চীন কি পারবে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ থামাতে?

চীন কি পারবে ইউক্রেন-রাশিয়ার যুদ্ধ থামাতে?

আন্তর্জাতিক স্লাইড

এপ্রিল ২৮, ২০২৩ ৮:২৬ পূর্বাহ্ণ

‘ইউক্রেন থেকে মধ্যপ্রাচ্য’ বিশ্বের আঞ্চলিক সব সংকট সমাধানে মধ্যস্থতাকারী হিসাবে নিজের অবস্থান জানান দিচ্ছে চীন।

যুদ্ধ শুরুর পর বুধবার প্রথমবার ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কিকে ফোন করেন চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। ফোনালাপে প্রেসিডেন্ট শি জেলেনস্কিকে বলেছেন, ‘ইউক্রেন নিয়ে আমাদের মূল অবস্থান শান্তি আলোচনার প্রচার করা। এ ছাড়াও একটি রাজনৈতিক বিরোধের সম্ভাব্য মীমাংসা খুঁজে পেতে সহায়তা করতে একটি প্রতিনিধি পাঠাতে আগ্রহী চীন।

প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে থাকবেন ২০০৯ থেকে ২০১৯ সাল পর্যন্ত রাশিয়া ও চীনের রাষ্ট্রদূত লি হুই।’ জেলেনস্কি বলেছেন, ‘প্রেসিডেন্ট শি’র ফোনকল ও চীনে ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূতের নিয়োগ। দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের উন্নয়নে একটি শক্তিশালী প্রেরণা।’

তবে পশ্চিমারা সতর্কতামূলক প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে, ইইউ বলেছে, এটি একটি  গুরুত্বপূর্ণ ও দীর্ঘ সময়ের অপেক্ষাকৃত প্রথম পদক্ষেপ। একজন ফরাসি কর্মকর্তা বলেন, প্যারিস সব সংলাপকে উৎসাহিত করে। যা সংঘাতের সমাধানে অবদান রাখতে পারে। কিভের মৌলিক স্বার্থকে আন্তর্জাতিক আইনের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ রেখে কাজ করতে পারে।

যুক্তরাষ্ট্রও এই টেলি আলাপকে স্বাগত জানিয়েছে। হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তা মুখপাত্র জন কিরবি এটিকে ভালো সিদ্ধান্ত বলে অভিহিত করেছেন। তবে তারা পুতিনের সাথে শি’র বন্ধুত্বের কথা উল্লেখ করে তার নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে। সেই হিসাবে চীনের সম্পৃক্ততা ইউক্রেন সংঘাতকে একটি অর্থপূর্ণ শান্তি আন্দোলন, পরিকল্পনা বা প্রস্তাব পর্যন্ত নিয়ে যাবে কিনা তা এখনো স্পষ্ট নয়।

তবে মস্কো এই ফোনকলের জন্য জেলেনস্কির বিরুদ্ধে শান্তি প্রচেষ্টাকে দুর্বল করার জন্য অভিযুক্ত করেছে। সিডনি-ভিত্তিক ভাষ্যকার এবং সাবেক চীনা কূটনীতিক হান ইয়াং বুধবার শির একটি টুইট মন্তব্যে বলেন, ‘পরমাণু যুদ্ধে কোনো বিজয়ী নেই। মূলত শি জেলেনস্কিকে পুতিনের আঞ্চলিক দাবি মেনে নেওয়ার জন্য চাপ দিচ্ছেন। চীন মূলত বলতে চাইছে যদি আপনি (জেলেনেস্কি) তা না করেন। তবে আলোচনা শুরু করুন।  রাশিয়ার বোমা ফেলার সম্ভাবনা রয়েছে এবং এটি আপনার ওপর থাকবে।

সিঙ্গাপুরের ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি (এনইউএস)-এর রাষ্ট্রবিজ্ঞানের সহযোগী অধ্যাপক জা ইয়ান চং বলেন, জেলেনস্কির সাথে শির ফোন আলাপটি ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনের উপর ১২ দফা প্রস্তাবনার অনুসরণ হতে পারে। এছাড়াও এটি রুশ-ইউক্রেন সংঘাত নিরসনের চেষ্টার একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ। যেখানে একটি সর্বোচ্চ স্তরের যোগাযোগ পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এমনকি যেকোনো অগ্রসরমূলক আলোচনার জন্য বিশ্বাসযোগ্যভাবে রাশিয়াকে সম্মত করতে সহায়ক হতে পারে।

আরও একজন বিশ্লেষক বিল বিশপ লিখেছেন, এই ফোনকলের মাধ্যমে বেইজিং ইঙ্গিত দিতে পারে যে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) চীনের প্রতি কঠোর কণ্ঠস্বর নরম করতেই দেশটি ইউক্রেনের হয়ে শান্তি আলোচনায় ইচ্ছক। এছাড়াও এটি ইইউ এবং যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে কিছুটা দূরত্ব স্থাপনের লক্ষ্যেও হতে পারে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *