নেছারাবাদের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের ফলাফলে জনগণের প্রত্যাশা পূরণ

দেশজুড়ে

মে ২৩, ২০২৪ ৩:১০ অপরাহ্ণ

সোহেল রায়হান, নেছারাবাদ,পিরোজপুর

২১ মে মঙ্গলবার দ্বিতীয় ধাপের উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে আশানুরূপ ফলাফলে নেছারাবাদের জনগনের/ভোটারদের প্রত্যাশা পূরণ হয়েছে। এলাকার বেশির ভাগ মানুষের দাবি একজন সৎ যোগ্য এবং ভাল মানুষ চেয়ারম্যান হিসেবে বিজয়ী হয়েছেন।
নেছারাবাদ উপজেলা মোট ১০ টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত। এর মধ্যে স্বন্ধ্যা নদীর পূর্ব পাড়ে ৪ টি এবং পশ্চিম পাড়ে ৬ টি ইউনিয়ন। এবার এখানে মোট ৮৯ টি কেন্দ্রে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়। নেছারাবাদে বর্তমান ভোটার সংখ্যা – ১৯১৮২৫ জন।

বলা বাহুল্য – এই ১০ ইউনিয়নের মধ্যে নদীর পশ্চিম পাড়কে বলা হয় এই উপজেলার ভোট ব্যাংক। সবথেকে বেশি ভোট বলদিয়া ইউনিয়নে(২৯১৪৩) এর পরের অবস্থানে রয়েছে সোহাগদল ইউনিয়ন(২৭০৮৭)এবং ভোটারের দিক থেকে তৃতীয় অবস্থানে রয়েছে সুটিয়াকাঠি ইউনিয়ন (২৬৫৫৭)। ভোটের আগে তাই পশ্চিম পাড়ের জনমানুষের দাবি ছিল এবারের নির্বাচনে চেয়ারম্যান, ভাইস চেয়ারম্যান, মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান এই তিনটি পদের চেয়ার পশ্চিম পাড়েই থাকবে। বাস্তবিক অর্থে নির্বাচনী ফলাফলের ক্ষেত্রে বেশির ভাগ মানুষের অনুমান সঠিক হয়েছে। এলাকার সাধারণ মানুষ মনে করেন – কেউ ব্যবহার বা সততার কাছে হেরেছে, কেউ টাকার কাছে হেরেছে, কেউ জনপ্রিয়তার কাছে হেরেছে। তবে নির্বাচনী ফলাফল লক্ষ্য করলে দেখা যায় উপজেলা চেয়ারম্যানদ্বয়ের মধ্যে হেভিওয়েট দুই প্রার্থী একজন আলহাজ্ব আব্দুল হক (আনারস) অন্য জন এস এম মুইদুল ইসলাম মুহিদ (মোটরসাইকেল) মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি ভোট যুদ্ধ হয়েছে। তবে বিগত উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রনি দত্ত (দোয়াত কলম) তেমন লড়াই করতে পারেনি। এবারের তিনজন চেয়ারম্যান প্রার্থীই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ নেছারাবাদ উপজেলার রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব। বেসরকারী ফলাফলের ভিত্তিতে নেছারাবাদের চেয়ারম্যান পদে বিগত উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আব্দুল হক আনারস প্রতিক নিয়ে ৭৮০ ভোটের ব্যাবধানে ৩৬৪১২ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বর্তমান নেছারাবাদ উপজেলা আওয়ামী লীগ এর সাধারণ সম্পাদক এস এম মুইদুল ইসলাম মুহিদ মোটরসাইকেল প্রতিক নিয়ে ভোট পেয়েছেন ৩৫৬৩২ এবং তৃতীয় অবস্থানে রয়েছেন বিগত উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান রনি দত্ত দোয়াত কলম প্রতিক নিয়ে ভোট পেয়েছেন ৬৪০৫।


আর ভাইস চেয়ারম্যান পদে পদপ্রার্থী মোট ৫ জনের মধ্যে বিপুল ভোটে বিজয়ী হয়েছেন বিশিষ্ট তরুন ব্যবসায়ী মোঃ শফিকুর রহমান সুমন মাইক প্রতিক নিয়ে ১৯৪৬৪ ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছেন। তার প্রাপ্ত মোট ভোট ৩৪৪২৪। দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছেন রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব এবং সাংবাদিক শিশির কর্মকার চশমা প্রতিক নিয়ে ভোট পেয়েছেন ১৪৯৬০। এরপর মোঃ শহিদুল ইসলাম তালা প্রতিক নিয়ে ১৪৫৬৪ ভোট,মোঃ সোহাগ মিয়া টিউবওয়েল প্রতিক নিয়ে ৯৭৩০ ভোট এবং রাজিব সেন উড়োজাহাজ প্রতিক নিয়ে ভোট পেয়েছেন ৪৭৩৪।

আর মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান পদে পদপ্রার্থী দুই জনের মধ্যে বিজয়ী হয়েছেন ফুটবল প্রতিকের তুলি মন্ডল। তিনি ভোট পেয়েছেন ৪২৫২৩ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কলস প্রতিকের নার্গিস জাহান ভোট পেয়েছেন ৩৫৪৭০ ভোট।


উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে স্বন্ধ্যা নদীর পশ্চিম পাড় থেকে তিনটি পদে পদপ্রার্থী ছিলেন মোট ৪ জন, এর মধ্যে তিন পদের তিন জনই বিজয়ের মুকুট পড়ার  সৌভাগ্য অর্জন করতে সক্ষম হয়েছেন। নেছারাবাদে উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে এরকম নজিরবিহীন ঘটনা এই প্রথম এবং আধুনিক ইভিএম পদ্ধতিতে ভোট গ্রহনও এই প্রথম বারের মতো অনুষ্ঠিত হয়েছে। তবে নতুন প্রযুক্তির কারনে ভোটারদের অভিজ্ঞতার অভাবে ভোটারদের ভোট কাস্টিং আশানুরুপ হয়নি। তাই খুবই কম সংখ্যক ভোট(গড়ে প্রায় ৩০%) কাস্টিং হয়েছে। তবে এই এলাকায় এবার ভোট গ্রহণের ক্ষেত্রে কোন অপ্রীতিকর ঘটেনি। খুবই নিরিবিলি এবং সুশৃঙ্খল নির্বাচন সম্পন্ন হয়। এ ব্যাপারে এই এলাকার আইন শৃঙ্খলা বাহিনী অত্যন্ত তৎপর ছিল এবং পর্যাপ্ত পুলিশ,বিডিআর, আনসার বিডিপি মোতায়েন ছিল।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *