ইউজিসি কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ইম্প্রুভিং কম্পিউটার অ্যান্ড সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং টারশিয়ারি এডুকেশন প্রকল্পের উদ্বোধন

ইউজিসি কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ইম্প্রুভিং কম্পিউটার অ্যান্ড সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং টারশিয়ারি এডুকেশন প্রকল্পের উদ্বোধন

শিক্ষা

ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০২৪ ১:১৭ অপরাহ্ণ

শওকত আলী হাজারী।।

দেশের শিল্প ও বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানগুলোর চাহিদার সাথে সমন্বয় রেখে দেশের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে দক্ষ জনবল গড়ে তোলার আহবান জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী এম.পি। তিনি শিক্ষার্থীদের নির্ধারিত সাবেজেক্টের বাইরে সফট নলেজের ওপর দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের প্রতি আহবান জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) কর্তৃক বাস্তবায়নাধীন ইম্প্রুভিং কম্পিউটার অ্যান্ড সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ারিং টারশিয়ারি এডুকেশন প্রকল্পের (আইসিএসইটিইপি) উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শিক্ষামন্ত্রী গত ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ রবিবার একথা বলেন।
ইউজিসি অডিটোরিয়ামে অনুষ্ঠিত এ প্রোগ্রামে সভাপতিত্ব করেন ইউজিসি’র চেয়ারম্যান (অতিরিক্ত দায়িত্ব) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ আলমগীর। অনুষ্ঠানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এস এম মাকসুদ কামাল, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সত্য প্রসাদ মজুমদার, যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ আনোয়ার হোসেন এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) কান্ট্রি ডিরেক্টর এডিমন গিন্টিং অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য প্রদান করেন। অনুষ্ঠানে ইউজিসি’র সদস্য অধ্যাপক ড. মো. সাজ্জাদ হোসেন, অধ্যাপক ড. মো. আবু তাহের, অধ্যাপক ড. হাসিনা খান, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক ও ইউজিসি’র সিনিয়র কর্মকর্তা, বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই/আইটি বিভাগের অধ্যাপকবৃন্দ অংশ নেন।
তিনি আইসিএসইটিইপি তিনটি বিশ্ববিদ্যালয়ে বাস্তবায়িত হলেও অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা যেন এ প্রকল্পের সুবিধা ভোগ করতে পারেন সে দিকে নজর দিতে সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর প্রতি আহবান জানান। তিনি আরও বলেন, আইসিটি বিষয়সমূহ সদা পরিবর্তনশীল। তাই পরিবর্তনের সাথে সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের কারিকুলামে পরিবর্তন আনার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।
শিক্ষা মন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী বলেন, দেশের কতিপয় উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সংঘর্ষের ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিরাজমান অচলাবস্থা নিরসনে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও আইন শৃঙ্ক্ষলা রক্ষাকারী বাহিনীকে প্রচলিত আইনের আওতায় কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।তিনি বলেন, অপরাধীর কোন রাজনৈতিক পরিচয় নেই। তাই অপরাধী যে দলেরই হোক দেশের প্রচলিত আইনের যথাযথ প্রয়োগের মাধ্যমে তার বিচার নিশ্চিত করতে হবে।
তিনি আরও বলেন, স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠান হওয়ায় দেশের বিশ্ববিদালয়গুলোতে সংঘটিত সংঘর্ষ কিংবা অপরাধের ঘটনায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের পক্ষে সরাসরি ব্যবস্থা গ্রহণ সমীচীন হয় না। এক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণে উদ্যোগী হলে মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে সবসময় সহযোগিতা প্রদান করা হয়।
সভাপতির বক্তব্যে অধ্যাপক আলমগীর বলেন, দেশের উচ্চশিক্ষায় বিশেষ করে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি খাতে আইসিএসইটিইপি প্রকল্প গুণগত পরিবর্তন নিয়ে আসবে। এ প্রকল্প তথ্য-প্রযুক্তি খাতের শিক্ষার্থীদের দক্ষতা বৃদ্ধি করবে এবং পেশাজীবী ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে জ্ঞানের ব্যবধান কমাবে ও শিল্প-প্রতিষ্ঠানের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের সেতুবন্ধন তৈরি করবে।
তিনি আরও বলেন, এডিবির সহায়তায় বাস্তবায়নাধীন এই ফ্লাগশিপ প্রকল্প ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা ও ২০৪১ সালের মধ্যে স্মার্ট বাংলাদেশ বিনির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। তিনি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে ও যথাযথভাবে প্রকল্পের কাজ শেষ করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন।
ইউজিসি’র পরিকল্পনা ও উন্নয়ন বিভাগের পরিচালক মোহাম্মদ মাকছুদুর রহমান ভূঁইয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে ইউজিসি সচিব ড. ফেরদৌস জামান বক্তব্য রাখেন। অনুষ্ঠানে আইসিএসইটিইপি প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক অধ্যাপক ড. মো. আমিনুল হক আকন্দ প্রকল্পের সার্বিক দিক তুলে ধরেন।
উল্লেখ্য, এই প্রকল্পের আওতায় আইসিটি খাতে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি এবং শিল্প-প্রতিষ্ঠানের সাথে যোগাযোগ ও নেটওয়ার্ক স্থাপন করা হবে। দেশের শ্রম নির্ভর বিভিন্ন খাতকে প্রযুক্তি দক্ষতাসম্পন্ন জনবল সরবরাহের মাধ্যমে উৎপাদন প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আনতে এ প্রকল্প সহায়ক হবে।
ইউজিসি’র তত্ত্বাবধানে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় এবং যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে এ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হবে। প্রকল্পের মাধ্যমে এসব বিশ্ববিদ্যালয়ে সিএসই বিভাগের যুগোপযোগী ক্যারিকুলাম, অবকাঠামো, আধুনিক ল্যাব গড়ে তোলা হবে। এছাড়া, সব বিশ্ববিদ্যালয়ে তথ্য প্রযুক্তি বিষয়ে গবেষণা পরিচালনার জন্য সহায়তা প্রদান করা হবে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে আইসিটি খাতের উন্নয়নে এবং দক্ষ মানবশক্তি গড়ে তোলার জন্য গৃহীত আইসিএসইটিপি প্রকল্পের বাস্তবায়ন ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ১৩০০ কোটি টাকা। মোট ব্যয়ের ৮৭.৭২ শতাংশ বহন করবে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) এবং বাংলাদেশ সরকার বহন করবে বাকি ১২.২৮ শতাংশ।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *