সাড়ে তিন লাখ টাকায় এক কেজি আম, চাষ হয় বাংলাদেশেও

সাড়ে তিন লাখ টাকায় এক কেজি আম, চাষ হয় বাংলাদেশেও

ফিচার স্পেশাল

জুন ১১, ২০২৩ ৯:২৮ পূর্বাহ্ণ

আমের গায়ে গোলাপি ঠমক। দামেও গৌরবের আঁচ। এমন তেমন নয়, কড়কড়ে সাড়ে তিন লাখ টাকা দিলে তবেই মিলবে এক কেজি আম। আমের নাম মিয়াজাকি। আসল বাড়ি জাপানে। আর দাম শুনলে চোখ ছানাবড়া হয়ে যাচ্ছে তো ঠিকই, কিন্তু এর স্বাদও যে অনন্য।

বিশ্বের সবচেয়ে দামি জাতের আম ‘মিয়াজাকি’। এই আমের নামকরণ করা হয়েছে জাপানের একটি শহরের নাম অনুযায়ী। তবে এ আম খেতে ভারত যেতে হবে না। পাশের দেশ ভারত এবং বাংলাদেশেও স্বল্প পরিসরে এই আমের চাষ হচ্ছে।

২০২১ সালে ‘‘বদরগঞ্জে বিশ্বের সবচেয়ে দামি আম ‘মিয়াজাকি’’ শিরোনামে একটি খবর প্রকাশিত হয় ডেইলি বাংলাদেশ-এ। প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, রংপুরের বদরগঞ্জে বিশ্বের সবচেয়ে দামি আম মিয়াজাকি এখন শোভা পাচ্ছে চাষি জাহেদুল হকের গাছে। সরেজমিন পরিদর্শনকালে দেখা গেছে, তার বিশাল আম বাগানের এক পাশে লাগানো হয়েছে মিয়াজাকি আমের একটি মাত্র গাছ। বর্তমানে গাছে শোভা পাচ্ছে ১৬টি আম- যা ক্রমেই লাল টকটকে হয়ে উঠছে।

সম্প্রতি ভারতে তিন দিনব্যাপী আয়োজিত এক আম উৎসবে মিয়াজাকি আম প্রদর্শন করা হচ্ছে বলে শনিবার দেশটির বার্তা সংস্থা এএনআইয়ের এক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে। এএনআইয়ের খবর অনুসারে বিশ্বের সবচেয়ে দামি আম হল এই মিয়াজাকি। আন্তর্জাতিক বাজারে এর দাম বাংলাদেশি মুদ্রায় প্রায় সাড়ে তিন লাখ টাকা। আর সেই আম এবার শিলিগুড়ির আম মেলায়। লোকজন ঘুরিয়ে ফিরিয়ে হাত দিয়ে সেই আম দেখছেন।

জাপানের একটি শহরের নাম অনুযায়ী বিশ্বের সবচেয়ে দামি জাতের এই আম চাষ করেন ভারতের পশ্চিমবঙ্গ রাজ্যের কৃষকরা। যদিও বিশ্বে প্রথমবারের মতো দামি জাতের এই আমটি যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় উৎপাদন করা হয়েছিল। ১৯৮০’র দশকে জাপানের মিয়াজাকিতে আনার পর এই আমের উৎপাদন ব্যাপক বৃদ্ধি পায়।

জাপানে ‘সূর্যের ডিম’ এবং ভারতে ‘লাল সূর্য’ নামে পরিচিত এই আমের গাছে মুকুল আসার পরপরই তা বেগুনি রং ধারণ করে। জাপানে মিয়াজাকির চারা অত্যন্ত সাবধানতার সাথে রোপণ করা হয়। গাছে আসা প্রতিটি ফলের আলাদা যত্ন নেয়া হয়। আর পরিপক্ব হওয়ার সময় এর রং হয়ে যায় উজ্জ্বল লাল।

ডাল থেকে ছিঁড়ে ফেলার পরিবর্তে প্রাকৃতিকভাবে পড়ে যাওয়া পর্যন্ত এই আমের জন্য অপেক্ষা করতে হয়। ফলটি পড়ে যাওয়ার পর যাতে সেটিতে কোনো ধরনের আঘাত না লাগে সে ব্যবস্থা কৃষকরা আগে থেকেই করে রাখেন। অত্যন্ত মসৃণ এবং মিষ্টি এই আমে তন্তুযুক্ত উপাদান থাকে অনেক কম।

সূত্রের খবর, বীরভূমের দুবরাজপুরের একটি মসজিদ চত্বরে এই জাপানি আম গাছ হয়েছিল। আর সেখানেই ফলেছে মিয়াজাকি আম। একটা বাক্সে করে অত্যন্ত যত্ন করে সেই আম নিয়ে আসা হয় শিলিগুড়িতে। তুলার মধ্যে বাক্সের মধ্যে লাল আম। কিন্তু দাম শুনলে একেবারে চমকে ওঠার মতো।

আসলে বিভিন্ন মহলের তরফে দাবি করা হয় এই আম নাকি অ্যান্টি অক্সিড্যান্ট ও বিটা ক্যারোটিন ও ফলিক অ্যাসিডে সমৃদ্ধ। চোখের পক্ষেও নাকি এই আমের জুড়ি মেলা ভার। এটি আসলে জাপানি প্রজাতির আম। অনলাইনে লাখ টাকা দামে বিক্রি হয়। তবে বর্তমানে ভারতের কয়েকটি জায়গায় এই আম হয়। মধ্যপ্রদেশের জব্বলপুরে রীতিমতো পাহারা দিয়ে এই আম চাষ করা হয়।

এই আম নিয়ে নানা মিথ রয়েছে। মোটামুটিভাবে এক একটি আম ৩৫০ গ্রাম মতো হয়। কিন্তু দামের জন্য এই আম কিনতে পারেন না অনেকেই।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *