পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখা মুমিনের দায়িত্ব

পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখা মুমিনের দায়িত্ব

ধর্ম

আগস্ট ৫, ২০২৩ ১:০৭ অপরাহ্ণ

পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নকে ইসলাম অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েছে। যিনি পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন এবং পবিত্রতা অবলম্বন করে জীবন পরিচালনা করেন মহান আল্লাহতায়ালা তাকে ভালোবাসেন। যেভাবে পবিত্র কুরআনে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘নিশ্চয় আল্লাহ তওবাকারীদের ভালোবাসেন এবং পবিত্রতা লাভে সচেষ্টদেরও ভালোবাসেন’ (সূরা বাকারা, আয়াত : ২২২)।

মহানবি (সা.) যেমন নিজে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকতেন তেমনি সবাইকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকারও নসিহত করতেন। হজরত আবু মূসা আশআরি (রা.) বর্ণনা করেন, মহানবি (সা.) বলেছেন, ‘আত্তুহুরু শাতরুল ইমান’ অর্থাৎ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ও পবিত্রতা অবলম্বন করা ইমানের অঙ্গ (মুসলিম, কিতাবুত তাহারাত, বাব ফাযলু ওয়াযু)। অপর আরেকটি হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, হজরত আবু মালিক আশআরি (রা.) বর্ণনা করেন, রাসূল করিম (সা.) বলেন, ‘পবিত্রতা ইমানের অর্ধেক স্বরূপ’ (আল মুজিমুল কাবির, ৩য় খণ্ড, পৃষ্ঠা ২৮৩)।

উল্লিখিত হাদিস থেকে স্পষ্ট বুঝা যায়, একজন মুমিনের জন্য পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার প্রতি দৃষ্টি দেওয়া কতটা গুরুত্বপূর্ণ। শুধু নিজেকে পরিষ্কার রাখলেই চলবে না বরং চারপাশের পরিবেশকেও পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে। অনেকেই আমরা এমন আছি, যারা নিজের ঘরকে ঠিকই পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার ব্যাপারে সচেতন কিন্তু বাইরের পরিবেশকে পরিচ্ছন্ন রাখার প্রতি দৃষ্টি রাখি না। এটা মোটেও ঠিক নয়। পরিবেশ পরিচ্ছন্ন রাখাও ঠিক ততটাই গুরুত্বপূর্ণ যতটা নিজেদের ঘরকে পরিচ্ছন্ন রাখার ক্ষেত্রে প্রাধান্য দেই। কেননা বাইরের পরিবেশ ময়লা আবর্জনার কারণে নোংরা হলে পুরো পরিবেশেই এর প্রভাব পড়ে। আর এর ফলে রোগ-বালাই দেখা দেয়। আজকে ডেঙ্গু যে হারে বৃদ্ধি পেয়েছে তার শেষ কোথায় কেবল আল্লাহপাকই ভালো জানেন।

বিশেষ করে প্রতিনিয়ত শিশুরা বিভিন্ন রোগের শিকার হচ্ছে, এর একটি প্রধান কারণ হলো নোংরা পরিবেশ। রাস্তাঘাটে চলার পথে আমরা দেখতে পাই ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট স্থান থাকা সত্ত্বেও সেখানে না ফেলে যেখানে-সেখানে ময়লা ফেলে নোংরা করি। এই যে যেখানে-সেখানে ময়লা ফেলে পরিবেশ নষ্ট করছি এর ফলে কিন্তু আপনার আমার সবার ক্ষতি হচ্ছে। শুধু নিজের ঘর আর নিজেকে পরিষ্কার রাখলেই চলবে না বরং পুরো পরিবেশের চিন্তা করতে হবে। আশপাশের পরিবেশকে পরিচ্ছন্ন রাখা আপনার আমার সবার কর্তব্য। মনে রাখতে হবে রাস্তাঘাট সব কিছুই আমাকে পরিষ্কার রাখতে হবে। হাদিস পাঠে আমরা জানতে পারি হজরত রাসূলে কারিম (সা.) বিশেষভাবে রাস্তাঘাটের পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার বিষয়ে খুবই সচেতন ছিলেন। রাস্তাঘাটে যদি কাঁটাবিশিষ্ট ছোট বৃক্ষ অথবা পাথর বা নোংরা কোনো কিছু থাকত তাহলে মহানবি (সা.) নিজে তা উঠিয়ে এক পাশে রেখে দিতেন এবং বলতেন যে, ‘যে ব্যক্তি চলার পথের পরিচ্ছন্নতার প্রতি যত্নবান হয় খোদাতায়ালা তার প্রতি সন্তুষ্ট হন এবং তাকে সওয়াব দান করেন’ (মুসলিম, কিতাবুল বিররি ওয়াস সিলাতি)।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *