙের ফল চোখ, ত্বক, হৃদযন্ত্র, হাড়ের সুরক্ষা তৈরির পাশাপাশি রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বাড়িয়ে তোলে। সাদা, সবুজ আর বাদামি রঙের ফল সাধারণত বিভিন্ন ধরনের ক্যানসার প্রতিরোধ করার পাশাপাশি শরীরের টিউমার, কোলেস্টেরল থেকে রক্ষা করে।

নীল ও বেগুনি রঙের ফলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টি অক্সিডেন্ট। যা ত্বক সুন্দর ও মসৃণ রাখে। হৃদরোগ ও স্ট্রোকের ঝুঁকি কমাতেও দারুণ কাজ করে নীল ও বেগুনি রঙের ফল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *