আফগানিস্তানে তালেবান শাসনের দুই বছর আজ

আফগানিস্তানে তালেবান শাসনের দুই বছর আজ

আন্তর্জাতিক স্লাইড

আগস্ট ১৫, ২০২৩ ১০:৫৫ পূর্বাহ্ণ

আফগানিস্তানে তালেবান শাসনের আজ দুই বছর পূর্ণ হলো। দুই বছরে কেমন কাটল আফগানদের জীবন? স্থানীয়দের সঙ্গে আলাপচারিতা শেষে পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলো বলছে, আতঙ্ক আর হতাশার জাল ছেয়ে আছে পুরো আফগানজুড়ে। তবে তালেবান আসার পর সবচেয়ে বেশি বিপদে পড়েছেন দেশটির বিচার বিভাগের কর্মীরা। প্রাণ হারানোর শঙ্কায় গুটিয়ে আছেন রাজধানী কাবুল থেকে শুরু করে প্রত্যন্ত অঞ্চলের আইনজীবীরা। উঠতে-বসতে মৃত্যুভয়ে দিন কাটাচ্ছেন হাজার হাজার উকিল ও বিচারক। দ্য গার্ডিয়ান, এএফপি, তোলো নিউজ

যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ২০ বছর যুদ্ধের পর তালেবানরা আফগানিস্তানে আবার ফিরে আসে। ২০২১ সালের আগস্ট মাসের ১৫ তারিখে ক্ষমতায় আসে। তারপর থেকে জেলে বন্দি থাকা তালেবানদের মুক্তি দিতে শুরু করেন। যাদের ক্ষমতায় আসার কয়েক মাস আগে দোষী সাব্যস্ত করে বন্দি করা হয়েছিল। অপরাধীরা জেল থেকে বের হয়ে প্রতিশোধ নিতে চান। তখন থেকেই মৃত্যুভয়ে জীবন পার করছেন প্রসিকিউটর ও আইনিকর্মীরা। তাদের মধ্যে একজন সারা (নিরাপত্তার খাতিরে নাম পরিবর্তন করা হয়)। বয়স ২৮। ছিলেন আফগান অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিসের প্রায় ৬ হাজার কর্মীদের মধ্যে একজন। হত্যা, ধর্ষণ ও জোরপূর্বক বিয়েসহ নারীর বিরুদ্ধে অপরাধের ২ হাজারেরও বেশি মামলায় কাজ করেন। তালেবানের ক্ষমতা দখলের পর মামলাগুলো বাতিল করা হয়। সারা গার্ডিয়ানকে জানান, দোষী সাব্যস্ত করা সব অপরাধীকে ছেড়ে দেওয়া হয়। কারণ, অপরাধীরা ছিলেন তাদেরই অংশ। তারপর থেকেই তাকে ও তার পরিবারকে হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। মাহমুদি বলেন, তালেবানদের অ্যাটর্নি জেনারেলের কার্যালয় দখলের পর যেসব পুরুষ ও মহিলা আইনজীবী, প্রসিকিউটর ও বিচারক কাজ করতেন তাদের সেখান থেকে বের করে দেওয়া হয়। বলেন, আমাদের কর্মীরা অপরাধীদের কাছে দুর্বল হয়ে পড়েছে। আফগানিস্তানের স্বাধীন আইনি ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।

তালেবানদের ক্ষমতায় আসা নাটকীয়ভাবে পরিবর্তন করে নারীদের জীবন। বন্ধ করে দেওয়া হয় তাদের স্বাধীনতা। স্কুল, কলেজে যাওয়ার পথ বন্ধ হওয়া থেকে শুরু করে বন্ধ হয়ে যায় তাদের আয়ের পথ। মেয়েদের জীবন ছাড়াও বিষিয়ে উঠেছে কৃষকদের জীবন। তালেবান ক্ষমতায় আসায় বিলিয়ন ডলারের আন্তর্জাতিক সাহায্য বন্ধ হওয়ার পর সংকটে পড়ে দেশটি। ফলে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ধসে পড়েছে। দেশের প্রায় ৮৫ শতাংশ দারিদ্র্যের মধ্যে বাস করছে। দুই সন্তানের বাবা চিন্তায় ভারাক্লান্ত। বলেন, খাওয়ার টাকা থাকলেও নেই সন্তানদের স্কুলে পড়ানোর টাকা।

এদিকে তালেবান যোদ্ধা থেকে পুলিশে যোগ দেয়। তিনি দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর কান্দাহারের পুলিশ অফিসার। প্রতি মাসে বেতন পান ১২ হাজার আফগানি টাকা। তার পরিবারের জন্য যথেষ্ট। বলেন, আমরা অনেক খুশি, কোনো যুদ্ধ নেই, আল্লহকে ধন্যবাদ তারা ফিরে এসেছে। কাবুলের উত্তরে পারওয়ান প্রদেশের কৃষক রাহাতুল্লা আজিজি (৩৫) যুদ্ধ শেষ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে উন্নত নিরাপত্তার জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *