রাশিদা হক কনিকা
প্রখ্যাত সাহিত্যিক ও সাংবাদিক আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরীর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে তাঁর কফিনে পুষ্পডালা অর্পণ করেছেন বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের নেতৃবৃন্দ। ২৮ মে, শনিবার দুপুর ১টায় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী সভাপতি অ্যাডভোকেট ড. মশিউর মালেক এর নেতৃত্বে সংগঠনের নেতৃবৃন্দ তাঁর কফিনে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন।
এ সময় সংগঠনের নেতৃবৃন্দের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সহ সভাপতি মোহাম্মদ আব্দুস সালাম, ডাঃ এম এ সালাম এবং শিক্ষা সম্পাদক ড. আবু তাহের ছাড়াও ছিলেন গবেষক ড. মাহবুবুর রহমান, পরিবেশ সম্পাদক পরিক্ষীত বিশ্বাস, সহ সম্পাদক ডেভিড হালদার, সাংস্কৃতিক সম্পাদক আক্তার হোসেন, কেন্দ্রীয় সদস্য মোহাম্মদ আযাদ হোসেন। এ সময় নগর কমিটির নেতাদের মধ্যে ছিলেন সহ সভাপতি শেখ জালাল আহমেদ, যুগ্ম সম্পাদক মিলি চৌধুরী, ধর্ম বিষয়ক সম্পাদক মাওলানা খায়রুল ইসলাম।
শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে এক সাক্ষাৎকারে সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী সভাপতি ড. মশিউর মালেক বলেন, মরহুম আবদুল গাফ্ফার চৌধুরী ছিলেন একজন অকূতোভয় কলম যোদ্ধা। দেশের স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনা সহ অসাম্প্রদায়িক বাঙালি সংস্কৃতির একজন নির্ভীক অতন্দ্র প্রহরী। তিনি প্রবাস জীবনে থেকেও এই প্রহরার কাজ চালিয়েছেন। ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্টে জাতির পিতার হত্যার পরে যখন বাঙালি জাতীয়তাবাদ ও ধর্মনিরপেক্ষতা সহ মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতার চেতনা সহ বাঙালি সংস্কৃতির ঐতিহ্য ম্লান করার চেষ্টা শুরু হয় তখনই তিনি তাঁর লেখনীর দ্বারা মানুষকে সতর্ক ও সচেতন করেছেন, মানুষকে প্রতিবাদী হয়ে উঠতে মানুষের চেতনাকে শাণিত করেছেন। এ সময় তিনি সকল প্রকার ভয়, ভীতি ও লোভ উপেক্ষা করেছেন। প্রবাস জীবনে অর্থকষ্টে থেকেও তিনি জিয়া-এরশাদের লোভনীয় সুযোগের প্রস্তাব ঘৃণাভরে প্রত্যাখ্যান করেছেন। ন্যায় ও সত্যের প্রশ্নে কোন ভুলের জন্য তিনি তাঁর পক্ষের শক্তি বা ব্যক্তির ভুল ধরিয়ে শুধরে দিতে কুণ্ঠিত হননি। এজন্য কোন কোন সময়ে হয়তো তিনি কারো কারো বিরাগভাজনও হয়েছেন কিন্তু তা আমলে নেননি। তিনি তাঁর লেখনী দ্বারা শাসক শোষকদের যেমন সাবধান করেছেন তেমনি জাতিকে করেছেন সতর্ক এবং উজ্জীবিত।
তিনি আরও বলেন, জাতির জন্যে তিনি ছিলেন সত্যিকারের একজন অভিভাবক ও পথ নির্দেশক। তাঁর অমর সৃষ্টি “আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙানো একুশে ফেব্রুয়ারী, আমি কী ভুলিতে পারি” গানটি যেমন বাংলাদেশ ও বাংলা ভাষা যতদিন থাকবে ততদিন বাঙালী মাত্রই গাইবে তেমনি প্রতিটি বাঙালীর হৃদয়ে আব্দুল গাফ্ফার চৌধুরীর নাম চিরভাস্বর হয়ে থাকবে। জাতি কখনোই তাঁর অভাব পূরণ করতে পারবে না।
পরিশেষে বঙ্গবন্ধু ফাউন্ডেশনের উপস্থিত নেতৃবৃন্দ মরহুম আব্দুল গাফফার চৌধুরীর আত্মার মাগফিরাত কামনা করেন।