রাত জাগার অভ্যাসই ঠেলে দেয় বিপদের দিকে

রাত জাগার অভ্যাসই ঠেলে দেয় বিপদের দিকে

স্বাস্থ্য

জুলাই ৮, ২০২৩ ১১:৪৮ পূর্বাহ্ণ

যারা রাত জাগেন, তারা স্বাভাবিকের তুলনায় কম আয়ুকাল পান। যারা রাতে দেরি করে ঘুমান এবং সকালে দেরিতে ঘুম থেকে ওঠেন, তাদের বিপদ আসন্ন। এই বিপদ কয়েকগুণ বাড়িয়ে দেয় নেশার অভ্যাস। তামাক এবং অ্যালকোহল বেশি সেবনের ফলেও আয়ু কমে আসে, বলছে গবেষণা।

ক্রোনোবায়োলজি ইন্টারন্যাশনাল জার্নালে সম্প্রতি প্রকাশিত গবেষণাটি ফিনল্যান্ডে ৩৭ বছরেরও বেশি সময় ধরে সংগ্রহ করা প্রায় ২৩ হাজার যমজ সন্তানের তথ্য মূল্যায়ন করেছে। গবেষকরা দেখেছেন, রাতজাগা ব্যক্তিদের মৃত্যুর ঝুঁকি অনেকটায় বেশি।

কেবল অনুমান নয়, এর স্বপক্ষে প্রমাণ রয়েছে যে ঘুমের সময়কাল এবং গুণমান, এবং রাতের শিফটের কাজ স্বাস্থ্যকে ব্যাপকভাবে  প্রভাবিত করে। আগের গবেষণায় দেখা গেছে  রাতজাগা ব্যক্তিদের হার্টের সমস্যার ঝুঁকি অনেকটায় বেশি।

নতুন গবেষণাটি ১৯৮১ থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত সময়কালজুড়ে ২৪ বছর বয়সী ২২৯৭৮ জন পুরুষ ও মহিলাকে নিয়ে করা হয়েছে। অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে কেউ মারা গেছে কিনা তা জানতে ২০১৮ সালে অনুসন্ধান করা হয়। বহু ক্ষেত্রেই দেখা গেছে কেবল ঘুমের ধরন বা ক্রনোটাইপের সাথে গুরুতর অসুস্থতা বা মৃত্যুর সরাসরি সম্পর্ক নেই, কিন্তু মদ বা ধূমপানের নেশা সর্বনাশের মূল কারণ। আর রাতে জাগা ব্যক্তিদের অধিকাংশের মধ্যেই এই প্রবণতা দেখা যায়।

অন্য একটি গবেষণা বলছে, টানা ২-৩ দিন রাতে ঠিক মত না ঘুমালে শরীরের ভিতরে এমন কিছু পরিবর্তন হতে শুরু করে যে, তার প্রভাবে রক্তচাপ বাড়তে শুরু করে। পুষ্টিবিজ্ঞানীরা জানান, কম ঘুমের কারণে ওজন বৃদ্ধি পাওয়ার আশঙ্কা প্রায় ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ বৃদ্ধি পায়।

গবেষণায় দেখা গেছে, যারা নিয়মিত রাত জাগেন তাদের হৃদ্‌রোগ, ডায়াবেটিস, স্থূলতা, স্ট্রোকের সম্ভাবনা বেশি থাকে। বেশ কিছু বৈজ্ঞানিক গবেষণায় দেখা গেছে মানুষ যতো বেশি রাত জাগে ততই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও কমতে থাকে। পর্যাপ্ত ঘুম না হলে ধীরে ধীরে মস্তিষ্কের ভিতরে ‘ফিল গুড’ হরমোনের ক্ষরণ কমে যেতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই ডিপ্রেশন এবং উদ্বেগে মতো সমস্যা বৃদ্ধি পায়। রাতে দীর্ঘক্ষণ জেগে থাকলে খাবারের হজমে সমস্যা হয়। পাশাপাশি রাত জেগে মাত্রাতিরিক্ত খাবার খাওয়ার কারণেও এই সমস্যা বাড়ে।

ঘুমের সঙ্গে হার্টের সরাসরি যোগ রয়েছে। সেই কারণেই চিকিৎসকরা দিনে অন্তত ৭-৮ ঘণ্টা ঘুমানোর পরামর্শ দেন। লাগাতার রাত জাগতে থাকলে ধীরে ধীরে হার্ট দুর্বল হয়ে যেতে শুরু করে। ফলে স্বাভাবিকভাবেই হঠাৎ করে হার্ট অ্যাটাকের আশঙ্কা বৃদ্ধি পায়। যারা দীর্ঘ রাত না ঘুমিয়ে কাটাচ্ছেন, তাদের আজই সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *