জাকাত প্রদানের গুরুত্ব

জাকাত প্রদানের গুরুত্ব

ধর্ম

এপ্রিল ১৪, ২০২৩ ৮:২০ পূর্বাহ্ণ

ইসলাম সাম্য ও ভ্রাতৃত্বের ধর্ম। ভালোবাসা ও সৌহার্দ্যরে সেতুবন্ধ অগ্রণী ভূমিকা পালন করে এ ধর্ম। এ ধর্ম মানুষকে পরোপকারী, অন্যের ব্যাথায় সমব্যাথী, দরিদ্র জনগোষ্ঠীর প্রতি সহানুভূতিশীল ও সহমর্মী হতে সাহায্য করে। ধনী-গরিবের দূরত্বকে কমানোর জন্য এবং বিত্তশালীদের মালের পবিত্রতার জন্য এ ইসলাম নিয়ে এসেছে জাকাতের বিধান।

জাকাতের আভিধানিক অর্থ হলো শুচিতা ও পবিত্রতা, শুদ্ধি ও বৃদ্ধি। আর পরিভাষায় আল্লাহর সন্তুষ্টি লাভের উদ্দেশ্যে শরিয়ত নির্ধারিত পরিমাণ সম্পদের নির্দিষ্ট অংশ কুরআনে বর্ণিত আট প্রকারের কোনো এক প্রকার লোক অথবা প্রত্যেককে দান করে মালিক বানিয়ে দেওয়াকে জাকাত বলে।

এ জাকাতের বিধানে অনেক হেকমত নিহিত রয়েছে। দেখা যায় সমাজে বিভিন্ন শ্রেণির মানুষ বাস করে। কেউ কেউ সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলে মহাসুখে জীবনযাপন করে, আবার কেউ কেউ দুঃখ-কষ্টে দিনাতিপাত করে। দুর্বিষহ হয়ে ওঠে তাদের জীবন। কেউ কেউ তো আবার মানবেতর জীবনযাপন করে; নুন আনতে পান্তা ফুরানোর দশা।

তাই ইসলাম চায় ধনী-গরিবের বৈষম্য ঘুচে যাক। তাদের মধ্যে কোনো তারতম্য না থাকুক। বিত্তশালীরা হতদরিদ্র ও জাকাতের উপযুক্তদের জাকাত দিয়ে ইসলামের একটা গুরুত্বপূর্ণ হুকুম পালন করবে। তাছাড়া জাকাত প্রণয়নের আরেকটি হেকমত হচ্ছে ধনীদের অন্তর থেকে কৃপণতা দূর করা।

কারণ, রাসূল (সা.) একাধিক হাদিসে বলেছেন দান-খয়রাতের মাধ্যমে সম্পদ কমে না বরং আরও বরকত হয়। তাছাড়া জাকাত আদায়ের মাধ্যমে মুসলমানদের মনোবল বৃদ্ধি পায়। ভাব-মর্যাদা অক্ষুণ্ন থাকে এবং আত্মমার্যাদা ও সম্মানবোধ বৃদ্ধি পায়।

জাকাতের বিধান ও তাৎপর্যের কথা বর্ণনা করতে গিয়ে মহান আল্লাহতায়ালা তাঁর মহিমান্বিত কুরআনে বলেন ‘আর তোমরা নামাজ কায়েম কর, জাকাত আদায় কর’। (সূরা বাকারা : ৪৩)। তাছাড়া আরও বহু আয়াতে জাকাতের কথা উল্লেখ করেছেন।

আর রাসূল (সা.) তার হাদিসের ভান্ডার থেকে বর্ণনা করেছেন জাকাতের বিশেষ গুরুত্ব সংবলিত অনেক হাদিস। বান্দাকে জাকাত আদায়ে উৎসাহিত করেছেন হাদিস শুনিয়ে। জাকাতের গুরুত্ব বোঝা যায় নিুোক্ত হাদিস থেকে।

হজরত আবু সায়ীদ (রা.) বর্ণনা করে বলেন ‘একদা রাসূল (সা.) আমাদের নসিহত করছিলেন। তিনবার শপথ করে তিনি বললেন, যে ব্যক্তি পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়বে, রমজানের রোজা রাখবে, জাকাত প্রদান করবে এবং সব ধরনের কবিরা গুনাহ থেকে বিরত থাকবে আল্লাহতায়লা তার জন্য অবশ্যই বেহেশতের দরজা খুলে দিয়ে বলবেন, ‘তোমরা নিরাপদে তাতে প্রবেশ কর’ (নাসায়ি শরিফ : ২৩৯৫)।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *