তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রিসেপ তাইয়েপ এরদোগান বলেছেন, সন্ত্রাসীদের ফিরিয়ে না-দেলে পশ্চিমা সামরিক জোট ন্যাটোতে সুইডেনের যোগ দেওয়ার চেষ্টায় তুরস্ক সায় দেবে বলে প্রত্যাশা করা উচিত না।
বুধবার (১৮ মে) ক্ষমতাসীন একে পার্টির পার্লামেন্ট সদস্যদের তিনি আরও বলেন, জোটে আশ্রয় পেতে সুইডেন ও ফিনল্যান্ডের প্রতিনিধিদের তুরস্কে আসাও উচিত হবে না।
এরআগে ন্যাটোতে যোগ দিতে আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন করেছে ফিনল্যান্ড ও সুইডেন। ইউক্রেনে রাশিয়ার সামরিক অভিযানের পর তারা এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তুরস্কের আপত্তি সত্ত্বেও জোটের সদস্য হওয়ার প্রক্রিয়ায় তাদের কয়েক সপ্তাহ লেগে যেতে পারে।-খবর রয়টার্সের
আংকারা বলছে, সন্ত্রাসী গোষ্ঠীর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট লোকদের আশ্রয় দিয়েছে সুইডেন। যাদের মধ্যে কুর্দিস্তান ওয়ার্কাস পার্টির সদস্য থেকে শুরু করে ফেতুল্লাহ গুলেনের লোকজনও আছে। ২০১৬ সালে এরদোগানের বিরুদ্ধে সামরিক অভ্যুত্থান চেষ্টার জন্য ফেতুল্লাহ গুলেনের সম্পৃক্ততাকে দায়ী করা হয়েছে।
এরদোগান বলেন, সন্ত্রাসী সংগঠনের হামলা থেকে সীমান্ত রক্ষার সংবেদনশীলতা আমাদের আছে। কুর্দিদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ন্যাটো মিত্ররা কখনোই তুরস্ককে সহায়তা করেনি। ন্যাটোর সম্প্রসারণ কেবল সম্মানের জায়গা থেকে আমাদের কাছে অর্থবহ।
তুরস্কের রাষ্ট্রীয় সম্প্রচার মাধ্যম টিআরটি জানিয়েছে, ৩৩ ব্যক্তির প্রত্যার্পণে সুইডেন সাড়া না-দিলে ন্যাটোতে সুইডেনের আবেদনে সায় দেওয়া হবে না। আর প্রশ্ন রেখে এরদোগান বলেন, আপনারা সন্ত্রাসীদের ফেরত দেবেন না, আবার ন্যাটোর সদস্য পদ পেতে চাচ্ছেন? ন্যাটো একটি নিরাপত্তা সংস্থা। কাজেই একটি নিরাপত্তা সংস্থা নিরাপত্তা-বঞ্চিত হবে, আর তাতে আমরা হ্যাঁ বলতে পারি না।
তবে সুইডেন ও ফিনল্যান্ডের ন্যাটোতে যোগদন সফল হবে বলে মন্তব্য করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। কীভাবে আংকারার আপত্তিকে অগ্রাহ্য করবেন প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, দুই নর্ডিক দেশের ন্যাটোতে যোগদানে আমরা সায় দিতে যাচ্ছি।
এরদোগানের প্রধান পররাষ্ট্রবিষয়ক উপদেষ্টা ইব্রাহীম কালিন বলেন, তুরস্কের জাতীয় নিরাপত্তা উদ্বেগ সুরাহা করতে বাস্তবিক পদক্ষেপ নেওয়ার পরই কেবল তাদের ন্যাটোতে যোগ দেওয়ার চেষ্টা সফল হতে পারে।
সিরিয়ায় ওয়াইপিজি যোদ্ধাদের অস্ত্র সরবরাহের মাধ্যমে ন্যাটো মিত্ররা সন্ত্রাসীদের সমর্থন দিচ্ছে বলে এরদোগানের অভিযোগ। এ নিয়ে আংকারার সঙ্গে ওয়াশিংটনসহ বিভিন্ন পশ্চিমা দেশের মতপার্থক্য রয়েছে।
২০১৯ সালে সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে একটি নিরাপদ অঞ্চল গড়ে তুলরতে তুরস্কের পরিকল্পনায় বড় ধরনের আন্তর্জাতিক সমর্থন পাওয়া যায়নি। মূলত ১০ লাখ সিরীয় শরণার্থীকে ওই অঞ্চলে নিরাপদ প্রত্যাবর্তনের সুযোগ করে দিতে চেয়েছে তুরস্ক। এ নিয়েও তুরস্কের প্রেসিডেন্টের ক্ষোভ রয়েছে।