আলমডাঙ্গা বিদ্যুৎ অফিসের ভারপ্রাপ্ত প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ

দেশজুড়ে

ডিসেম্বর ৭, ২০২৩ ১:১০ অপরাহ্ণ

নিউজ ডেস্ক,

খুলনা বিভাগীয় বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরন বিভাগ ওয়েষ্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রবিউশন কোম্পানী (ওজোপাডিকো) চুয়াডাঙ্গা জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার,আলমডাঙ্গা ডিস্ট্রবিউশন হাউজের (ওজোপাডিকো) ভারপ্রাপ্ত আবাশিক প্রকৌশলী মুন্সি জহুরুল ইসলাম এর বিরুদ্ধে স্বেচ্ছাচারিতা, অনিয়ম,দুর্নীতি ও গ্রাহকের নিকট হতে বিভিন্ন ভাবে অর্থ আদায় ও গ্রাহককে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে বিদ্যুৎ বিক্রয় ও বিতরন সিষ্টেম লস গ্রাহকসেবা উন্নয়ন এবং অনিয়ম দুর্নীতি রোধের লক্ষ্যে ২০০৭ সালের ১৬ই
ডিসেম্বর দেশের দক্ষিণ পশ্চিমাঞ্চলের ২১টি জেলা নিয়ে গঠন করা হয় ওয়েষ্ট জোন পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন কোম্পানী (ওজোপাডিকো)। কোম্পানী গঠনের ১৬ বৎসর নিয়ম মেনে চলে আসছিলো ওজোপাডিকোর আলমডাঙ্গা ওজোপাডিকো জোনের কার্জক্রম। কিন্তু বর্তমানে আলমডাঙ্গার আবাশিক প্রোকৌশলী মুন্সি জহুরুল ইসলাম দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই
আলমডাঙ্গায় দুর্নীতির মহোৎসব শুরু হয়েছে।

বর্তমান সময়ে বিদ্যুতের লুজ কন্টাক্ট কমানোর নামে গ্রাহকের মূল সংযোগে সার্ভিস ক্লাম লাগানোর কথা বলে অফিসের বাইরের নিজস্ব লোকবল দিয়ে গ্রাহক প্রতি ১০০ টাকা থেকে শুরু করে বিভিন্ন পরিমানে অর্থ গ্রহণের অভিযোগ উঠেছে।এ বিষয় নিয়ে শহর জুড়ে চলছে আলোচনা সমালচনার ঝড়।

সারোজমিনে গিয়ে অভিযোগের সত্যতা মেলে। দেখা যায় গ্রাহকের বাড়ি বাড়ি থেকে মিটার প্রতি ১০০ টাকা করে নিয়ে গ্রাহকের সার্ভিস তারের মাথায় একটি ক্লাম লাগানোর চিত্র, ক্লাম লাগানোর কাজে ব্যস্ত থাকা শ্রমিকদের কাছে জানতে চাইলে তারা বলেন স্যারের নির্দেশে সকল গ্রাহকের সার্ভিস তার মূল লাইনের তারের সাথে ক্লাম দিয়ে আটকানো হচ্ছে, এটা প্রতিটি গ্রাহককেই করা লাগবে। কারণ এই ক্লাম দিয়ে তার আটকালে কখনো তার লুস কানেকশন হবে না।১০০ টাকা করে নেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে কর্মরত শ্রমিকরা বলেন এটা আর স্যারের নির্দেশ। এটা সরকারি কোন কাজ না এটি একটি প্রকল্পের কাজ।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আলমডাঙ্গা পৌর এলাকার বাবুপাড়ার এক গ্রাহক বলেন প্রথমে আমাদের নিকট থেকে ৩০০ টাকা করে চাওয়া হয়েছিল কিন্তু আমরা টাকা না দিতে চাওয়াই আমাদেরকে বলেছিল এই ক্লাম করাই লাগবে এটা আরি স্যারের নির্দেশ। পরবর্তীতে আমরা বাধ্য হয়েই মিটার প্রতি ২০০ টাকা করে দিতে বাধ্য হয়েছি। আপনারাই বলেন স্বাধীন দেশে এ কোন রাম রাজত্ব,আকাশে মেঘ হলেই থাকে না বিদ্যুৎ,আবার নানা বাহানায় আরি অফিস আমাদের কাছ থেকে বিভিন্ন সময় বিভিন্ন পরিমানে টাকা নিচ্ছে,আসলে আমরা সাধারণ গ্রাহকেরা কি করব,আমরা এক প্রকার জিম্মী হয়ে গেছি বিদ্যুৎ অফিসের কাছে।

এ বিষয়ে পৌর এলাকার এরশাদপুর গ্রামের এক নারী গ্রাহক বলেন, আমার স্বামী বাড়িতে না থাকায় আমি তাদের চাহিদা অনুযায়ী ১০০ টাকা দিতে পারিনি। তাই তারা আমার লাইনে ক্লাম না লাগিয়েই চলে গেছে, তারা বলে গেছে এই ক্লাম না লাগালে লাইনে কোন সমস্যা হলে আর ঠিক করে দেওয়া হবে না। আমার স্বামী একজন দিনমজুর সংসার চালিয়ে কারেন্টের বিল দিতে গিয়ে হিমশিম খায়, আবার টাকা কোথা থেকে দেবো আমরা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আরো একজন গ্রাহক বলেন, কিছুদিন আগে আমি আমার বাড়ি লাইনে একটু সমস্যা নিয়ে আরি সাহেবের কাছে গিয়েছিলাম, তিনি আমার কোন কথা না শুনেই লাইনে সমস্যার জন্য আমাকেই দায়ি করেন, আমি কথা বলার চেষ্টা করলে তিনি আমাকে বলেন বেশি কথা বল্লে তোমার বাড়ির লাই আজিবনের জন্য কেটে দেওয়া হবে। তারপর তিনি এক প্রকার জোর করেই আমাকে ধাক্কা দিয়ে তার অফিস থেকে বের করে দেন।

এ বিষয়ে ওজপাডিকো আলমডাঙ্গা অফিসে গিয়ে আলমডাঙ্গা ডিস্ট্রবিউশন হাউজের (ওজোপাডিকো) ভারপ্রাপ্ত আবাশিক প্রকৌশলী মুন্সি জহুরুল ইসলামকে না পেয়ে মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে, তিনি বলেন এটি কোন সরকারি বা প্রকল্পের কাজ নয়, ক্লাম লাগানোর বিষয়ে তিনি জানেন কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন আমি জানি, গ্রাহকের কাছ থেকে টাকা নেওয়ার কোন সরকারি নিয়ম বা অনুমতি আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, টাকা নিচ্ছে তাতে কি হয়েছে, গ্রাহকের কাজ করে টাকা নিতেই পারে। এটা অফিসিয়াল কাজ কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন এটা অফিসিয়াল কোন কাজ হোক বা না হোক তাতে আপনার কি, টাকা নেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন আমি এই ভাবে টাকা নিয়ে ৪০ তলা বিল্ডিং করবো আপনি পারলে কিছু করেন। আর যদি ভাগ নিতে চান তা হলে অফিসে আসেন।

এ বিষয়ে চুয়াডাঙ্গা জেলা বিদ্যুৎ অফিসের নির্বাহী প্রকৌশালী পলাশ কুমার ঘোষ বলেন, ক্লাম লাগানোর বিষয়ে আমাদের কোন অফিসিয়াল নির্দেশনা নেই। আমার জানা মতে এটি কোন সরকারি বা প্রকল্পের কাজ নয়। যদি গ্রহক সেবার জন্য কেউ এই কাজ করে থাকে তবে টাকা নেওয়ার কোন নিয়ম নাই। যদি কেউ এই কাজ করে থাকে তবে তা নিয়ম বহির্ভূত।

ওজোপাডিকো লিঃ খুলনা এর অতিরিক্ত সচিব, সমন্বয়, বিদ্যুৎ বিভাগ ও চেয়ারম্যান পরিচালনা পরিষদ ওজোপাডিকো এস এম এনামুল কবির বলেন, কোনভাবেই বিষয়টি এমন হবার নয়, সার্ভিস ক্লাম(কানেক্টর) লাগানোর বিষয়ে অফিসিয়াল কোন নির্দেশনা নেই। আর কোন গ্রাহকের কাছ থেকে যদি কোন প্রকার অর্থ বেআইনি ভাবে গ্রহণ করে থাকে তবে সেই বেআইনি কাজের দায় তাকেই নিতে হবে। যেহেতু আলমডাঙ্গা ওজোপাডিকোর আবাসিক প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে অনৈতিকভাবে অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে, অবশ্যই এ বিষয়ে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

সূত্র,( দৈনিক সময়ের সমীকরণ)

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *