এবার হিজরি নববর্ষের প্রথম প্রহরে পবিত্র কাবাঘরকে নতুন গিলাফ বা কিসওয়া দিয়ে মোড়ানো হবে। আরবরা কাবাঘরকে আবৃত করে রাখা গিলাফকে বলেন কিসওয়া।
স্থানীয় সময় আজ মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) সন্ধ্যায় গিলাফ পরিবর্তনের কার্যক্রম শুরু হবে।
মসজিদুল হারাম ও মসজিদে নববী বিষয়ক জেনারেল প্রেসিডেন্সি কাবার গিলাফ পরিবর্তনের সঙ্গে সম্পর্কিত সমস্ত বিভাগের প্রস্তুতি সম্পন্নের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গিলাফের মান অক্ষুণ্ন রেখে প্রশিক্ষিত ১৫ কর্মকর্তা পুরো কাজ আঞ্জাম দেবেন। সৌদি সংবাদমাধ্যম আরব নিউজ এ তথ্য জানায়।
গিলাফ প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান কিং আবদুল আজিজ কমপ্লেক্সের আন্ডার সেক্রেটারি-জেনারেল আমজাদ আল-হাজমি জানান, পবিত্র কাবাঘরের গিলাফ তৈরির কাজটি কমপ্লেক্সের উচ্চ-দক্ষতাসম্পন্ন কর্মকর্তারা করে থাকেন। সেলাইয়ে বিশেষ দক্ষতা রয়েছে এমন ব্যক্তিরা এ কাজে অংশ নেন। সেলাইয়ের পর গিলাফটি যেন দেখতে দৃষ্টিনন্দন লাগে তা নিশ্চিত করা হয়।
এদিকে মক্কার গ্র্যান্ড মসজিদে গিলাফ রক্ষণাবেক্ষণ বিভাগের প্রধান ফাহদ আল-জাবরি জানান, পবিত্র কাবাঘরের গিলাফ পরিবর্তন নিয়ে ১৫ সদস্যের দলকে বিশেষ প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তা ছাড়া সুশৃঙ্খলভাবে এ কাজ সম্পন্ন করতে বিশেষ সরঞ্জামও প্রস্তুত করা হয়েছে। সদস্যদের সাতটি ক্রেনের সাহায্যে গিলাফ পরিবর্তনের বিভিন্ন ধাপের সঙ্গে পরিচিত করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, এ বছর এই গিলাফ বা কিসওয়া তৈরিতে প্রতি মিটারে ১০ ধাপে ব্যবহৃত হয় ৯ হাজার ৯০০ রেশমি সুতা। প্রথম ধাপে রেশমি সুতাকে নির্দিষ্ট তাপমাত্রায় পানি দিয়ে ধুয়ে নেয়া হয়। পরের ধাপে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার পানি দিয়ে ধোয়া হয় যাতে তাতে থাকা মোমজাতীয় বস্তু সরে যায়। তৃতীয় ধাপে সুতার রঙিনের মান যাচাই করা হয়। পরের ধাপে প্রতি মিটারের বুনায় ৯ হাজার ৯০০ সুতা ব্যবহৃত হয়। পঞ্চম ধাপে পবিত্র কোরআনের আয়াতের ছাপ দেওয়া হয়। এর পর হাতের এমব্রয়ডারির মাধ্যমে ওই গিলাপে আয়াত তুলে আনা হয়।
সপ্তম ধাপে কোরআনের আয়াত ও ইসলামিক বাণীগুলো সোনায় মোড়ানো সিলভার সুতা দিয়ে বোনা হয়। এর পর তাদের মান যাচাই করা হয়। নবম ধাপে গিলাফের কাপড়গুলোকে সমন্বয় করা হয়। শেষ এবং দশম ধাপে পুরোনো গিলাফটি সরিয়ে নতুন গিলাফে আবৃত করা হয় কাবা শরিফকে।পুরো প্রক্রিয়াটি শেষ হয় কাবার শরিফের প্রবেশ দরজায় পর্দা লাগানোর মধ্যে দিয়ে।