নাসিরনগরে অধক্ষ মাঝিই নৌকার ভরাডুবির কারণ

দেশজুড়ে

জানুয়ারি ১০, ২০২৪ ৯:৪৩ পূর্বাহ্ণ

মোঃ আব্দুল হান্নান

ব্রাহ্মণবাড়িয়া ১ আসন নাসিরনগরে অধক্ষ মাঝিই নৌকার ভরাডুবির কারন, বলছে সর্স্তরেরর জনগণ। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামে,হাটবাজারে,রাস্তাঘাটে,চায়ের দোকানে,ক্ষেতে খামারে জরিপ চালিয়ে বিভিন্ন শ্রেণীপেশার মানুষের সাথে কথা বলে এমন জরিপ পাওয়া গেছে।

আওয়ামীলীগ প্রার্থী বি এম ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পুরনে ব্যর্থতা হয়েছে।ত্যাগী ও প্রকৃত আওয়ামীলীগের,নেতাকর্মী ও সাধারণ মানুষকে কাছে টেনে রাখতে ব্যর্থ হয়েছে।আওয়ামীলীগ,যুবলীগ,ছাত্রলীগ,কৃষকলীগকে বাদ দিয়ে নিজের মত করে স্বেচ্ছাসেবকলীগ গঠন করে দল পরিচালনা করেছে।সাধারণ মানুষ ও ভোটারদের অবমুল্যায়ন করতে পারেনি।দলীয় নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে বিএনপি, জামায়াত,রাজাকার বংশীয় ও ভিন্ন দলের লোকদের প্রধান্য দিয়েছে।সরকারী কর্মকর্তাদের সাথে অসৌজন্য মুলক আচরন করা হয়েছে। তার লোকজন দিয়ে বিভিন্ন দপ্তরে দালালী ও লুটপাটের কথাও শোনা যাচ্ছে।দলীয়ত্যাগীদের মুল্যায়ন না করে নব্য চাটুকার ও হাইব্রিডদের কাছে টেনে রেখেছে। এ সমস্ত কারনেই বিতর্কিত এই সাংসদের বিভিন্ন অনৈতিক কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে একাট্টা হয়ে গণপ্রতিরোধ গড়ে তুলে নির্বাচনী এলাকার জনগণ। বিপুল ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে বিদায় দেন তাকে।

১৯৭১ সালের মহান স্বাধীনতার পর ব্রাহ্মণবাড়িয়া ১ সংসদীয় ২৪৩ আসনটিতে একবার জাতীয় পার্টির প্রার্থী মোজাম্মেল হক কাপ্তান মিয়া লাঙ্গল প্রতীকে ও একবার বার স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম সাফি হুক্কা প্রতিক নিয়ে১২ দিনের জন্য সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।তার পর থেকে ঘুরফিরে এ আসনটি আওয়ামীলীগের দখলে চলে আসে। ২০২৩ সাল পর্যন্ত এ আসনটি আওয়ামীলীগের দখলে থাকে।এ আসন থেকে আওয়ামীলীগ প্রার্থী এডঃ সায়েদুল হক পাঁচবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে একবার মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রনালয়ের মন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ২০১৭ সালের ১৬ ডিসেম্ভর মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রী এডঃ সায়েদুল হকের মৃত্যুর পর আসনটি শুন্য হয়ে পরে। তখন এ উপ-নির্বাচনে সাত মাসের জন্য সুকৌশলে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন বিএম ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম।পরবর্তীতের আবারো পাঁচ বছরের জন্য।

বি,এম ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর নাসিরনগরের সকল প্রবীণ ও ত্যাগী আওয়ামীলীগ,যুবলীগ,ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের দূরে ঠেলে রেখে বির্তকিতদের নিয়ে গঠন করে স্বেচ্ছাসেবকলীগ নামের একটি সংগঠন।তাদের দিয়ে চালাতে শুরু করে রাজনীতি।তাছাড়াও এলাকার যত কুখ্যাত জুয়ারী,চোর,ডাকাত,মাদকসেবী,মাদক ব্যবসায়ীকেনেতা হিসেবে তার কাছে কাছে টেনে আনে।এতে আওয়ামীলীগের ত্যাগীদের অন্তরে জ্বলতে শুরু হয় তোষের অনল। স্বেচ্ছাসেবকলীগের নেতাকর্মীদের মাধ্যমে করানো হয় অনেক দুর্নীতি জনক কাজকর্ম।তিনি পাঁচ বছর সাত মাস নাসিরনগরে আওয়ামীলীগের এমপি থাকার পরও আওয়ামীলীগ,যুবলীগ,ছাত্রলীগের পুর্নাঙ্গ কমিটি করতে ব্যর্থ হয়েছে।তিনি কাজ না করে শুরো করেন উদ্ভোধন উদ্ভোধন খেলা।তিনি তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পুরনে ব্যর্থ হয়েছেন।গোয়ালনগরে পর্যটন কেন্দ্র,নাসিরনগ সদরে কারিগরি শিক্ষা কলেজ স্থাপন,রাস্তাঘাট,ব্রিজ কালভার্ট সহ গ্রামীণ অবকাঠামোর উন্নয়নে ব্যর্থতার পরিচয় দিয়েছেন।
জানা গেছে একমাত্র প্রার্থীর কারনে দীর্ঘদিন আওয়ামীলীগের দখলে থাকা আসনটিতে প্রায় অর্ধেক ভোটের ব্যবধানে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন বিশিষ্ট শিল্পপতি একরামুজ্জামান সুখন
৭ জানুয়ারী ২০২৪ রোজ রবিবার সকাল আট ঘটিকার সময় অত্যান্ত আনন্দঘন ও উৎসবমুখর পরিবেশে শুরু হয়ে একটানা বিকেল ৪টা পর্যন্ত বিরতিহীনভাবে চলে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১,সংসদীয় ২৪৩ নাসিরনগর আসনের ভোটগ্রহণ।রাতেই ওই আসনের ৭৯ টি কেন্দ্রের সবকয়টিরই ফল এসেছে। এতে বেসরকারিভাবে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাবেক উপদেষ্টা ও কলারছড়ি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী বিশিষ্ট শিল্পপতি সৈয়দ একে একরামুজ্জামান সুখন। প্রাপ্ত ফলাফলে ৭৯টি কেন্দ্রের স্বতন্ত্র প্রার্থী সৈয়দ একে একরামুজ্জামান সুখন পেয়েছেন ৮৯ হাজার ৪২৪ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী নৌকা প্রতীক নিয়ে আওয়ামীলীগ প্রার্থী বিএম ফরহাদ হোসেন সংগ্রাম পেয়েছেন ৪৬ হাজার ১৮৯ ভোট।
জানা গেছে ২০২৪ এর নির্বাচনে এ আসনে ৭৯টি কেন্দ্রে মোট ভোটার ভোটার ২ লক্ষ ৫২ হাজার ৫৪৭জন। পুরুষ ভোটার ১ লক্ষ ৩৩ হাজার ১‘শ ৯ জন ও মহিলা ভোটার ১ লক্ষ ১৯ হাজার ৪‘শ ৩৬ জন এবং তৃতীয় লিঙ্গ বা হিজড়া ভোটার২ জন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *