তথ্য চেয়ে আবেদন করে দেশ রূপান্তর সাংবাদিক জেলে

দেশজুড়ে

মার্চ ৭, ২০২৪ ১০:৪৯ অপরাহ্ণ

ছামিউল আলম সোহান
দেশ রূপান্তরের শেরপুরের নকলা উপজেলা সংবাদদাতা শফিউজ্জামান রানা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে তথ্য অধিকার আইনে তথ্য চেয়ে আবেদন করার জেরে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে তাকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে তার পরিবার।

গত মঙ্গলবার উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. শিহাবুল আরিফ পরিচালিত ভ্রাম্যমাণ আদালত তাকে এই দণ্ডাদেশ দেয়।

রানার স্ত্রী বন্যা আক্তার গতকাল বুধবার রানার সঙ্গে শেরপুর কারাগারে সাক্ষাৎ করেন। তিনি সাংবাদিকদের জানান, জাইকার কয়েকটি প্রকল্পের ৫০ লাখ টাকা ব্যয়ের তথ্য চেয়ে তথ্য অধিকার আইনে সম্প্রতি ইউএনও কার্যালয়ে আবেদন করেন রানা। এসব প্রকল্পের তথ্য চাওয়ায় রানার ওপর ক্ষুব্ধ হন ইউএনও।

বন্যা আক্তার বলেন, গত মঙ্গলবার রানা তার ছেলে শাহরিয়ার জাহান মাহিনকে (১৫) সঙ্গে নিয়ে এডিপি প্রকল্পের কম্পিউটার ও ল্যাপটপ ক্রয়সংক্রান্ত তথ্য চেয়ে ইউএনও কার্যালয়ে আবেদন জমা দেন। আবেদনটি কার্যালয়ের কর্মচারী গোপনীয় সহকারী (সিএ) শীলার কাছে দিয়ে রিসিভড কপি চান রানা। শীলা তাকে অপেক্ষা করতে বলেন। রানা অনেকক্ষণ অপেক্ষা করার পর আবার শীলার কাছে রিসিভড কপি চান। তখন শীলা বলেন, ‘ইউএনওকে ছাড়া রিসিভড কপি দেওয়া যাবে না।’ পরে রানা জেলা প্রশাসককে মোবাইল ফোনে বিষয়টি জানান। এতে ইউএনও আরও ক্ষিপ্ত হন। এ সময় ইউএনও রানাকে ভুয়া সাংবাদিক এবং তার ছেলে মাহিনকে ‘বাপের মতো চোর সাংবাদিক হবি’ বলে উক্তি করেন।

একপর্যায়ে নকলা থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে ইউএনও এবং সিএ শীলার সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগে রানাকে গ্রেপ্তার করে। পরে নকলা উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মো. শিহাবুল আরিফ ওই কার্যালয়ে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে রানাকে ছয় মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেন।

শাহরিয়ার জাহান মাহিন বলেন, ‘আমার বাবা ইউএনও অফিসে একটি কাগজ সই করাতে আমাকে সঙ্গে নিয়ে যান। ইউএনও স্যার কাগজে সই দিতে চাননি। পরে বাবা কাকে যেন ফোনে ইউএনও স্যারের সই না দেওয়ার বিষয়টি জানান। এ সময় ইউএনও স্যার রুম থেকে বের হয়ে বাবাকে গালিগালাজ করতে থাকেন এবং বলতে থাকেন, “আমার অফিসের নথিপত্র এবং ফাইল ছিঁড়ে ফেলেছে, একে পুলিশে দাও।” এরপর পুলিশ এসে বাবাকে নিয়ে যায়।’

এ ব্যাপারে বক্তব্য জানতে গতকাল শীলার মোবাইল ফোনে কল করলে তিনি সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে সংযোগ কেটে দেন। এরপর কয়েকবার কল করে তার ফোন বন্ধ পাওয়া যায়।

গতকাল এ বিষয়ে জানতে চাইলে নকলা ইউএনও সাদিয়া উম্মুল বানিন বলেন, ‘সাংবাদিক রানা তথ্য চেয়ে আবেদন করতে এসেছিলেন। কিন্তু তিনি তখনই তথ্য চান। আমি তাকে বলি, এখন আমার মিটিং আছে। তথ্য দেওয়ার জন্য আমার হাতে ২০ দিন সময় আছে। কিন্তু রানা সিএ শীলার কাছে থাকা ওই তথ্যের ফাইল টানানটানি করেন। তিনি অসদাচরণ করেছেন। এতে অফিসের পরিবেশ নষ্ট হয়েছে। তাই আমি সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করতে বলেছি।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *