শেরপুরের ঝিনাইগাতী গারো পাহাড়ে পাথর লুটপাটের মহোৎসব

শেরপুরের ঝিনাইগাতী গারো পাহাড়ে পাথর লুটপাটের মহোৎসব

দেশজুড়ে

ফেব্রুয়ারি ২৫, ২০২৩ ৮:০৪ অপরাহ্ণ

মুরাদ শাহ জাবাল, ঝিনাইগাতী (শেরপুর)

শেরপুর ঝিনাইগাতী উপজেলার গারো পাহাড় থেকে পাথর ও বালু লুটপাটের মহোৎসব চলছে।

স্থানীয় প্রভাবশালীরা গারো পাহাড়ে প্রবাহিত নদী ঝর্ণা ও পাহাড় কেটে অবৈধভাবে পাথর ও বালু লুটপাট চালিয়ে আসছে। এসব পাথর ও বালু লুটপাটের বিষয়ে সাংবাদিকদের পক্ষ থেকে উপজেলার রাংটিয়া ফরেষ্ট রেঞ্জের গজনী বিট কর্মকর্তা মকরুল ইসলাম আকন্দের কাছে ফোনে জানতে চাওয়া হলে রাগান্বিত হয়ে তিনি বলেন আমাকে কোন জিজ্ঞাস করবেন না। ধান্দা বাজি ছেড়ে দিন। যতপারেন পত্রিকায় লেখুন।

বনের জমি থেকে কোন পাথর ও বালু লুটপাট হয় না। পাথর ও বালু লুটপাট হয় ইউএনও ও উপজেলা চেয়ারম্যানের এলাকা থেকে। তারা বিষয়টি জানেন ও । তাদের জিজ্ঞাসা করুন।

উল্লেখ্য, স্থানীয় প্রভাবশালী মহল গারো পাহাড়ের গজনী,হালচাটি, বাঁকাকুড়া, গান্দিগাঁও এলাকাসহ বিভিন্ন স্থান থেকে পাহাড় কেটে ও পাহাড়ি নদী- ঝর্ণা থেকে অবৈধভাবে পাথরও বালু লুটপাট চালিয়ে আসছে।

গভীর অরণ্যে দিনের বেলায় এসব পাথর ও বালু উত্তোলন করা হচ্ছে। আর রাতের অন্ধকারে ট্রলি ও পিকাপে করে উত্তোলনকৃত পাথর বালু দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার করা হচ্ছে। এভাবে প্রতি রাতে লাখ লাখ টাকা মূল্যের পাথর ও বালু লুটপাট চালিয়ে আসছে প্রভাবশালীরা।

পাথর উত্তোলনকারীদের থাবায় ক্ষতবিক্ষত হয়ে পরেছে গারো পাহাড়। অবৈধভাবে পাহাড় কেটে পাথর উত্তোলনের ফলে গারো পাহাড়ের সৌন্দর্য ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য হুমকির সম্মুখিন হয়ে পরছে।

জানা যায়, প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি খনিজ ও বনজ সম্পদে ভরপুর ঝিনাইগাতী উপজেলার গারো পাহাড়। এ সৌন্দর্যকে ঘিরে ১৯৯৩ সালে উপজেলার কাংশা ইউনিয়নের গজনী মৌজায় জেলা প্রশাসনের উদ্যোগে গড়ে তোলা হয় একটি পিকনিক স্পট।

এ স্পষ্ট থেকে প্রতিবছর সরকারের ঘরে আসে বিপুল পরিমানের রাজস্ব। পাহাড় কেটে অবৈধ ভাবে পাথর ও বালু উত্তোলনের ফলে সৌন্দর্য হাড়াতে বসেছে গজনী অবকাশ বিনোদন কেন্দ্রের।

জানা গেছে, বিগত বিএনপি সরকারের আমলে গারো পাহাড়কে পাথর মহাল ঘোষনা করে খনিজ সম্পদ মন্ত্রনালয় জনৈক বিএনপি নেতার নামে ইজারা দেয়া হয়। ঐ ইজারাদারের লোকজন পাহাড় কেটে পাথর লুটপাট চালিয়ে আসছিল।
আর পাহাড় কেটে পাথর লুটপাটের কারনে ক্ষতবিক্ষত হয়ে পরে গারো পাহাড়। এতে গারো পাহাড়ের সৌন্দর্য ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য হুমকির সম্মুখিন হয়ে পরে।

আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় এলে গারো পাহাড়ের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য রক্ষার্থে পাহাড় কেটে পাথর উত্তোলন বন্ধ ঘোষণা করা হয়। কিন্তু গারো পাহাড় কেটে পাথর উত্তোলন বন্ধ হয়নি।

বিএনপি সরকারের আমলে পাহাড় কেটে পাথর উত্তোলন করা হতো প্রকাশ্যে। আর এখন পাথর উত্তোলন করা হচ্ছে গোপনে। অভিযোগ রয়েছে ঐ বন কর্মকর্তার যোগসাজশেই দীর্ঘদিন থেকে পাহাড় কেটে পাথর উত্তোলন চলছেই।

এ বিষয়ে ঐ বন কর্মকর্তা মকরুল ইসলাম আকন্দকে জিজ্ঞাসা করা হলে তিনি রেগে গিয়ে এভাবেই সাংবাদিকের প্রশ্নের উত্তোর দেন। এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ফারুক আল মাসুদের সাথে কথা হলে, পাথর উত্তোলনের বিষয়টি তার জানা নেই জানিয়ে তা দেখবেন বলে জানান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *