ইমরান খানকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে পাকিস্তানে সেনানিবাসে হামলা

আন্তর্জাতিক স্লাইড

মে ১০, ২০২৩ ৯:০০ পূর্বাহ্ণ

পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে গ্রেফতারের জেরে দেশটির লাহোর সেনানিবাসে হামলা চালিয়েছে তার দল তেহরিক-ই-ইনসাফের (পিটিআই) বিক্ষুব্ধ কর্মী-সমর্থকেরা। অন্যদিকে রাওয়ালপিন্ডিতে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর সদর দপ্তরের সামনেও জড়ো হয়ে বিক্ষোভ করেছে পিটিআই সমর্থকেরা।

ইমরান খানকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে গোটা পাকিস্তানজুড়েই বিক্ষোভ শুরু করছেন তার দলের কর্মী-সমর্থকেরা। বিভিন্ন স্থানে পিটিআইয়ের কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে নিরাপত্তা বাহিনীর সংঘর্ষের ঘটনা ঘটছে। বিভিন্ন শহরে ১৪৪ ধারা জারি করেও বিক্ষোভ ঠেকানো যাচ্ছে না।

এদিকে ইমরান খানকে আদালত চত্বর থেকে গ্রেফতার করায় কর্তৃপক্ষের প্রতি সমন জারি করেছেন হাইকোর্ট। এ গ্রেফতারের ব্যাখ্যা জানতে চাওয়া হয়েছে। তবে গ্রেফতারের পরপরই পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রানা সানাউল্লাহ বলেছেন, ন্যাশনাল অ্যাকাউন্টিবিলিটি ব্যুরো (এনএবি) ইমরান খানকে গ্রেফতার করেছে। একাধিকবার নোটিশ দেওয়ার পরও হাজির না হওয়ায় তাকে গ্রেফতার করেছে এনএবি।

রানা সানাউল্লাহ বলেন, যুক্তরাজ্যের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিংয়ের অভিযোগ এনেছিল। ওই ব্যক্তি আবাসন ব্যবসায়ী। তার কাছ থেকে ইমরান ও তার স্ত্রী ২ কোটি ৪৭ লাখ মার্কিন ডলার সমমূল্যের জমি নিয়েছেন। তিনি বলেন, ব্রিটিশ সরকারের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ মানি লন্ডারিংয়ের ২৪ কোটি ডলার পাকিস্তানকে ফেরত দিয়েছিল। কিন্তু সেই অর্থ ইমরান খান সরকারি কোষাগারে জমা না দিয়ে ওই ব্যবসায়ীকে ফেরত দিয়েছিলেন।

ইমরান খান এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তবে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে দুর্নীতির অভিযোগ এনে এনএবি তার বিরুদ্ধে ১ মে পরোয়ানা জারি করে। শুধু এই একটি মামলা নয়। ক্ষমতা ছাড়ার পর ইমরান খানের বিরুদ্ধে ১০০টির বেশি মামলা হয়েছে।

ইমরান খানকে গ্রেফতারের পরপরই দেশ অচল করে দেওয়ার ডাক দিয়েছেন তার দল পিটিআইয়ের নেতা-কর্মীরা। সমর্থকদের রাজপথে নেমে আসতে বলা হয়েছে। পিটিআইয়ের টুইটার হ্যান্ডেল থেকে লেখা হয়েছে, ‘পাকিস্তানের জনগণ—এখন আপনাদের সময়। ইমরান খান সব সময় আপনাদের পাশে ছিলেন। এখন সময় তার পাশে দাঁড়ানোর।’

দলটির পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, জ্যেষ্ঠ নেতারা এরইমধ্যে জরুরি বৈঠকের ডাক দিয়েছেন। কী কী পদক্ষেপ নেয়া হবে, তা ওই বৈঠক থেকে ঠিক করা হবে।

দলের নেতাদের ডাকে সাড়া দিয়ে পাকিস্তানের বিভিন্ন শহরে ব্যাপক বিক্ষোভ শুরু হয়েছে। রাজধানী ইসলামাবাদে ১৪৪ ধারা জারির পরও সেখানে বিক্ষোভ হয়েছে। সেখানে পুলিশের পাঁচ কর্মকর্তা আহত হয়েছেন। বিক্ষোভ দমনে ৪৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।

ইমরানের নিজের শহর লাহোরে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। সেখানে সেনানিবাসে সেনা কর্মকর্তাদের আবাসিক এলাকায় হামলা চালিয়েছেন তার সমর্থকেরা। সেনানিবাসে বিভিন্ন ভবনে তাদের ভাঙচুর চালাতে দেখা গেছে।

বিক্ষোভ হয়েছে বেলুচিস্তানের কোয়েটায়। সেখানেও সেনানিবাসের বাইরে বিক্ষোভ করেছেন পিটিআইয়ের সমর্থকেরা। বন্দরনগরী করাচিতে বিক্ষোভ হয়েছে। সেখানে আগুন দেওয়া হয়েছে যানবাহনে।

পেশোয়ারের ১৪৪ ধারা জারি করার পরও সেখানে ব্যাপক বিক্ষোভ হয়েছে। কোয়েটা, মুলতান ও পেশোয়ারের বিভিন্ন স্থানের ভিডিওতে দেখা যায়, হাজারো বিক্ষোভকারী রাস্তায় নেমে এসেছেন। রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করছেন তারা। বিভিন্ন স্থানে গাড়ি ভাঙচুর ও জ্বালিয়ে দিয়েছেন বিক্ষুব্ধ ইমরান-সমর্থকেরা।

সূত্র: জিও নিউজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *