যুক্তরাষ্ট্রের চাপ থাকা সত্ত্বেও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি নিজস্ব গতিতে এগোচ্ছেঃ সের্গেই ল্যাভরভ

জাতীয়

সেপ্টেম্বর ৮, ২০২৩ ৪:১৮ অপরাহ্ণ

মোহাম্মদ আল এমরান।।

যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্রদের চাপ সত্ত্বেও বাংলাদেশের পররাষ্ট্রনীতি নিজস্ব গতিতে এগোচ্ছে ও জাতীয় স্বার্থে অবিচল বলে মন্তব্য করেছেন রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই ল্যাভরভ।

বৃহস্পতিবার (৭ সেপ্টেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী পযায়ে বৈঠক শেষে মিট দ্যা প্রেস অনুষ্ঠানে তিনি এমন মন্তব্য করেন।

ল্যাভরভ বলেন, রোহিঙ্গা শরণার্থী সংকট নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। বাংলাদেশ ও মিয়ানমারের মধ্যে আলোচনা অব্যাহত রাখতে আমরা সহযোগিতা বজায় রাখছি।

মিয়ানমারের সঙ্গে রাশিয়া যোগাযোগ করছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, তাদের (বাংলাদেশ-মিয়ানমার) একটি পক্ষের ওপর চাপ প্রয়োগ করতে বাইরের কয়েকটি দেশ এই ইস্যুটি ব্যবহার করছে। এভাবে তারা দেশটির অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপও করছে। আমি মনে করি, এটি অগ্রহণযোগ্য, এতে বিরূপ ফলই আসে।

রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘জাতিসংঘ, আসিয়ান আঞ্চলিক ফোরামসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিক প্ল্যাটফর্মে রাশিয়া-বাংলাদেশ পরস্পরকে সহযোগিতা করে আসছে। যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্রদের চাপ সত্ত্বেও আমাদের বাংলাদেশি বন্ধুরা বিশেষভাবে জাতীয় স্বার্থে তাদের পররাষ্ট্রনীতি পরিচালনা করছে। আমরা তার প্রশংসা করছি।’

মার্কিন নিষেধাজ্ঞা এড়াতে ডলারের বাইরে বিকল্প কোনো মুদ্রার কথা ভাবা হচ্ছে কিনা, জানতে চাইলে ল্যাভরভ বলেন, আমি মনে করি, বিভিন্ন লেনদেন ব্যবস্থার দিকে আমরা দ্রুতই অগ্রসর হচ্ছি; যা আমাদের জাতীয় মুদ্রার জন্য ভালো হবে।

সংবাদ সম্মেলনের শুরুতে তিনি বলেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেনের সঙ্গে নিয়মিত দেখা হলেও আজ প্রথমবারের মতো ঢাকা সফরে এসেছি। দক্ষিণ এশিয়ায় বাংলাদেশে আমাদের দীর্ঘস্থায়ী অংশীদার। গেল অর্ধশত বছর ধরে বন্ধুত্ব ও কূটনৈতিকভাবে আমাদের সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। করোনা মহামারিসহ বিভিন্ন ধরনের অসুবিধার মধ্যেও রাশিয়া-বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংলাপ আমরা অব্যাহত রেখেছি।

রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, সবক্ষেত্রে আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক শক্তিশালী করতে আজ আমরা একমত হয়েছি। দুদেশের বাণিজ্যিক ও বিনিয়োগ সম্পর্কও জোরদার করেছি। দক্ষিণ এশিয়ায় ভারতের পরেই রাশিয়ার দ্বিতীয় বৃহৎ অংশীদার বাংলাদেশ। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে আমাদের বাণিজ্যের আকার ২০০ কোটি মার্কিন ডলার। আর ২০২০ সালে এই আকার ছিল ৩০০ কোটি মার্কিন ডলার।

ল্যাভরভ বলেন, বাংলাদেশে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) সরবরাহের বাস্তবতা নিয়ে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো আলোচনা করেছে। সম্ভাব্য গম ও সার সরবরাহ নিয়েও কথা হয়েছে দুপক্ষের মধ্যে। আজ আমরা কাজের পদ্ধতির পরিবর্তন ও সহযোগিতা অব্যাহত রাখা নিয়েও কথা বলেছি। এ সময়ে দু’দেশের মধ্যে মানবিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা হয়েছে। রাশিয়ায় পড়তে যাওয়া বাংলাদেশি শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষাবৃত্তি বাড়ানোয় ঢাকা আমাদের কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *