বিনা চিকিৎসায় একযুগ ধরে শিকলবন্দী মানসিক ভারসাম্যহীন মেহনাজ

বিনা চিকিৎসায় একযুগ ধরে শিকলবন্দী মানসিক ভারসাম্যহীন মেহনাজ

দেশজুড়ে

অক্টোবর ১০, ২০২৩ ৬:৪৬ অপরাহ্ণ

মুরাদ শাহ জাবাল, ঝিনাইগাতী (শেরপুর)

শেরপুরের ঝিনাইগাতীতে বিনা চিকিৎসায় একযুগ ধরে শিকলে বাঁধা মানসিক ভারসাম্যহীন মেহনাজ। মেহনাজ (২০) শেরপুর সদর উপজেলার ভূমি অফিস সংলগ্ন ব্রীজপাড় গ্রামের মৃত গোলাম মোস্তফার মেয়ে।

গোলাম মোস্তফার দুই ছেলে, চার মেয়ের মধ্যে মেহনাজ সবার ছোট। তিন মেয়ের বিয়ে হয়েছে। দুই ছেলে দিনমজুর। তারা বিয়ে করে আলাদা। ২০০৮ সালের দিকে মেহনাজ ঝিনাইগাতী মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পঞ্চম শ্রেণিতে পড়াশোনা করতো। এসময় মেহনাজ হঠাৎ করে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে পড়ে।

মেহনাজের হতদরিদ্র পিতা গোলাম মোস্তফা সাধ্যমত মেহনাজের চিকিৎসা করান। কিন্তু কিছুদিন যেতে না যেতেই পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম গোলাম মোস্তফা মারা যান। ফলে মেহনাজের চিকিৎসা বন্ধ হয়ে যায়। চিকিৎসার অভাবে মেহনাজ এদিক সেদিক ছোটাছুটি করতে থাকে। এসময় মেহনাজের মা হাওয়া বেগম মেহনাজকে শিকলে বেঁধে রাখেন মেহনাজকে। এভাবে কিছুদিন যেতে না যেতেই মেহনাজের মা হাওয়া বেগমও মারা যান।

পরবর্তীতে মেহনাজের দায়িত্ব পড়ে মেহেনাজের ভাই হাসানের উপর। হাসান ঝিনাইগাতী উপজেলা সদর বাজারের একজন সিকিউরিটি গার্ড।

মেহনাজের ভাই হাসান জানায়, বিগত ১৩ বছর ধরে বিনা চিকিৎসায় মেহনাজকে এভাবেই শিকলে বেঁধে রাখা হয়েছে। এতে করে তার শারীরিক অবস্থা দিন দিন আরও অবনতির দিকে যাচ্ছে। অর্থের অভাবে তার চিকিৎসা করাতে পারছেন না।

হাসান প্রতিমাসে ৫ হাজার টাকা পান। এ টাকা দিয়েই তার স্ত্রী সন্তান ও মানসিক ভারসাম্যহীন বোনসহ তার সংসার চালাতে হয়। তাই ইচ্ছে থাকলেও অর্থের অভাবে সে বোনের চিকিৎসা করাতে পারছে না বলে জানায়।

এলাকাবাসী বলেন, মেয়েটি সু-চিকিৎসা পেলে হয়তো সুস্থ হতো। কিন্তু তার বড় ভাইয়েরা অত্যন্ত গরীব। দিন আনে-দিন খায়, অর্থের অভাবে চিকিৎসা করাতে না পারায় মেহনাজ সুস্থ্ হচ্ছে না। এমতাবস্থায় হাসান তার বোনের চিকিৎসার জন্য প্রশাসনসহ দেশের দানশীল বিত্তবানদের সু-দৃষ্টি কামনা করেছেন।

আর্থিক সাহায্যে পাঠাতে মেহনাজের ভাই হাসানের মোবাইল নম্বর ০১৯০৮২৩৪৮৮১।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *