রাষ্ট্রপতির কাছে তিন দেশের রাষ্ট্রদূতের পরিচয়পত্র পেশ

রাষ্ট্রপতির কাছে তিন দেশের রাষ্ট্রদূতের পরিচয়পত্র পেশ

জাতীয় স্লাইড

ডিসেম্বর ৭, ২০২৩ ৯:১৬ পূর্বাহ্ণ

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে তিন দেশের রাষ্ট্রদূত নিজ নিজ পরিচয়পত্র পেশ করেছেন। তিনজন আবাসিক রাষ্ট্রদূত হলেন- ডেনমার্কের ক্রিশ্চিয়ান ব্রিকস মোলার, নেদারল্যান্ডের ইরমা ভ্যান ডুরেন এবং আর্জেন্টিনার মার্সেলো কার্লোস সিসা।

বুধবার দুপুরে বঙ্গভবনে তারা পৃথক পৃথকভাবে পরিচয়পত্র পেশ করেন। বৈঠক শেষে প্রেস সচিব জয়নাল আবেদীন এ তথ্য জানান।

তিনি জানান, তাদের স্বাগত জানিয়ে রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশের পররাষ্ট্র নীতি সবার সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের ওপর গুরুত্ব দেয়।

বাংলাদেশ সবসময় বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক সম্প্রসারণকে অগ্রাধিকার দেয় উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন আশা প্রকাশ করেন, ঢাকায় তাদের দায়িত্ব পালনের সময় এই দেশগুলোর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরো সম্প্রসারিত হবে।

বাংলাদেশকে বিপুল সম্ভাবনাময় দেশ হিসেবে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বাংলাদেশ ও নিজ নিজ দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য সম্পর্ক জোরদার করতে সব ধরনের সম্ভাবনা কাজে লাগাতে রাষ্ট্রদূতদের প্রতি আহ্বান জানান।

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে বঙ্গভবনে ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত ক্রিশ্চিয়ান ব্রিকস মোলার তার পরিচয়পত্র পেশ করেন- পিআইডি

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে বঙ্গভবনে ডেনমার্কের রাষ্ট্রদূত ক্রিশ্চিয়ান ব্রিকস মোলার তার পরিচয়পত্র পেশ করেন- পিআইডি

রাষ্ট্রপতি বলেন, ডেনমার্ক বাংলাদেশকে প্রথম স্বীকৃতিদানকারী ইউরোপীয় ইউনিয়নের দেশগুলোর মধ্যে অন্যতম।

বাংলাদেশ ও ডেনমার্কের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য-বিনিয়োগ সম্পর্ক খুবই চমৎকার উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশের  অর্থনৈতিক উন্নয়নের অন্যতম অংশীদার ডেনমার্ক।

তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকার জনগোষ্ঠীর উন্নয়নে ডেনমার্ক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে।

বাংলাদেশের বিভিন্ন বিনিয়োগ উপযোগী পরিবেশের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি দেশের বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ (এসইজেড) বিভিন্ন সম্ভাবনা খাতে ডেনিশ বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগের আহ্বান জানান।

রাষ্ট্রদূত জানান, তার সরকার বাংলাদেশের বিভিন্ন উন্নয়ন সহযোগী হিসেবে কাজ করে আসছে এবং আগামী দিনেও এই সহযোগিতা অব্যাহত থাকবে।

নেদারল্যান্ডসকে বাংলাদেশের অন্যতম উন্নয়ন অংশীদার উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, স্বাধীনতার পর থেকে দু’দেশের মধ্যে কূটনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে।

তিনি বলেন, বাংলাদেশ যোগাযোগ ও নারীর ক্ষমতায়নসহ বিভিন্ন খাতে বিগত দেড় দশকে প্রশংসনীয় উন্নতি লাভ করেছে। এছাড়া বাংলাদেশে বিনিয়োগ পরিস্থিতি খুবই সন্তোষজনক।

তিনি নেদারল্যান্ডসের বিনিয়োগকারীদের বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানান। নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত বলেন, বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ক উন্নয়নকে নেদারল্যান্ডস খুবই গুরুত্ব দেয়।

তিনি বলেন, এরই মধ্যে অনেক ডাচ বিনিয়োগকারী বাংলাদেশে বিনিয়োগ করেছেন এবং আরো অনেক বিনিয়োগকারী বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী।

রাষ্ট্রদূত দায়িত্ব পালনে রাষ্ট্রপতির সহযোগিতা কামনা করেন।

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে বঙ্গভবনে আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রদূত মার্সেলো কার্লোস সিসা তার পরিচয়পত্র পেশ করেন- পিআইডি

রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে বঙ্গভবনে আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রদূত মার্সেলো কার্লোস সিসা তার পরিচয়পত্র পেশ করেন- পিআইডি

রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন বাংলাদেশের নতুনভাবে আর্জেন্টিনার আবাসিক মিশন চালু করায় সে দেশের সরকার ও জনগণকে ধন্যবাদ জানান। তিনি রাষ্ট্রদূতকে বলেন, বাংলাদেশের ফুটবল প্রেমীদের কাছে আর্জেন্টিনা একটি অতি পরিচিত নাম। তরুণ প্রজন্মসহ সব স্তরের জনগণের কাছে দিয়াগো ম্যারাডোনা এবং লিওনেল মেসি অত্যন্ত জনপ্রিয়।

বাংলাদেশ ও আর্জেন্টিনার মাঝে যথেষ্ট বিনিয়োগ সম্ভাবনাও রয়েছে উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি বলেন, বাংলাদেশ পোশাক শিল্প, সিরামিক এবং ঔষধসহ বিভিন্ন আন্তর্জাতিকমানের পণ্য উৎপাদন করে থাকে।

আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রদূতকে বাংলাদেশ থেকে এসব পণ্যের আমদানি বাড়াতে উদ্যোগ নেয়ার ও আহ্বান জানার রাষ্ট্রপ্রধান।

এছাড়া তিনি দু’দেশের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্ভাবনা কাজে লাগাতে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে সফর বিনিময়ের তাগিদ দেন।

রাষ্ট্রদূত মার্সেলো কার্লোস রাষ্ট্রপতিকে জানান, ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ের মাধ্যমেও দুদেশের জনগণের সম্পর্ক জোরদার হতে পারে।

আর্জেন্টিনার ফুটবলের প্রতি বাংলাদেশের ফুটবল প্রেমীদের সমর্থন আর্জেন্টাইন ফুটবলারদেরকে খুবই উৎসাহিত করে উল্লেখ তিনি বলেন, ক্রীড়া ও সংস্কৃতিসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে তার দেশ বিনিয়োগ বাড়াতে আগ্রহী।

বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের প্রশংসা করে রাষ্ট্রদূতরা তাদের নিজ নিজ দায়িত্ব পালনে বাংলাদেশ সরকারের সহযোগিতা কামনা করেন।

বৈঠকে রাষ্ট্রদূতরা কর্মক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির সার্বিক সহযোগিতা কামনা করেন এবং রাষ্ট্রপতি প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদানের  আশ্বাস দেন।

এ সময় রাষ্ট্রপতির কার্যালয় ও পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে, বঙ্গভবনে পৌঁছালে প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্টের (পিজিআর) একটি চৌকষ অশ্বারোহী দল রাষ্ট্রদূতদের গার্ড অব অনার প্রদান করে। রাষ্ট্রদূতরা ‘বঙ্গভবন তোষাখানা’ পরিদর্শন করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *