উন্নয়নে স্বস্তি রূপগঞ্জে, ভোটের মাঠে নির্ভার গাজী

উন্নয়নে স্বস্তি রূপগঞ্জে, ভোটের মাঠে নির্ভার গাজী

রাজনীতি

ডিসেম্বর ১৩, ২০২৩ ৭:১৬ অপরাহ্ণ

নিজস্ব প্রতিবেদক।।

রাজধানী ঢাকার পাশাপাশি উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে আশেপাশের জেলাগুলোতেও। সেই তালিকায় রয়েছে নারায়ণগঞ্জ জেলা। জেলার রূপগঞ্জ উপজেলা এরই মধ্যে শিল্প এলাকা হিসেবে পরিচিতি পেয়েছে। গত কয়েক বছরে এখানে গড়ে উঠেছে শিল্পকারখানা, আবাসন কোম্পানিসহ বড় বড় প্রতিষ্ঠান। রয়েছে মালয়েশিয়ার আদলে গড়ে ওঠা পূর্বাচলের মতো উপ-শহর।

মোট ৫ টি উপজেলা নিয়ে গঠিত নারায়নগঞ্জ জেলা। রাজধানীর সবচেয়ে কাছের জেলা হিসেবে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রাচীন ইতিহাস সমৃদ্ধ। ২৯২ বর্গমাইলের নারায়নগঞ্জ নানা দিক থেকে ঐতিহ্য বহন করে। ঐতিহাসিক পানাম নগরী, জামদানি, মসলিনের গোড়াপত্তন এই নারায়ণগঞ্জ থেকেই ঘটে। সোনালি আঁশ পাটেরও খ্যাতি রয়েছে এই জেলায়।

দেশের সবচেয়ে ছোট জেলা নারায়ণগঞ্জের একটি উপজেলা রূপগঞ্জ। গত কয়েক বছরের উন্নয়নে এই রূপগঞ্জের রূপ আমূল পাল্টে গেছে। আর তা সম্ভব হয়েছে স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং সরকারের বস্ত্র ও পাট মন্ত্রী বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম দস্তগীর গাজীর হাত ধরে। এই আসন থেকে পর পর তিনবার আওয়ামী লীগের প্রার্থী হয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন তিনি। হয়েছেন মন্ত্রিপরিষদের সদস্য। আর সে সুযোগ কাজে লাগিয়ে নিজ এলাকার ব্যাপক উন্নয়ন ঘটিয়েছেন। যেখানে সামান্য বৃষ্টি হলেও দিনের পর দিন মানুষ জলাবদ্ধ হয়ে পড়তেন, সে এলাকায় উন্নত ড্রেনেজ ব্যবস্থার কারণে এখন সে পরিস্থিতি নেই।

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, শুধু তাই নয় এখানে রাস্তা ঘাট যেমন যাতায়াত সহজ করে দিয়েছে তেমনি নতুন নতুন শিল্প কল কারখানা কাজের সুযোগ করে দিয়েছে। আধুনিক হয়েছে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সহজ হয়েছে স্বাস্থ্য ব্যবস্থা। স্থানীয়রা বলছেন, একজন মুক্তিযোদ্ধা ছাড়া নিজ দেশ নিজ এলাকাকে এমন উন্নয়ন কারো দ্বারা সম্ভব নয়।

দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বীর মুক্তিযোদ্ধা গোলাম দস্তগীর গাজী ছাড়া নারায়ণগঞ্জ-১ আসনে লড়বেন আরও ছয় জন। এর মধ্যে তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব তৈমুর আলম খন্দকার, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শাহজাহান ভূঁইয়া, জাতীয় পার্টি থেকে সাইফুল ইসলাম, স্বতন্ত্র প্রার্থী হাবিবুর রহমান, জাকের পার্টির যোবায়ের আলম ভূঁইয়া, ইসলামী ফ্রন্টের এ কে এম শহিদুল ইসলাম। তবে ভোটের দৌড়ে মাঠে এদের মধ্যে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী গোলাম দস্তগীর গাজী এখন পর্যন্ত বেশ এগিয়ে।

আওয়ামী লীগের তৃণমূলের নেতাকর্মীরা বলেন, ‘গোলাম দস্তগীর গাজী সব দিক থেকেই যোগ্য প্রার্থী। তিন বারের সাংসদ, খেতাবপ্রাপ্ত বীর মুক্তিযোদ্ধা, দলের সংকটময় মুহূর্তেও থেকেছেন অবিচল। একজন শিল্পপতি এবং মন্ত্রী হওয়ার পরও নিজ এলাকায় যথেষ্ট সময় দেন। রূপগঞ্জে গাজীর বিকল্প কেবল গাজী-ই।’

ভোটের মাঠে সাতজন প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও রূপগঞ্জের ভোটারদের মূখে গোলাম দস্তগীর গাজীকে নিয়ে আলোচনা। সাধারণ মানুষ ও স্থানীয় নেতাকর্মীরা তার পক্ষে কাজ করে যাচ্ছেন। এলাকাবাসী বলছেন, গোলাম দস্তগীর গাজী একজন রাজনীতিক হিসেবেই নয় তিনি একজন সফল ব্যবসায়ী এবং পরোপকারী। সরকারের মন্ত্রী হয়ে এলাকায় ব্যপক উন্নয়নের কারণেই সাধারণ মানুষ তাকেই আবার চায়। প্রথম দুই দফায় সংসদ সদস্য এবং গত পাঁচ বছর সরকারের বস্ত্র ও পাটমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এই গত দেড় যুগে তিনি পাল্টে দিয়েছেন রূপগঞ্জের চিত্র। এক সময়ের অনুন্নত একটি উপজেলা এখন উন্নয়নের মডেল।

আওয়ামী লীগ থেকে মনোনয়ন না পাওয়ায় সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান শাহজাহান ভূঁইয়া পদত্যাগ করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করছেন। তবে একে ভালো চোখে দেখছেন না দলের নেতাকর্মীরা। তৈমূর আলম খন্দকার বিএনপির নেতাকর্মী নিয়ে নির্বাচনী বৈতরণী পার হতে চান। তবে তার পক্ষে বিএনপির হাতেগোনা নেতাকর্মী রয়েছেন। এ ছাড়া জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক সম্পাদক সাইফুল ইসলাম দলের নিষ্ক্রিয় নেতাকর্মীকে সক্রিয় করার চেষ্টা করছেন।

গোলাম দস্তগীর গাজী বলেন, ‘নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসনটি এক সময় বিএনপির ঘাঁটি ছিল। ২০০৬ সাল থেকে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীকে ঐক্যবদ্ধ করে রাজপথ দখল করে আন্দোলন-সংগ্রাম শুরু করি। দল আমাকে মনোনয়ন দেওয়ায় পরপর তিনবার জনগণের বিপুল ভোটে নির্বাচিত হই। বর্তমানে এ আসনটিতে আমার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠন অনেক শক্তিশালী। সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে নৌকাকে বিজয়ী করে জননেত্রী শেখ হাসিনাকে এ আসনটি উপহার দিয়েছি। এবারও তাই হবে বলে আশা করছি।

তিনি বলেন, ‘এক সময়ের অবহেলিত এই রূপগঞ্জকে সাজাতে গিয়ে আমার অনেক পরিশ্রম করতে হয়েছে। বর্তমানে এখানে পূর্বাচল উপশহর, নতুন নতুন শিল্পকারখানা গড়ে ওঠা, ভুলতা ফ্লাইওভার নির্মাণ, গাজী সেতু, কাঞ্চন সেতু, পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ে, রাস্তাঘাট প্রশস্তকরণ, নতুন নতুন রাস্তা নির্মাণ, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে নতুন ভবন নির্মাণ, কর্মসংস্থানসহ নানা উন্নয়ন হয়েছে।’

স্বতন্ত্র প্রার্থী শাহজাহান ভূঁইয়া বলেন, ‘রূপগঞ্জের সন্তানই রূপগঞ্জের এমপি হবেন। জনগণের এ চাওয়া পূরণ করতে আমি সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছি। আমি নির্বাচনে জয়ের ব্যাপারে আশাবাদী। আমার সঙ্গে আওয়ামী লীগের অসংখ্য নেতাকর্মী রয়েছেন।’

তৈমূর আলম খন্দকার বলেন, ‘আমি রূপগঞ্জে গ্যাস এনেছি। বিআরটিসির চেয়ারম্যান থাকাকালে রূপগঞ্জের মানুষকে চাকরি দিয়ে ২৬ মাস জেল খেটেছি। আমি হাইকোর্টে রিট করে ভূমিদস্যুদের বালু ভরাট বন্ধ করেছি। রূপগঞ্জের মানুষ চায় আমি রূপগঞ্জ থেকে নির্বাচন করি। আমি নির্বাচিত হলে রূপগঞ্জ বদলে দেব।’

জাপা প্রার্থী সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘আমি নির্বাচিত হলে রূপগঞ্জের শিক্ষা খাতে উন্নয়ন করব। রূপগঞ্জের রাস্তাঘাট, মসজিদ-মাদ্রাসার উন্নয়ন করব। রূপগঞ্জ থেকে মাদক নির্মূল করব।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *